অভিভাবকহীন ববি, স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত
বর্তমানে উপাচার্য, ট্রেজারার, রেজিস্ট্রার ও পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদ শূন্য থাকায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। এদিকে উপাচার্য না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল, অর্থ কমিটি ও সিন্ডিকেট সভা হচ্ছে না এবং শিক্ষার্থীদের সেশনজট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
জানা গেছে, অভিভাবকহীনতায় অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অনার্স (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। কেননা ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নসহ পরীক্ষা গ্রহণ কমিটির প্রধান থাকেন উপাচার্য। আর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের পদটি শূন্য থাকায় কীভাবে ভর্তি পরীক্ষা গ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে কেউ কিছু জানেন না। সব মিলিয়ে এখন বরিশাল বিশ্ববিদ্যায়ে অচলাবস্থা বিরাজ করছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, গত কয়েক মাস ধরে উপাচার্য পদটি শূন্য থাকায় শিক্ষার্থীদের সেশন জট বেড়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে পাঠদান।
কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ আহ্বায়ক মো. বাহাউদ্দিন গোলাপ জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করার মতো পদাধিকারী এখন কেউ নেই। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়টি এখন অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এ সংকট নিরসনে সরকার দ্রুত যোগ্য ও দক্ষ উপাচার্য নিয়োগ দেবে বলে আশা করছেন তিনি।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘চলতি বছরের ২৭ মে তৎকালীন উপাচার্য ড. এস এম ইমামুল হকের মেয়াদ শেষ হয়। পরে ২৫ জুন থেকে সোমবার (৭ অক্টোবর) পর্যন্ত উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব পালন করেন ট্রেজারার এ কে এম মাহবুব হাসান। কিন্তু ট্রেজারার পদে তার চার বছর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় উপাচার্যের রুটিন দায়িত্ব থেকে তিনি অব্যাহতি নিয়েছেন। আজ (৭ অক্টোবর) ট্রেজারারের মেয়াদ ও গত ৩ অক্টোবর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হয়। গত ১১ এপ্রিল নৈতিক স্খলনের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত ও পরে চাকরিচ্যুত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. মনিরুল ইসলাম। বর্তমানে পদগুলো শূন্য হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।’
সিন্ডিকেট সদস্য ও বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে বলেন, ‘উপাচার্যের পদ শূন্য থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম ব্যাহত হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে বিষয়টি মাথায় রেখে খুব শিগগিরই নতুন উপাচার্য নিয়োগ হবে।’
প্রসঙ্গত, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের আমন্ত্রণ না করায় প্রতিবাদ করেন তারা। পরে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাচ্চা’ বলে গালি দেন। এরপর শিক্ষার্থীদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে উপাচার্য ড. এস এম ইমামুল হক ছুটিতে (১১ এপ্রিল-২৬ মে) যেতে বাধ্য হন। আর ২৭ মে তার মেয়াদ শেয় হয়। এরপর থেকে পদটি শূন্য রয়েছে।