চসিক নির্বাচন: ৭৩৫ কেন্দ্রের জন্য প্রস্তুত ১৬ হাজার কর্মকর্তা
আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে প্রায় সব প্রস্তুতি নিয়েছে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস। ভোটগ্রহণ নির্বিঘ্ন করতে ইতিমধ্যে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল চূড়ান্ত করা হয়েছে। যাতে ভোটগ্রহণ অবস্থায় বিঘ্ন না ঘটে সেই লক্ষ্যে নির্বাচনের ২০ দিন আগে থেকে তাদের প্রস্তুত করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, চসিক নির্বাচনে নগরীর ৭৩৫ কেন্দ্রের ৪ হাজার ৮৮৯ ভোটকক্ষে ১৯ লাখ ৮৭ হাজার ৮৯৪ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটগ্রহণে ৭৩৫ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ৪ হাজার ৮৮৬ জন সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং ৯ হাজার ৭৭২ জন পোলিং কর্মকর্তা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সঙ্গে আরও ৫ শতাংশ বাড়তি হিসাব ধরে মোট ১৬ হাজার ১৭২ ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল প্রায় চূড়ান্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।
ওই সূত্রে আরও জানা যায়, ১৮ মার্চ থেকে ভোটগ্রহণ কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ শুরু হবে। এবারের নির্বাচনে ১১ হাজার ইভিএম প্রয়োজন হবে। ৯ মার্চ প্রথম ধাপে ৪ হাজার ইভিএম আসবে। এবার যেহেতু চসিক নির্বাচন ইভিএমে অনুষ্ঠিত হবে সেজন্য ভোটারদের ইভিএমে ভোটদানের ক্ষেত্রে উদ্বুদ্ধ করা এবং ভোটদান পদ্ধতি শিখিয়ে দিতে আগামী ২৭ তারিখ একদিন সবগুলো ভোটকেন্দ্রে মক ভোটিং অনুষ্ঠিত হবে।
তবে এসব কাজে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হবে কিনা তা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় রয়েছে আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস। বর্তমান মেয়র নির্বাচনী লড়াইয়ে না থাকায় আইনি জটিলতা না থাকলেও বিতর্ক এড়াতে চসিকের বেতনভুক্তদের নির্বাচনী দায়িত্বে রাখা না রাখা নিয়েও সিদ্ধান্তহীনতায় কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন ও রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, নির্বাচন কমিশন সব নির্বাচনেই ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার একাধিক তালিকা প্রণয়ন করে থাকে। এবারও তাই করা হচ্ছে।
কেননা, নির্বাচনের আগ মুহূর্তে অনেককেই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে অন্যদের নিয়োগ করার প্রয়োজন পড়ে। ভোটকেন্দ্র ও ভোটকক্ষ অনুযায়ী আমরা ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল নির্ধারণ করেছি। কোনোভাবেই বিতর্কিত কোনো কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে না।
তিনি আরও বলেন, প্রথমবারের মতো সবকটি ভোটকেন্দ্রে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণের জন্য ১১ হাজার ইভিএম নির্বাচন কমিশন থেকে পাঠানো হচ্ছে। আগামী ৯ মার্চ থেকে ইভিএম মেশিন চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসে আসতে শুরু করবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম আঞ্চলিক নির্বাচন অফিসের এক কর্মকর্তা বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার তালিকায় প্রণয়নে চারটি বিষয়কে এবার প্রাধান্য দেওয়ার বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কমিশন। এক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দলীয় সম্পৃক্ততা, মৌলবাদের সম্পৃক্ততা, যোগসাজশের সম্পৃক্ততা কিংবা নৈতিক স্খলনে অভিযোগ থাকলে তাকে দায়িত্ব দেওয়া নিয়ে যাচাই-বাচাই করছে।
উল্লেখ্য, আগামী ২৯ মার্চ অনুষ্ঠিতব্য চসিক নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা হচ্ছে ১৯ লাখ ৫১ হাজার ৫২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ লাখ ৯৮ হাজার ৭২৩ জন। নারী ভোটার ৯ লাখ ৫২ হাজার ৩২৯ জন। নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এম রেজাউল করিম চৌধুরী, বিএনপির মেয়র প্রার্থী ডা. শাহাদাত হোসেনসহ মোট ৯ জন মেয়র, ২১১ জন সাধারণ ওয়ার্ডর কাউন্সিলর এবং ৫৮ জন সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী রয়েছে।