পিপিআর রোগের ভ্যাকসিন সংকট, যশোরে আতঙ্কে খামারিরা

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপনডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছাগলের পিপিআর রোগ, ছবি: বার্তা২৪.কম

ছাগলের পিপিআর রোগ, ছবি: বার্তা২৪.কম

যশোরে ভাইরাসজনিত পিপিআর রোগে আক্রান্ত হয়ে গত এক সপ্তাহে প্রায় ২০টি ছাগলের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত হয়েছে শতাধিক ছাগল। এ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছে গবাদিপশু পালনকারী খামারিরা। এ রোগ প্রতিকারে প্রাণীসম্পদ কর্তৃপক্ষের তৎপরতা নেই বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। আর প্রাণীসম্পদ কর্তৃপক্ষের দাবি পুরো জেলায় চলছে ভ্যাকসিন সংকট।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, যশোরে জ্বর, পাতলা পায়খানা, মুখে ঘাঁ ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে বাড়িতে পোষা ছাগল মারা যেতে শুরু করেছে। গত এক সপ্তাহে সদরের পাঁচবাড়িয়া এলাকায় এ ধরনের অসুস্থতায় চারটি ছাগল মারা গেছে। এমনকি ওই এলাকার আরও অনেক ছাগলের মধ্যে একই উপসর্গ দেখা গেছে।

খামারিদের অভিযোগ, তারা প্রাণী সম্পদ বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি।

সদর উপজেলা পাঁচবাড়িয়া এলাকায় কৃষক তুহিন হোসেন জানান, পিপিআর রোগে গ্রামে প্রতিদিনই দুই একটি ছাগল আক্রান্ত হচ্ছে। গত এক সপ্তাহে প্রায় ৬-৭টি ছাগল মারা গেছে। পশু হাসপাতালেও ঠিকভাবে চিকিৎসা মিলছে না। অনেকেই রোগাক্রান্ত ছাগল কম দামে বিক্রি করে দিচ্ছেন।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের জানানো হলে করোনা পরিস্থিতির কারণে এই মুহূর্তে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয় বলে তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

একই এলাকার কৃষক আমজাদ হোসেন বলেন, প্রথমে সর্দি, জ্বর ও পরে পাতলা পায়খানা হয়ে তাদের ছাগল মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত ছাগলের উপসর্গ দেখে বোঝা যাচ্ছে এগুলো পিপিআর রোগে আক্রান্ত। আমরা প্রাণীসম্পদ বিভাগের চিকিৎসকদের রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন দিতে আসতে বললেও তারা আসছেন না। তাদের জানালেও গড়িমসি করেন। এমনকি করোনার এই প্রাদুর্ভাবে বাজারেও ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে না।

জেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শফিউল আলম বার্তা২৪.কমকে বলেন, রোগের প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে কৃষকদের সতর্ক থাকতে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করেছে প্রাণীসম্পদ অধিদফতর। পিপিআর ছোঁয়াচে রোগ। অসুস্থ পশুর হাঁচি, কাশি, পায়খানার মাধ্যমে সুস্থ ছাগলের দেহে এই রোগটি ছড়িয়ে পড়তে পারে। এছাড়াও পানি, খাদ্যের পাত্র এবং অসুস্থ প্রাণীর ব্যবহৃত জিনিসপত্র দিয়েও রোগটি ছড়াতে পারে। এমনকি শরীরে জীবাণু আছে। কিন্তু এখনো রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়নি সেসব প্রাণীর মাধ্যমে রোগ অন্যত্র ছড়িয়ে পড়তে পারে। এজন্য সুস্থ থাকা পশুকে আক্রান্ত পশুর থেকে আলাদা রাখতে হবে।

তিনি আরও বলেন, যশোরে পিপিআর রোগের প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পেলেও পিপিআর ভ্যাকসিন সংকটে রয়েছি। সরকার দেশ থেকে ছাগলের পিপিআর রোগ নির্মূলের জন্য একটি ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যশোরে চলতি মাস থেকে ছাগলের দেহে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরুর পরিকল্পনা থাকলেও বর্তমান করোনা পরিস্থিতির কারণে সেটি সম্ভব হয়নি।