পটুয়াখালী হাজী এন্ড সন্স’র সিগারেট চুরি নিয়ে ধুম্রজাল

  • ডিস্টিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালী হাজী এন্ড সন্স’র সিগারেট চুরি নিয়ে ধুম্রজাল

পটুয়াখালী হাজী এন্ড সন্স’র সিগারেট চুরি নিয়ে ধুম্রজাল

পটুয়াখালীতে হাজী এন্ড সন্স এর সিগারেট চুরি নিয়ে ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। পারিবারিক বিরোধ নাকি জুন মাসে বাজেটে সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধিতে মজুত করা এ নিয়ে শহরে জুড়ে চলেছে নানান জল্পনা-কল্পনা। সিগারেট চুরির বিষয়ে হাজী এন্ড সন্স এর পক্ষ থেকে মামলা করায় পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করছে।

ব্রিটিশ আমরিকান টোবাকো’র পটুয়াখালীর জেলার ডিলার হিসেবে মেসার্স হাজী এন্ড সন্স দীর্ঘ বছর যাবত ব্যবসা পরিচালনা করে আসছে। তবে সম্প্রতিক সময়ে হাজী এন্ড সন্স এর শেয়ারদের মধ্যে পারিবারিক বিরোধ তৈরি হয়।

বিজ্ঞাপন

এরই মধ্যে গত ৭ জুন হাজী এন্ড সন্স এর পরিচালক আলহাজ্ব আ. জব্বার মৃধা বাদী হয়ে সদর থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। যাতে হাজী এন্ড সন্স এর শেয়ার হোল্ডার এবং জব্বার মৃধার ভাইর ছেলে যুবলীগ নেতা মো. রফিকুল ইসলাম খোকন মৃধাকে প্রধান করে মোট সাত জনের বিরুদ্ধে চুরির অভিযোগ করা হয়।

এই মামলায় আ. জব্বার মৃধা অভিযোগ করেন, গত ৪ জুন দুপুর ১টা থেকে ৬ জুন সকাল ৭টার মধ্যে পটুয়াখালীর পৌরসভার পুরান বাজারস্থ হাজী এন্ড সন্স এর গোডাউনের দরজার সামনে সুড়ঙ্গ করে এবং গেট ও কলাপসিবল গেট কেটে আসামিরা বেনসন সুইচ ২৪০ শলাকা মূল্য ২৮৬৪ টাকা, বেনসন ফুল ফেলেভার মূল্য ৩ লাখ আশি হাজার শলাকা মূল্য ৪৫ লাখ ৩৫ হাজার ৩৩৮ টাকা। গোল্ডলিফ ফুল ফেলেভার ৮০০০০ শলাকা মূল্য ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৮০ টাকা।  সর্বমোট ৫২ লাখ ৭২ হাজার ২৮২ টাকার সিগারেট চুরি করে নিয়ে যায়। 

বিজ্ঞাপন

মামলার আরও দাবী করে, ‘স্থলের সুড়ঙ্গ করা স্থান পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় অফিস সংলগ্ন দক্ষিণ পাশের টিন সেট বিল্ডিং এর মালিক জনৈক ফারুক জোমাদ্দার, পিতা মৃত আব্দুল হক জোমাদ্দর। কিন্তু বর্তমানে উক্ত বিল্ডিং ১নং আসামি মো. রফিকুল ইসলাম খোকন মৃধার তত্ত্বাবধানে রয়েছে এবং যা তালা মারা রয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করেন।

এদিকে হঠাৎ করে জুন মাসের শুরুর দিকে শহরের ব্যস্ততম একটি এলাকায় কিভাবে পঞ্চাশ লাখ টাকার সিগারেট চুরি হতে পারে তা নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে নানান প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।

অপরদিকে সিগারেট চুরির ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ এ বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নামে। এরই ধারাবাকিতায় গত ১৬ জুন দুপুরে মামলার বাদী আলহাজ্ব আঃ জববার মৃধার বাড়িতে বিপুল পরিমান সিগারেট মজুত করা অবস্থায় পাওয়া যায়। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ ওই সিগারেটের সমূহ সিজার লিস্টে অন্তভুক্ত করে এবং এর স্বপক্ষে হাজী এন্ড সন্স ও ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর পক।স থেকে প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র দাখিলের কথা বলে।

এ বিষয়ে মামলার বাদী ও হাজী এন্ড সন্স এর পরিচালক আলহাজ্ব আ. জব্বার মৃধার কাছে জানতে চইলে তিনি বলেন, আমরা মামালা করেছি, পুলিশ এ ঘটনায় তদন্ত করছে। তবে বাড়িতে সিগারেট রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘করোনার কারণে এক সাথে বেশি সিগারেট সরবরাহ করায় মালিক পক্ষের সবাইকে অবহিত করেই আমার বাড়িতে সিগারেট রাখা হয়েছে।’

প্রতি বছর জুনে বাজেটে যেহেতু সিগারেটের মূল্য বৃদ্ধি পায় সে জন্য এই সিগারেট মজুত করা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে জব্বার মৃধা বলেন, এসব সিগারেটর স্টকের অন্তর্ভুক্ত, এখানে মজুত করার কোন বিষয়ে নেই।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার আসামি এবং হাজী এন্ড সন্স এর শেয়ার হোল্ডার মোঃ রফিকুল ইসলাম খোকন মৃধা জানান, ‘পারিবারিক বিরাধকে পুঁজি করে এবং তাকে সমাজিক ভাবে হেও প্রতিপন্ন করতেই সিগারেট চুরির অভিযোগ করা হয়েছে। মূলত হাজী এন্ড সন্স এর পরিচারক জুনে সিগারেট মজুত করে বাড়তি দামে বিক্রি করতেই ধরনের নাটক সাজিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন খোকন মৃধা।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনাচার্জ আক্তার মোর্সেদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘তদন্ত সম্পন্ন হলে পূরো বিষয়টি সম্পর্কে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হবে।’