কেউ দাবায় রাখতে পারবে না



রেজা-উদ্-দৌলাহ প্রধান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ/ছবি: সংগৃহীত

বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলিষ্ঠ কণ্ঠে ঘোষণা করেছিলেন, ‘....তোমরা আমার ভাই, তোমরা ব্যারাকে থাকো, কেউ কিছু বলবে না। গুলি চালালে আর ভালো হবে না। সাত কোটি মানুষকে আর দাবায়ে রাখতে পারবা না। বাঙালি মরতে শিখেছে, তাদের কেউ দাবাতে পারবে না। রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেব। এই দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব; ইনশাআল্লাহ।’

দাবায় রাখতে পারেনি তারা। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর তৎকালীন দুনিয়ার অন্যতম পরাক্রমশালী পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাদেশের দামাল তরুণদের কাছে হার মেনেছিল।

৩০ লাখ শহীদের আত্মদান আর দুই লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম, কোটি বাঙালির আত্মনিবেদন ও বীরত্বে পরাধীনতার অভিশাপ থেকে মুক্তি পেয়েছিল বাঙালি জাতি। চিরসংগ্রামী ও বিদ্রোহী বাঙালি জাতি এবং এই ভূখণ্ডের অন্যান্য নৃগোষ্ঠী প্রথমবারের মতো একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছিল। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী বিজয়ের দিনটি তাই গোটা বাঙালি জাতির হাজার বছরের ইতিহাসেই অনন্য মাইলফলক।

পঞ্জিকা ঘুরে আবারো আমাদের সামনে এসেছে ১৬ ডিসেম্বর। স্বাধীনতার ৪৮ বছর পূর্তি। স্বাধীনতার প্রায় পাঁচ দশক পরে খেরোখাতা খুলে বসলে দেখা যায়, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির টানাপোড়েনের মধ্যে, শত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে এগিয়ে চলেছে প্রিয় মাতৃভূমি।

মাত্র ২১ বছর বয়সে পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছিলেন কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য। এক কবিতায় তিনি বলেছিলেন—
‘শাবাশ, বাংলাদেশ,
এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়;
জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার,
তবু মাথা নোয়াবার নয়।’

কবিতার লাইনগুলোর জ্বলজ্যন্ত প্রমাণ ১৯৭১ সালের বিজয় অর্জন। বিশ্বাবাসীর বিস্মিত চোখের সামনে রক্তের দামে কেনা স্বাধীনতা অর্জনেই শুধু নয়; পরবর্তী প্রায় পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশ একের পর এক আরও বিস্ময় সৃষ্টি করে চলছে।

সত্তরের দশকে যে দেশকে নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জারের মন্তব্য ছিল ‘তলাবিহীন ঝুঁড়ি’; সেই দেশ আজ বিশ্বমোড়লদের চোখে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’। বিশ্বের সামনে এখন স্বার্বভৌম, স্বনির্ভরতা ও সমৃদ্ধির সমুজ্জ্বল উদাহরণ।

স্বাধীনতার মধ্য দিয়ে গণতন্ত্রের পাশাপাশি অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও বৈষম্যহীনতার যে স্বপ্ন আমরা দেখেছিলাম, সেটাও এখন হাতের নাগালে। বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির দৃশ্যমান অর্জনও করেছে। আমরা অর্থনৈতিকভাবে নিম্ন আয়ের দেশ থেকে নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছি। আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ এখন উন্নত বাংলাদেশ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে ধীরে কিন্তু দৃপ্ত পদক্ষেপে লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।

এক সময় বৈদেশিক অনুদান ও ঋণ ছাড়া যেখানে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন অকল্পনীয় ছিল। এখন সেখানে নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি হওয়া পদ্মা বহুমুখী সেতুর মতো মেগা প্রকল্পও প্রমত্ত পদ্মার বুকে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের সক্ষমতার জয়গান গাইছে।

পদ্মা সেতুর দৃশ্যমান অবকাঠামো আমাদের মনে করিয়ে দেয়, স্বাধীনতা আমাদের স্বপ্ন ছিল নিঃসন্দেহে, একই সঙ্গে প্রত্যয় ছিল সুখী ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার।

ঢাকায় মেট্রোরেল প্রকল্প,দোহাজারী হতে রামু হয়ে কক্সবাজার এবং রামু হয়ে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ প্রকল্প, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প, কয়লা ভিত্তিক রামপাল থার্মাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, পায়রা বন্দর নির্মাণ প্রকল্প এবং সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, কর্ণফুলী নদীতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল নির্মাণ প্রকল্পসহ অনেক মেগা প্রকল্প এখন আর স্বপ্ন নয় বরং রঙিন বাস্তবতা।

জল, স্থল ও অন্তঃরীক্ষ সবাখানেই এখন বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল বিচরণ!

মহাকাশে দেশের বিজয় তিলক হিসেবে শোভা পাচ্ছে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলইট-১’। সমুদ্রসীমা নিয়ে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে থাকা দীর্ঘ দিনের বিরোধ মিটে গেছে। ফলশ্রুতিতে ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গ কিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার নিয়ে বিশাল সমুদ্রসীমায় এখন বাংলাদেশের নিরঙ্কুশ আধিপত্য। যা খুলে দিয়েছে `ব্লু ইকোনোমি’র অপার সম্ভাবনা। স্বাধীনতার ৪৪ বছর পর দেশের সীমানা নির্ধারণ হয়েছে ২০১৫ সালে। শান্তিপূর্ণ উপায়ে ভারতের সঙ্গে ছিটমহল বিনিময়ের মধ্যদিয়ে বাংলাদেশের সাথে যুক্ত হয়েছে ১০ হাজার ৫০ একর জমি।

মুক্তিযুদ্ধের সময় এ দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ শরণার্থী হিসেবে আশ্রয় নিয়েছিল প্রতিবেশী দেশে। এখন বাংলাদেশ নিজেই দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গা শরণার্থীর আশ্রয়, খাদ্য ও নিরাপত্তা দিচ্ছে। জাতি হিসেবে বিশ্বে একটি মর্যাদার আসনে নিজেদের তুলে ধরেছে।

দৃশ্যমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে রূপকল্প-২০২১ এর লক্ষ্যমাত্রাগুলো অর্জন করতে চায় সরকার। যাতে জাতির পিতার স্বপ্ন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা গড়ে তোলার পথে আরো একধাপ এগিয়ে যাওয়া যায়।

দেশের স্বাধীনতার মহানায়ক জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে আগামী বছর শুরু হতে যাচ্ছে ‘মুজিব বর্ষ’। ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ১৭ মার্চ পর্যন্ত বছরব্যাপী নানা কর্মসূচিতে উদযাপন করা হবে মুজিব বর্ষ। মুজিব বর্ষের প্রাক্কালে এবারের বিজয় দিবস আমাদের জন্য বিশেষ মাত্রা বহন করছে। মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী প্রেরণা, আমাদের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্বঐতিহ্য। যে বঙ্গবন্ধুকে বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছিল সে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু যেন নতুন রূপে আর্বিভূত হতে যাচ্ছে মুজিব বর্ষে।

আমরা জানি, মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য ছিল একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। যে রাষ্ট্রের মূলমন্ত্র হবে গণতন্ত্র, যে রাষ্ট্রে জাতি বর্ণ-ধর্ম-নির্বিশেষে সব মানুষ মুক্তির আস্বাদ নিয়ে বসবাস করবে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে জাতির পিতাকে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয়েছিল, ভুল ইতিহাস আর স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিদের ক্ষমতায় আরোহণে দেশের লাখ লাখ মুক্তিযোদ্ধার চোখে নীরব অশ্রু গড়াতো।

যদিও সে পরিস্থিতিও এখন আর নেই। গত কয়েক বছর ধরেই আমরা দেশকে মুক্তিযুদ্ধের ধারা ও চেতনায় ফিরতে দেখে আসছি। একদিকে যেমন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া অনেকাংশে সম্পন্ন হয়েছে। তবুও মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী পক্ষ এখনও নানা নামে-বেনামে একাত্তরের মতোই রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত। তারা সামাজিক স্থিতিশীলতা বিনষ্টের পাঁয়তারা করে চলেছে। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক ও ন্যায়বিচারভিত্তিক যে বাংলাদেশ গঠনের জন্য মুক্তিযোদ্ধারা জীবন বাজি রেখেছিলেন সেই চেতনার মূলে আঘাত করে চলছে এসব অন্ধকারের শক্তি।

আমরা প্রত্যাশা করি, সমৃদ্ধ, গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িকতার পথে সব বাধা দূর হয়ে, সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজে সামাজিক ন্যায়বিচার ও ন্যায্যতা নিশ্চিতের মাধ্যমে মুক্তি ও স্বাধীনতার নতুন চেতনায় আলোকিত বাংলাদেশের বিজয় কেতন উড়বে বিশ্ব পরিমণ্ডলে। সেই বাংলাদেশকে আর কেউ দাবায় রাখতে পারবে না।

   

ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম

ঈদের আগে জিম্মি নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সোমালিয়ার জলদস্যুদের হাতে ১৮দিন ধরে জিম্মি বাংলাদেশি ২৩ নাবিককে ঈদের আগে উদ্ধার করে দেশে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা কম। দস্যুদের প্রতিনিধির সঙ্গে জাহাজটির মালিকপক্ষের আলোচনা চলমান থাকলেও এখনো নাবিকদের মুক্তি নিয়ে বলার মতো তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে এবার হয়তো পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ করা হচ্ছে না নাবিকদের।

ঈদের আগে নাবিকদের উদ্ধার করার কথা প্রচার হচ্ছে কোথাও কোথাও। এমন পরিস্থিতিতে জাহাজটির মালিক চট্টগ্রামভিত্তিক কবির গ্রুপের (কেএসআরএম) অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে, দস্যুদের প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনা চলমান আছে। তবে এখনো বলার মতো কিছু হয়নি। নাবিকদের পরিবারের সদস্যদেরও মানসিকভাবে প্রশান্তিতে রাখার একটা বিষয় আছে। সেজন্য হয়তো কোথাও কোথাও বলা হচ্ছে, ঈদের আগে নাবিকদের মুক্ত করে দেশে ফিরিয়ে আনা হবে। তবে প্রকৃত সত্য হচ্ছে, ঈদের আগে নাবিকদের মুক্ত করা কঠিন।

১২ মার্চ ভারত মহাসাগরে ২৩ জন বাংলাদেশি নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহকে জিম্মি করে সোমালিয়ার দস্যুরা। পরে তারা জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে কয়েকবার জায়গা বদলের পর বর্তমানে সোমালিয়ার গদভজিরান জেলার জিফল উপকূল থেকে দেড় নটিক্যাল মাইল দূরে জাহাজটি নোঙর করে রেখেছে দস্যুরা।

প্রায় ১৩ বছর আগে ২০১০ সালের ৫ ডিসেম্বর এমভি জাহান মণি নামের একই গ্রুপের মালিকানাধীন একটি জাহাজ জিম্মি করেছিল সোমালিয়ার জলদস্যুরা। তখন মুক্তিপণ আদায়ের পর জাহাজ থেকে নেমে গিয়েছিল দস্যুরা। ১০০ দিন পর সব নাবিকসহ উদ্ধার করা হয়েছিল। এবার এখনো মুক্তিপণের বিষয়ে তেমন কিছু জানা যায়নি। আর মুক্তিপণের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে তেমন কিছু জানায়নি। মুক্তিপণ চাওয়ার পর মালিকপক্ষ থেকে দর কষাকষি করা হবে। তখন ৪০দিনে দুই পক্ষের মধ্যে মুক্তিপণের বিষয়ে সমাঝোতা হয়েছিল। এরপর চাহিদা অনুযায়ী অর্থ পাঠানো হয় দস্যুদের দেখিয়ে দেওয়া জায়গায়। পরে মুক্তিপণের টাকা পেয়ে জাহাজে এসে সেই টাকা ভাগ করে দস্যুরা। এরপরই জাহাজ থেকে নেমে যায় দস্যুরা। অর্থাৎ সমাঝোতার পরও মুক্তি পেতে প্রায় দুই মাস সময় লেগেছিল। এবারও সেই প্রক্রিয়ায় মুক্তি মিলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ফলে সব প্রক্রিয়া শেষ হওয়া সময়সাপেক্ষ বিষয়।

অবশ্য নাবিকদের উদ্ধারে দেরি হলেও ভালো খবর হচ্ছে, এখন পর্যন্ত নাবিকেরা সবাই সুস্থ আছেন। দস্যুদের পক্ষ থেকেও ভালো আচরণ করা হচ্ছে। তাঁদের ওপর কোনো নির্যাতন কিংবা ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে না। এরই মধ্যে জাহাজের নাবিকদের জন্য তীর থেকে দুম্বা ও ছাগল আনা শুরু করেছে দস্যুরা। ফলে খাবার নিয়ে নাবিকদের মধ্যে থাকা দুশ্চিন্তা অনেকটাই কমে গেছে। অবশ্য জাহাজে বিশুদ্ধ পানি কমে যাওয়া নিয়ে নাবিকদের মধ্যে কিছুটা উদ্বেগ আছে।

অবশ্য জাহাজটির মালিকপক্ষ কবির গ্রুপের মুখপাত্র এবং মিডিয়া উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম জানিয়েছেন নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা ভালোভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগ হলেও জলদস্যুরা তাতে ভালোভাবে সাড়া দিয়েছে। নাবিকদের সঙ্গেও তারা ভালো আচরণ করছে। নাবিকদের তাঁরা নিজ নিজ কেবিনে থাকতে দিচ্ছে, জাহাজের নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণ কাজে অংশ নিতে দিচ্ছে। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও যোগাযোগ করতে দিচ্ছে। সবমিলিয়ে ইতিবাচক সাড়া দিচ্ছে দস্যুরা। আশা করছি খুব দ্রুত নাবিকদের মুক্তির বিষয়ে তাদের সঙ্গে সমাঝোতা হবে। সবমিলিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে সংকটের সমাধান করে নাবিকদের দেশে ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।’

;

শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী

শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক: ধর্মমন্ত্রী

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, শিক্ষার মৌলিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জনে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম অত্যন্ত সহায়ক। যদি দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারিত করা যায় তাহলে শিক্ষার সামগ্রিক লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অর্জন ত্বরান্বিত হবে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) বিকেলে ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজে দ্বিতীয় ডিআরএমসি জাতীয় রমাদান ফেস্টিভ্যাল ২০২৪ এর সমাপনি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

ধর্মমন্ত্রী বলেন, ইসলামের সংবিধান হলো মহাপবিত্র আল কুরআন। এটি কিয়ামত পর্যন্ত সকল মানুষের জন্য ইহকালীন ও পরকালীন মুক্তির পথপ্রদর্শক। মুসলিমদের জন্য রয়েছে আরেকটি বিধান সেটি হলো মহানবী (স.) এর হাদীস। এই দুটিকে আঁকড়ে ধরতে পারলে পথভ্রষ্ট হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই। বরং কুরআন ও হাদীসের আলোকে জীবন পরিচালনা করতে পারলে পরকালে পুরস্কার হিসেবে রয়েছে চির শান্তির জান্নাত।

তিনি বলেন, আমরা যদি নতুন প্রজন্মের মধ্যে ইসলামের আলো সঞ্চারিত করতে পারি তাহলে অবশ্যই তারা আদর্শ মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে। তারা সকল ধরণের অন্যায়-অনাচার, পাপাচার থেকে বিরত থাকার শিক্ষা পাবে এবং তারা আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হয়ে গড়ে উঠবে। আমরা গড়ে তুলতে পারবো একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা।

ফরিদুল হক খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০৪১ সালে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছি। এই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য নৈতিক, মানবিক, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক মূল্যবোধসম্পন্ন প্রজন্ম গড়ে তোলার বিকল্প নেই। তাছাড়া, শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননে কর্তব্যবোধ, মানবাধিকার সচেতনতা, মুক্তবুদ্ধির চর্চা, শৃঙ্খলা, সৎ জীবনযাপনের মানসিকতা, সৌহার্দ্য, সহমর্মিতা ও গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ ইত্যাদির বিকাশ ঘটানো প্রয়োজন। এক্ষেত্রে ক্লাবভিত্তিক সহশিক্ষা কার্যক্রম বিশেষ ভূমিকা রাখতে পারে।

তিনি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ইসলামী জ্ঞান অন্বেষণ ও সঞ্চারিত করার জন্য ঢাকা রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজ ইসলামিক কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান।

ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের অধ্যক্ষ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল কাজী শামীম ফরহাদের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে কলেজের উপাধ্যক্ষসহ অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।

;

রংপুরে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে শিশু নিহত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রংপুর
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রংপুরের মিঠাপুকুরে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে মামুন মিয়া (৪) নামে এক শিশু নিহত হয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সন্ধ্যায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ। এদিন সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ইমাদপুর মুন্সীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ওই শিশু মামুন মিয়া ইমাদপুর ইউনিয়নের সোনার পাড়া গ্রামের দিনমজুর শহিদুল মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, শিশু মামুনের বাড়ির পাশের রাস্তা দিয়ে প্রতিনিয়ত ইটভাটার মাটি আনার জন্য ট্রাক্টরগুলো যাতায়াত করে। সকালের দিকে শিশুটি রাস্তার পাশে দাড়িয়ে ভেকু দিয়ে মাটি কাটার দৃশ্য দেখছিল। এ সময় ভেকু দিয়ে কাটা মাটি বহনকারী একটি ট্রাক্টর মাটি নেওয়া শেষে পিছনে ঘুড়ানোর সময় মামুনকে চাপা দেয়। এতে মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়।

এ বিষয়ে মিঠাপুকুর থানার অফিসার ইনচার্জ ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে মাটি বহনকারী ট্রাক্টরটি আটক করেন। পরে পরিবারের আবেদনে শিশুটির মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

;

এক টিকিটের জন্য ৫০০ বার হিট, ৬ষ্ঠ দিনে বিক্রি ৩১ হাজারের বেশি



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

 

আসন্ন ঈদ যাত্রায় ট্রেনের ৬ষ্ঠ দিনে ৩১ হাজারের বেশি অগ্রীম টিকেট বিক্রি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সহজ.কমের চিফ অপারেটিং অফিসার সন্দ্বীপ দেবনাথ।

তিনি জানান, প্রতি টিকিটের জন্য গড়ে ৫০০ বারের বেশি হিট করেছেন যাত্রীরা। আগামী ৮ এপ্রিলের পশ্চিমাঞ্চলের ১৫ হাজার ৮৯০টি টিকেটের মধ্যে ১৫ হাজার ২০০টি বিক্রি হয়ে গিয়েছে।

শুক্রবার (২৯ মার্চ) সহজ.কমের চিফ অপারেটিং অফিসার সন্দ্বীপ দেবনাথ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

সন্দ্বীপ দেবনাথ বলেন, এ দিনের পশ্চিমাঞ্চলের টিকিট পেতে রেল সেবা অ্যাপে প্রথম আধ ঘণ্টাতেই (সকাল ৮ থেকে সাড়ে আটটা) হিট পড়েছে ১ কোটি ২৮ লাখ বার।অন্যদিকে এই সময়ের মধ্যে পূর্বাঞ্চলের টিকিট পেতে উক্ত অ্যাপে হিট পড়েছে ৯৬ লাখ বার। পূর্বাঞ্চলের ১৬ হাজার ৬৯৬টি টিকিটের মধ্যে ১৫ হাজারের বেশি টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।

এদিকে এ বছর ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া আন্তঃনগর ৪২ জোড়া ট্রেনের টিকিট দুই পর্যায়ে দেওয়া হচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে এই অগ্রিম টিকিট সম্পূর্ণ অনলাইনে বিক্রি হবে। এবার মোবাইলে ওটিপি ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে টিকিট দেওয়া হচ্ছে। ঈদ যাত্রাকে নিরাপদ রাখার জন্য সকল ব্যবস্থা রাখা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

এছাড়াও বাংলাদেশ রেলওয়ে জানিয়েছে, ৯ এপ্রিলের ভ্রমণের টিকিট পাওয়া যাবে ৩০ মার্চ।

;