‘পোলাপানগোর মুহির দিকি তাহালি কিচ্ছু ভাল্লাগেনা’

  • সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ভ্রাম্যমাণ মুচি রমেশ সরকার/ছবি: বার্তা২৪.কম

ভ্রাম্যমাণ মুচি রমেশ সরকার/ছবি: বার্তা২৪.কম

জীবনের এতো বছর কাটে গিলো কহনো এতো কষ্টে পড়ি নাই। গায়ে জোড় আছে কাম কাজ করে খাতি পারি। কিন্তু এহন যে অবস্থায় পড়ছি তাতে তো কাম কাজও কিচ্ছু পাচ্ছিনা। হারাদিন রৌদ্রের মাঝে ঘুরে বেড়াচ্ছি কোন কাম নাই। কি খামু, কি করবো কিছুই বুঝতে পারতেছিনা। পোলাপানগোর মুহির দিকি তাহালি আর কিচ্ছু ভাল্লাগেনা।

করোনার প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটের ভ্রাম্যমাণ মুচি রমেশ সরকার এভাবেই তার কষ্টের কথা বলছিলেন।

বিজ্ঞাপন

শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, করোনার কারণে ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে। মানুষজন কিচু নাই। কাগের কাম করবো। কাম না থাহায় পেটে তো ভাতই দিতে পারতেছিনে। পোলাপানগুলো না খায়ে কীভাবে থাকপি। কতদিন এ রহম থাকপি সৃষ্টিকর্তায় জানেন।

করোনার প্রভাবে সারাবিশ্ব আজ অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছে। কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। বাদ পড়েনি বাংলাদেশও। বাংলাদেশ এখন চরম ঝুঁকিতে রয়েছে করোনার।

বিজ্ঞাপন

দেশের মানুষকে করোনার প্রভাব থেকে রক্ষা করার জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে রয়েছে গণ পরিবহন বন্ধ। আর গণ পরিবহন থাকার কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের অন্যতম প্রবেশদ্বার দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটের ফেরি ও লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে দীর্ঘদিন।

রমেশ সরকারের মতো প্রায় ১০-১৫ জন মুচি রয়েছেন এই নৌরুটে। যাত্রী না থাকায় এখন তারা চরম বিপাকে পড়েছেন। সারাদিন ঘুরেও দুটো পয়সার যোগান পাচ্ছেন না।

রমেশ সরকারের মতো আরও কয়েকজন বার্তা২৪.কমকে বলেন, এই ঘাট থেকে প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা আয় করতেন জুতা পালিশ করে। কিন্তু করোনার কারণে ঘাট জনশূন্য হওয়ায় এখন তারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। না খেয়ে থাকতে হচ্ছে তাদের। পরিবার পরিজন নিয়ে তারা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।