শেষ ভরসা পিবিআই

  • শাহারিয়ার হাসান ও মনি আচার্য্য, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার / ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

পিবিআই প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার / ছবি: বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম

বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর মামলার রহস্য উদঘাটন করতে অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলো যেখানে হাল ছেড়ে দেয়, সেখান থেকেই কাজ শুরু করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। যাত্রার পর থেকে বিভিন্ন মামলার রহস্যজট উন্মোচন করে বার বার আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে সংস্থাটির নাম। যেসব মামলার কোন ধরণের সূত্রই থাকে না, অর্থাৎ ক্লু-লেস অনেক মামলার তদন্তেও সাফল্য দেখিয়েছে পিবিআই। পথচলা খুব বেশি সময় ধরে না হলেও পিবিআই পরিণত হয়েছে আস্থার প্রতীক হিসেবে।

সম্প্রতি পিবিআইয়ের তদন্ত প্রক্রিয়া, কর্মকৌশল, সাফল্য ও নানা বিষয়ে বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম-এর সঙ্গে কথা বলেন সংস্থাটির প্রধান ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার।

বনজ কুমার মজুমদার বলেন, আমাদের কাছে যখন একটি মার্ডারের মামলা আসে, তখন প্রথমে সেটিকে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা হয়। এমনিতেই মামলার তদন্ত ছাড়া আমাদের অন্য কোনো কাজ নেই। তাই মামলার জট নিরসন করতে পারি আর না পারি, প্রতিটি মামলা আমরা খুব দায়িত্ব সহকারেই তদন্ত করি। তবে পিবিআই না পারলে ধরে নিতে হবে, আর কেউ পারবে না। সুতরাং পিবিআই’ই শেষ ভরসা। আর সেই মোতাবেক পিবিআই শেষ চেষ্টা দেখানোর জন্য কাজ করে।

তিনি বলেন, এভাবেই মামলার তদন্ত করতে করতে, চাঞ্চল্যকর সব মামলার তদন্ত করার বিষয়ে শক্তি অর্জন করেছে পিবিআই। এই অভিজ্ঞতা এখন সব মামলার ক্ষেত্রেই আমাদের কাজে লাগে।

বিজ্ঞাপন
পিবিআই লোগো

কীভাবে ক্লু-লেস মামলার তদন্ত সম্পন্ন হয়, এই প্রশ্নের উত্তরে পিবিআই প্রধান বলেন, আসলে ক্লু-লেস বলতে কোনো মামলা নেই। আমার নির্দেশনা একদম সোজা, মামলার ভিতরে ঢুকতে হবে। সকল দিকে চোখ রাখতে হবে। তাহলেই অনেক কিছু পাওয়া যাবে। যেমন ৩০ বছর আগের সগিরা মোর্শেদ হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন আমরা একই কায়দায় করি। এই মামলায় হাইকোর্টে তৃতীয় একটি পক্ষের রিট ও রিকশাচালকের বক্তব্যকে সামনে রেখে আমরা তদন্ত করি। পরে আলোচিত এই হত্যা মামলার রহস্য আমরা ভেদ করতে পারি।

আরও পড়ুন: বাদী-বিবাদীর গল্পেই রহস্যের চাবি 

বিজ্ঞাপন

পিবিআই’র সীমাবদ্ধতা কোথায়, এমন প্রশ্নের সোজাসাপ্টা উত্তর দিলেন সংস্থাটির প্রধান। তিনি বলেন, আমাদের কাজে কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। এমন কোনো দিন হয়নি, যে কোথায় আমরা হাত দিয়েছি পরে আবার হাত তুলে নিয়েছি। তার পরও যদি আমাদের কাজের ছোটখাটো সীমাবদ্ধতা আসে সেটি আইজিপি স্যার ও মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় সমাধান করে দেন।

 

পিবিআই নিজেই জটিল রহস্য উদঘাটন করে, সেখানে তাদের সফলতার রহস্যও উন্মোচিত হল বার্তাটোয়েন্টিফোরের সামনে। ডিআইজি বনজ কুমার মজুমদার বলেন, আসলে সফলতা কতটুকও তা আমরা বলতে পারব না। পিবিআই যাত্রা শুরুর দিকে ছোট ছোট কিছু মামলার তদন্ত করত। কিন্তু ২০১৬ সালের ৫ জানুয়ারি বিধি তৈরি হওয়ার পর ধীরে ধীরে সকল মামলার তদন্ত শুরু করে পিবিআই। সারা দেশে এখন পিবিআই’র ৫০টি ইউনিট এখন কাজ করছে। এমন অনেক মামলা আছে যেগুলোর খবর কেউ জানে না এমনকি মিডিয়াতেও আসে না। আমরা এসব মামলা পিক করে তদন্ত করছি এবং সফলতাও পাচ্ছি। একেবারে গ্রামগঞ্জে গিয়ে আমরা তদন্ত করে মামলার জট নিরসন করছি।

নিঃসন্দেহে অন্যান্য তদন্তকারী সংস্থাগুলোর থেকে পিবিআই আলাদা। সেটা কাজের ধরন, কৌশল ও সাফল্যে। এই স্বকীয়তার পেছনের গল্পটা বললেন সংস্থাটির প্রধান। তিনি বলেন, পিবিআই এখন এমন একটি সংস্থায় রূপ নিয়েছে যেখানে অফিসার থেকে শুরু করে একজন কনস্টেবল পর্যন্ত সবাই ২৪ ঘণ্টা তদন্ত কাজে নিজেদের ব্যস্ত রাখেন। কেননা নির্দিষ্ট সময় পর পর মামলার অগ্রগতির বিষয়ে জবাবদিহিতা করতে হয়। সকল পক্ষের কথা শুনে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য চার্জশিট দিতে পিবিআই কাজ করে।