‘চামড়াত এবার লচ হইচে বাহে’

  • ডিস্ট্রিক করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

রংপুর: ‘এমন লচ মোর আগোত হয় নাই। আগের বছরোত তো চামড়া কিনি দুকন্যা পায়স্যার মুক দেকচু। কিন্তুক এবার যে চামড়ার অবস্থা খুবেই খারাপ। যে দাম দিয়্যা বাড়ি বাড়ি চামড়া নিচু, তার অর্ধেক দামও বাজারোত নাই। খরিদদারেরা বুদ্দি করি দাম কমাইচে। এবার মেলা টাকা চামড়াত লচ হইচে বাহে’।

কথাগুলো বলছিলেন রংপুর মহানগরীর নিউ সাহেবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আলমগীর হোসেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবছর ঈদুল আজহায় লাভের আশায় গ্রামের বিভিন্ন বাসা থেকে কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয় করে চামড়াপট্টিতে বিক্রি করেন। এবারও চামড়াপট্টিতে এসেছেন, কিন্তু লোকসানে চামড়া বিক্রি করে হতাশ তিনি।

আলমগীর হোসেনের মতো রংপুরের অনেক মৌসুমী ব্যবসায়ীই এবার চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অবশ্য এর জন্য ঢাকার ট্যানারি মালিকদের নির্ধারণ করা মূল্য এবং স্থানীয় আড়তদারদের সিন্ডিকেটকে দুষছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

বুধবার (২২ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৩টার সময় রংপুর মহানগরীর শাপলা চত্বর চামড়াপট্টি এলাকায় চামড়া বিক্রি করতে আসেন আবেদ মিয়া। তিনি বলেন, তিনি পাঁচটি আড়িয়া গরুর চামড়া ২ হাজার ৬৫০ টাকা লোকসানে বিক্রি করেছেন। ওই চামড়াগুলো তিনি ৬ হাজার ৮৫০ টাকা দিয়ে কিনেছিলেন।

একই অবস্থা হোসেন আলী ও মিন্টু মিয়ার। তারাও লোকসান এড়াতে পারেননি। তবে লোকসান এড়িয়ে সামান্য লাভে চামড়া বিক্রি করেছেন ধাপ এলাকার রাজু ও জীবন। তারা বলেন, ‘এতো কম দামে আগে কখনো চামড়া বিক্রি করিনি। আমরা প্রতি বছর ঈদে এলাকার বন্ধুরা মিলে চামড়া কিনে থাকি। কিন্তু এবার চামড়া বিক্রি করতে এসে আমরা হতাশ।’

এবার সরকার ও ট্যানারি মালিকরা ঢাকায় প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম পাঁচ টাকা কমিয়ে ৪৫-৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৩৫-৪০ টাকা নির্ধারণ করেছে।

অপরদিকে এবার প্রতি বর্গফুট খাসির চামড়ার দাম সারাদেশে ১৮-২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর বকরির চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১৩-১৫ টাকা।

বেঁধে দেয়া এই মূল্যে মৌসুমী ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনতে পারেননি বলেই লোকসানের হিসেব কষতে হচ্ছে এমন দাবি রংপুরের বড় বড় চামড়া ব্যবসায়ীদের।

চামড়াপট্টি এলাকার চামড়া ব্যবসায়ী মশিউর রহমান জানান, ‘সরকার লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দিয়েছেন। আমরা ব্যবসায়ীরা ঈদের দিন কাঁচা চামড়া ক্রয় করি। এগুলোকে লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করতে হয়। এ কারণে অনেকেই বেশি দামে চামড়া কিনে লোকসানে পড়ছে। বাজারে দাম ওঠা-নামা করলে এমনটাই হয় বলেও জানান তিনি।