বরেন্দ্র অঞ্চলে ভূগর্ভস্থ পানির তীব্র সংকট, ধান চাষ না করার পরামর্শ

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পানির সংকটে ধান চাষ না করার পরামর্শ, ছবি: বার্তা২৪.কম

পানির সংকটে ধান চাষ না করার পরামর্শ, ছবি: বার্তা২৪.কম

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর, নাচোল ও গোমস্তাপুর উপজেলায় দিন দিন পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ার কৃষকদের ধান চাষ না করার পরামর্শ দিয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। এতে কৃষকদের মাঝে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ভূগর্ভস্থ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বিশেষ চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর, নাচোল, গোমস্তাপুুর উপজেলা খাদ্য উৎপাদন এলাকা বরেন্দ্র অঞ্চলে এই সংকট প্রকট ও দীর্ঘ হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্রমতে, পানি সংকটের কারণে ওই সব এলাকায় আগামীতে ইরি ধান চাষে নিরুৎসাহ দিচ্ছে বিএমডিএ। এতে আগামীতে খাদ্য উৎপাদনে চরম অনিশ্চয়তার শঙ্কা করা হচ্ছে। এতে কৃষকদের মাঝে অসন্তোষ বিরাজ করছে। বাধ্য হয়ে কৃষকরা গম, সরিষা চাষাবাদ করছেন।

কৃষকরা জানান, বিএমডিএর এ সিদ্ধান্তে দেখা দিতে পারে চালের চরম সংকট। বিএমডিএর দাবি, আগামী দিনে পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতেই নেওয়া হয়েছে এমন উদ্যোগ।

বিজ্ঞাপন

বিএমডিএ সিদ্ধান্ত নিয়ে ইরি ধান চাষ না করতে ডিপ অপারেটর ও কৃষকদের মাঝে লিফলেট বিতরণ করছে। এমনকি নির্দেশ অমান্য করে ধান চাষ করলে বেঁধে দেয়া সময়ের বেশি বিদ্যুৎ না দেয়ারও ঘোষণা দেয়া হয়েছে।।

কৃষকরা জানান, আমাদের ধান ছাড়া লাভজনক তেমন অন্য কোনো ফসল উৎপাদন হয় না বরেন্দ্র অঞ্চলে। তাই বছরে তিনবার ধান চাষ করি। কিন্তু পানির সংকট বলে বিএমডিএ এবার ইরি ধান চাষ করতে নিষেধ করেছে।

প্রতিবছর ইরি ধান আবাদ করতে ১৭ থেকে ১৯টি সেচ লাগে। আর গম চাষ করতে মাত্র ২ টি সেচ লাগে। এ ছাড়া প্রতিবছর বৃষ্টির মাধ্যমে ভূগর্ভে পানি জমা হয় ৯০০ মিলিমিটারের মতো, অন্য দিকে এ জেলায় ফসল চাষে পানি লাগে ১৩০০ মিলিমিটার। ফলে প্রতিবছর ৪০০ মিলিমিটার পানি ঘাটতি থাকে। এতে প্রতিনিয়ত বরেন্দ্র অঞ্চলের মাটির নিচের পানির তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে।

বিএমডিএর সহকারী প্রকৌশলী মুসাইদ মাসরুর জানান, দিন দিন ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নেমে যাচ্ছে। তাই পানি ধরে রাখতে এবং আগামীতে সেচ নিশ্চিত করতে ভূগর্ভস্থ পানির ওপর চাপ কমানোর জন্য এমন ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তার দাবি, মৌসুমি ফসল হিসেবে বিভিন্ন জাতের ডাল, শাকসবজি, আলু উৎপাদন হয় অল্প সেচে। তাই কৃষকদের মৌসুমি ফসল উৎপাদনে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, এবছর বিএমডিএ কর্তৃপক্ষ ইরি মৌসুমে ধানের আবাদ কমিয়ে দিয়েছে। নিরুৎসাহিত করে ডাল, গম, সরিষা, ভুট্টা জাতীয় ফসল চাষাবাদ করছেন।