অপরাধ ঠেকাতে রাইডারদের ডাটাবেজ করবে পুলিশ
রাজধানীতে অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিং সেবায় চলছে নানা নৈরাজ্য। প্রতিদিন ছোট-বড় নানা অপরাধে জড়াচ্ছেন চালকরা। গত তিন বছরে ধর্ষণ, খুন, ছিনতাই, যৌন হয়রানিসহ অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাই ঘটেছে।
এ সব ঘটনায় অপরাধীদের রাইড শেয়ারিং নিবন্ধন থাকলেও চলাচল করেছেন সাধারণের মতো। ফলে তাদের ধরতে হিমশিম খেতে হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। অনেক সময় ভুক্তভোগীরা পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়েও যাননি।
তবে সম্প্রতি একাধিক ঘটনার মামলার তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ মনে করছে, অ্যাপসভিত্তিক এসব রাইড শেয়ারিংয়ের চালক ও যানবাহনগুলোর একটা পৃথক ডাটাবেজ করা উচিত, যার মাধ্যমে কোনো চালক অপরাধ করলে সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হয়।
পুলিশ বলছে, নিবন্ধন না থাকা বা নিবন্ধনে চলাচল না করার কারণে রাইড শেয়ারিং সেবায় পুলিশের ৯৯৯-এ কল করে যে সেবা দেওয়ার কথা, তা পুরোপুরি দেওয়া যাচ্ছে না।
যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় পড়লে চালকের সব তথ্য এবং যাত্রীর অবস্থান সরাসরি পুলিশের কাছে চলে যাওয়ার কথা। এর জন্য জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডারের (ডাটাবেজ) সঙ্গে চালকের তথ্য যুক্ত থাকবে। কিন্তু নিবন্ধন না থাকায় এটা হচ্ছে না। তাই আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও কোনো তথ্য পাচ্ছে না।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দেওয়া তথ্য বলছে, বনানীর সেই আলোচিত ধর্ষণ ঘটনায় ব্যবহার করা হয়েছিল উবারের গাড়ি। আবার কিছুদিন আগেও উত্তরা থেকে উদ্ধার করা হয় উবার চালকের গলা কাটা মরদেহ। এসব ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা গেছে। আবার অনেক ঘটনারই কূল কিনারা করা যায়নি এখনো। কিন্তু এভাবে অনিরাপত্তার মধ্যে আর চলতে দেবে না তারা।
পুলিশ প্রশাসন চায়, অ্যাপসভিত্তিক রাইড শেয়ারিংগুলোর একটা পরিষ্কার পৃথক ডাটাবেজ থাকবে, যে ডাটাবেজের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা চাইলেই কারো তথ্য বা অবস্থান জানতে পারবে। যার ফলে অপরাধ প্রবণতা অনেকাংশে কমে আসবে, অপরাধীকে শনাক্ত করা যাবে।
এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মফিজ উদ্দিন আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, রাজধানীতে ঘটে যাওয়া এমন কিছু ঘটনায় হওয়া মামলার তদন্ত করতে গিয়ে আমরা অনেক কিছু জেনেছি। তারপর থেকে আমরা রাস্তায় চলাচল করা রাইড শেয়ারিংয়ের চালক ও গাড়ির ওপর বিশেষ নজরদারি শুরু করি।
সার্বিক বিষয়ে ডিএমপি কমিশনার শফিকুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, রাজধানীতে ছিনতাইসহ বেশ কিছু অপরাধের অপরাধীকে শনাক্ত করতে অ্যাপসভিত্তিক যানবাহন ও চালকের পরিচয় সংরক্ষণ করতে পৃথক ডাটাবেজ তৈরি করবো, যেন কেউ অপরাধে জড়ালে চিহ্নিত করতে সমস্যা না হয়।