স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় কেয়ার বাংলাদেশ ও কোকা-কোলার পিপিই বিতরণ

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

কোকা-কোলা ও তার পার্টনার কেয়ার বাংলাদেশ যৌথভাবে করোনা মোকাবেলায় চলমান কার্যক্রমের অংশ হিসেবে, স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষায় ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই) প্রদান করছে। করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশের চলমান কার্যক্রমের সহযোগিতার লক্ষ্যে কোকা-কোলা ঘোষিত ১১.৫ কোটি টাকার প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবেই এই বিতরণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইচএস) কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে সম্প্রতি ঢাকায় এই পিপিই বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের সহায়তায়, কেয়ার বাংলাদেশ ঢাকা, কুমিল্লা এবং গাজীপুরে অবস্থিত স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে এক হাজারেরও বেশি পিপিই এবং অন্যান্য সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। কেয়ার বাংলাদেশের এই কার্যক্রমের স্থানীয় বাস্তবায়নকারী অংশীদার হল- সোশ্যাল এন্ড ইকোনোমিক ইনহান্সমেন্ট প্রোগ্রাম (সিপ) ও ঢাকা আহছানিয়া মিশন।

বিজ্ঞাপন

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডিজিএইচএস এর মহাপরিচালক প্রফেসর ডঃ আবুল কালাম আজাদ।

তিনি বলেন, “মহামারীর এই সময়ে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং এনজিও/সিএসও কে এগিয়ে আসতে হবে এবং কোভিড-১৯ এর বিরুদ্ধে মানবিক যুদ্ধে সরকারের সাথে হাত মিলিয়ে যৌথভাবে কাজ করতে হবে। এই সঙ্কট সময়ে স্বাস্থ্যসেবায় সহযোগিতায় এগিয়ে আসার জন্য আমি কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন এবং কেয়ার বাংলাদেশকে ধন্যবাদ জানাই।“ কোভিড-১৯ রোগীদের সেবায় নিয়োজিত ডাক্তার-নার্সদের জন্য ১,০০০ ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী (পিপিই), ফ্রন্টলাইন স্বাস্থ্যকর্মীদের ৮৩৫ ফেব্রিকেটেড পিপিই, ১,০০০ আই শিল্ড, ২,৬০০ এন-৯৫ ফেস মাস্ক, ১০,০০০ ডিসপোজেবোল হ্যান্ড গ্লভস, ৫০ লিটার হ্যান্ড স্যানিটাইজার, ১০০ বোতল হ্যান্ড রাব, ৪০ অক্সিজেন সিলিন্ডার, ১০,০০০ বায়ো হ্যাজার্ড ব্যাগ ও ১২টি থার্মাল স্ক্যানার প্রদান করা হয়।

কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রমেশ সিংহ বলেন, “ আমরা ইতিহাসের কঠিন সময় পার করছি। দেশজুড়ে মানুষের সহায়তা প্রয়োজন। কোকা-কোলার সাথে আমাদের অংশীদারিত্ব ক্ষতিগ্রস্ত জনগোষ্ঠী ও স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে। নেতৃত্বের জন্য আমরা বাংলাদেশ সরকারকে প্রশংসা করি এবং আমরা সরকারের প্রচেষ্টায় হাত মিলিয়ে চলেছি। করোনার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে যেসব স্বাস্থ্যকর্মী প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ, পাশাপাশি তাদের সুরক্ষা নিয়েও উদ্বিগ্ন। কেয়ার বাংলাদেশের বিভিন্ন সহায়তা কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে আমরা ১৩ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের  বিভিন্ন প্রান্তের ১,৭২৩,৯৫৮ মানুষের কাছে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছি। আমরা মানবিক সম্প্রদায়, দাতা সংস্থা এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে একত্র হয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহবান জানাচ্ছি”।

কোকা-কোলা বাংলাদেশের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজয় বাতিজা বলেন,“যেসব মানুষ ফ্রন্টলাইনে কাজ করছে, এই সময়ে যাদের সবচেয়ে বেশি সুরক্ষার প্রয়োজন, তাদের স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার জন্য কেয়ার বাংলাদেশের সহযোগিতায় আমরা এই ক্ষুদ্র উদ্যোগ গ্রহন করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমরা আশাবাদী যে আমাদের সমষ্টীগত উদ্যোগ এবং সহনশীলতা দ্বারা আমরা এই পরীক্ষার সময় থেকে নিজেদের রক্ষায় সক্ষম হবো।

গাজীপুরের সিভিল সার্জন ডাঃ খায়রুজ্জামান বলেন, কোভিড-১৯ এ মারাত্মক ভাবে প্রভাবিত এলাকার মধ্যে গাজীপুর একটি। “সংকট মূহুর্তের শুরুর দিকে কেয়ার থেকে ৫০০ পিপিই পেয়েছি। কোভিড কেস বাড়ার সাথে সাথে এসব সরঞ্জামের চাহিদা বেড়েই চলছে এবং এটা অত্যন্ত আনন্দের ব্যাপার যে কেয়ার বাংলাদেশ এবং দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন সাহায্যের জন্য হাত বাড়িয়েছে।

এই কর্মসূচী ঢাকা, গাজীপুর, ময়মনসিংহ এবং কুমিল্লার করোনা উপদ্রুত নগর বা ‘হটস্পট’ গুলোতে দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশন ও কেয়ার বাংলাদেশের সহায়তায় চলমান ত্রাণ কার্যক্রমের দ্বিতীয় ধাপ।

এছাড়া করোনার বিরুদ্ধে চলমান লড়াইয়ে যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন, সেই সব ডাক্তার-নার্স-পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পানীয় চাহিদা পূরণে নিজস্ব পণ্য সরবরাহ করতে কোকা-কোলা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। মে মাসের শুরুতে, কেয়ার বাংলাদেশ দ্য কোকা-কোলা ফাউন্ডেশনের সহায়তায় ১০,২২০ নগরে বসবাসরত পরিবারকে এক মাসের প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী এবং নারী ও কিশোরী মেয়েদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা সামগ্রী যেমন- স্যানিটারি ন্যাপকিন, ফেস মাস্ক, সাবান, ডিটারজেন্ট পাউডার ইত্যাদি প্রয়োজনীয় সামগ্রী সম্বলিত ‘ডিগনিটি কিটস’ও বিতরণ করা হয়েছে।

এসব উদ্যোগ কোভিড-১৯  মোকাবেলায় কোকা-কোলা বাংলাদেশের বৃহত্তর প্রতিশ্রুতির অংশ। এর মাধ্যমে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখেরও বেশি মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব রাখাই কোকা-কোলা বাংলাদেশের লক্ষ্য।