রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য সব ধরনের গাড়ি চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘোষণা দেন রাঙামাটি পরিবহণ চালক-মালিক সমিতি কর্তৃপক্ষ।
তারা জানান, কোনো প্রকার উসকানি ছাড়াই রাঙামাটি শহরে তাণ্ডব চালিয়ে বাস, ট্রাক, এ্যাম্বুলেন্স, অটোরিকশাসহ মালবাহী গাড়ি ভাঙচুর ও চালকদের মেরে রক্তাক্ত করা হয়েছে। তাই গাড়ির ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা খরচসহ রাঙাপানি, আসামবস্তি সড়কে ব্যাপকহারে চাঁদাবাজি বন্ধ করে নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবিতে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) থেকে রাঙামাটিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে রাঙামাটিস্থ ট্রাক মালিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি সভায় এই কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা।
এসময় পরিবহণ নেতারা অভিযোগ করেন, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাঙামাটি শহরে ব্যাপক তাণ্ডব চালিয়ে তাদের বাস, ট্রাক, অটোরিকশা, হাইচ, নোহা, এ্যাম্বুলেন্সসহ অন্তত ৩০টি যানবাহন ভাঙচুর করার পাশাপাশি দু'জন অটোরিকশা চালককে কুপিয়ে রক্তাক্ত করা হয়েছে, যারা রাঙামাটির হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।
যতক্ষণ পর্যন্ত এসব ঘটনার সাথে জড়িত সন্ত্রাসীদের গ্রেফতার করার পাশাপাশি ভাঙচুর করা গাড়ির ক্ষতিপূরণ, আহত চালকদের চিকিৎসা খরচসহ গাড়ির চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত রাঙামাটিতে যাত্রী ও পণ্যবাহী সকল যানবাহন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হবে জানিয়েছেন পরিবহণ শ্রমিক নেতা মিজানুর রহমান বাবু।
বৈঠকে চট্টগ্রাম-রাঙামাটি ট্রাক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিম আকাশ, রাঙামাটি মিনি ট্রাক পিকআপ মালিক সমিতির আহ্বায়ক অলোক প্রিয় চৌধুরী রিন্টু, কার মাইক্রো চালক শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক দিদারুল আলম, রাঙামাটি জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাবু, চট্টগ্রাম-রাঙামাটি মোটর মালিক সমিতির সমন্বয়ক মো. সালা উদ্দিনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজ পড়ানোকে কেন্দ্র করে মসজিদের ভেতরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে জুমার নামাজে ইমামতি করাকে কেন্দ্র করে মসজিদের অভ্যন্তরে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। জাতীয় মসজিদে এ ধরনের হামলা ও ক্ষতিসাধনের ঘটনা অত্যন্ত অনাকাঙ্ক্ষিত, নিন্দনীয় ও জঘন্য অপরাধ।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সরকার বদ্ধপরিকর।
জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজ শুরুর আগে বায়তুল মোকাররমের বর্তমান খতিব হাফেজ মাওলানা ড. মুফতি ওয়ালিয়ুর রহমান খান বয়ান করছিলেন। এমন সময় ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পলাতক খতিব মাওলানা মুফতি রুহুল আমীন অনুসারীদের নিয়ে বায়তুল মোকাররম মসজিদে এসে বর্তমানে খতিবের মাইক্রোফোনে হাত দেন। পরে বর্তমান খতিবের অনুসারীরা রুহুল আমিনের অনুসারীদের প্রতিরোধ করেন।
তখন দু'পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়। পরে পরিস্থিতি অনুকূলে না দেখে খতিব মুফতি রুহুল আমিন নামাজ না পড়িয়ে মসজিদ ত্যাগ করেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও র্যাবের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। পরে পরিবেশ শান্ত হলে আবারও সাধারণ মুসল্লিরা মসজিদে প্রবেশ করেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের রায়েরবাজার এলাকায় সাদেক খান বাজারের সামনে নাসির (৩০) ও মুন্না (২২) নামের দুই যুবককে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে এই ঘটনা ঘটে। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার নাসির ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুন্নাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাদের মৃত্যু হয়।
তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা শাওন আহমেদ বলেন, আমি আর নাসির দু'জনে মোটরসাইকেলে যাচ্ছিলাম, আমি সাদেক খান আড়তে যাব এবং সে তিন রাস্তার মোড়ে যাবে। আমাকে বলল, ভাই আমাকে একটু তিন রাস্তার মোড়ে নামায় দেন। পরে সাদেকখান আড়তের সামনে থেকে তিন রাস্তার মোড়ে যাওয়ার সময় দেখি ধারালো অস্ত্র নিয়ে একটি গ্রুপ দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে পেছন থেকে এলোপাথাড়ি কোপানো শুরু করে নাসিরকে। পরে নাসির মোটরসাইকেল থেকে নেমে দৌড় দিলে তাকে ধরে মাটিতে শুয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে এবং বলে তাকে জবাই করে দে। পরে তাকে জবাই করতে গেলে আমি একজনকে ধরে ফেলি এবং দু'জনেই পড়ে যাই। এ সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে উপস্থিত হলে তারা পালিয়ে যায়। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মারা যায় নাসির।
তিনি আরও বলেন, আমরা যাওয়ার সময় ওইখানে দুই গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। কি কারণে দুই গ্রুপে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলছিল সে বিষয়টি বলতে পারি না। সে রাজমিস্ত্রির কাজও করতো।
ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এস আই) মাসুদ আলম বলেন, মোহাম্মদপুর থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় এক যুবককে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছিল। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জরুরি বিভাগের ওয়ান স্টপ ইমারজেন্সি সেন্টারে (ওসেক) মারা যায় সে। আমরা বিষয়টি মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে জানিয়েছি। মরদেহ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মোহাম্মদ পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী ইফতেখার হাসান। তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের বুদ্ধিজীবীর সাদেক খান আড়তের পাশে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে মুন্না (২২) ও নাসির (৩০) নামে দু'জন নিহতের খবর পেয়েছি। এদের মধ্যে মুন্না সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে মারা যায় এবং নাসির ঢাকা মেডিকেলে মারা যায়। মুন্নার নামে মারামারি ও কোপাকুপিসহ সাত থেকে আটটি মামলা রয়েছে এবং নাসিরের বিষয়ে এখনো তথ্য পায়নি। নাসিরের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। কি কারণে এই হত্যাকাণ্ড দুটি সংঘটিত হয়েছে সে বিষয়ে তদন্ত চলছে।
বগুড়ায় যুবদল নেতা মেহেদী হাসান বাপ্পীকে (৪০) কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। বাপ্পী বগুড়া শহর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক। তিনি বগুড়া শহরের গন্ডগ্রাম এলাকার বুলু মিয়ার ছেলে।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বগুড়া শহরের ঠনঠনিয়া বটতলা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। এসময় যুবদলের আরও দুই কর্মী আহত হয়েছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাপ্পী তার কয়েকজন সহকর্মীকে সাথে নিয়ে মটরসাইকেল যোগে শহরে দলীয় কার্যালয়ে যাচ্ছিলেন। ঠনঠনিয়া বটতলা এলাকায় পিছন থেকে কয়েকটি মটরসাইকেল যোগে আসা দুর্বৃত্তরা বাপ্পীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় বাপ্পীর সাথে থাকা মিঠু ও মোমিন নামের যুবদলের আরও দুই কর্মী আহত হন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে যুবদলের একাধিক নেতা জানান, গন্ডগ্রাম এলাকায় একটি টাইলস ফ্যাক্টরি থেকে তিনমাস পরপর পুরাতন বস্তা বিক্রি হয়।
এতদিন পুরাতন বস্তা কেনাবেচা করতো স্থানীয় যুবলীগের নেতাকর্মীরা। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পুরাতন বস্তা কেনাবেচার নিয়ন্ত্রণ নিতে যায় যুবদলের নেতাকর্মীরা। সেখানে বাপ্পীর সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয় যুবদলের আরেক গ্রুপের নেতাকর্মীদের।
এনিয়ে গত ২১ আগস্ট জেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য সুরুজ্জামান সুরুজকে দল থেকে বহিস্কার এবং মেহেদী হাসান বাপ্পীকে কৈফিয়ত তলব করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে সেই বিরোধ থেকেই বাপ্পীর ওপর হামলা করা হয়েছে।
বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক ( এসআই) আব্দুর রহীম জানান,পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব থেকে হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গেছে।