নির্বাচনী রাজনীতি, শান্তিপূর্ণ সমাধান ও নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজ



ড. মাহফুজ পারভেজ
নির্বাচনী রাজনীতি, শান্তিপূর্ণ সমাধান ও নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজ

নির্বাচনী রাজনীতি, শান্তিপূর্ণ সমাধান ও নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজ

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের রাজনীতি, বিশেষত আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে যে চাপা-উত্তেজনা ও সংঘাত-বান্ধব পরিস্থিতি চলছে, তার একটি অত্যন্ত হতাশাজনক বৈশিষ্ট্য হলো নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা রাজনৈতিক অনুমোদন বা দলীয় পরিচয়ের বাইরে বেরিয়ে শান্তি ও সমঝোতার জন্য কাজ করতে পারছেন না। তাত্ত্বিকভাবে যতই বলা হোক, শান্তিপূর্ণ সমাধানে নাগরিক সমাজকে নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে, বাস্তবে তা অধরা। প্রায়-সবাই কথা বলছেন বিশেষ লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও দৃষ্টিভঙ্গি সামনে রেখে। এতে দলীয় রাজনীতি প্রাধান্য পেলেও 'সামগ্রিক জনস্বার্থ' উপযুক্ত গুরুত্ব পাচ্ছে না। ফলে সংঘাতের আশঙ্কার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে নাগরিক সমাজ, সিভিল সোসাইটি, এলিট ও বুদ্ধিজীবীদের মেরুকরণ, যা প্রকারান্তরে জনগণের মধ্যে বিভেদ, দূরত্ব ও উত্তেজনা বৃদ্ধিতে অনুঘটকের কাজ করছে।

বিদ্যমান এহেন পরিস্থিতির কারণে বর্তমানে বাংলাদেশে 'বাফার জোন' বা 'নিরপেক্ষ পরিসর' বলে কিছুই অবশিষ্ট নেই। ব্যক্তি, বক্তা, গোষ্ঠী ও পত্রিকার নাম শুনলেই আমজনতা চোখ বন্ধ করে বলে দিতে পারেন 'তারা কোন পক্ষের'। পক্ষপাতে আকীর্ণ পক্ষগুলোর কাছ থেকে নিরপেক্ষ বক্তব্য, সামগ্রিক বিবেচনা, প্রকৃত জনস্বার্থ সংশ্লিষ্ট আচরণ প্রত্যাশা করা যায় না। তাই বাংলাদেশের রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় আশার আলো দেখাতে কেউই পারছেন না, এটাই রূঢ় বাস্তবতা।

বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যেমন তাদের পক্ষে নাগরিক সমাজ ও বুদ্ধিজীবীদের একত্রিত করেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও উন্নয়ন সহযোগীগণও একই কাজ করছে। ফলে বাংলাদেশের নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলো তাদের সংকীর্ণ দলীয় পরিচয়ের ও গোষ্ঠীগত স্বার্থের উর্ধ্বে উঠে সংঘাতের আশঙ্কায় সমস্যায় পড়া জনগণকে উত্তরণের পথ দেখাতে পারছে না। এমন ব্যক্তিও অনুপস্থিত, যিনি শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রদানের জন্য সক্রিয় হতে পারেন, সকলের প্রতি সহমর্মিতার হাত বাড়াতে পারেন এবং শান্তি ও স্থিতি বেগবান করতে সাহায্য করতে পারবেন।

এটাই সবিশেষ দুর্ভাগ্যের ব্যাপার, বাস্তবে এমন গ্রহণযোগ্য কাউকে দেখা যাচ্ছে না। বরং এই নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলোই রাজনৈতিক হিংসা ছড়াতে, বিদ্বেষের বিষ ছড়াতে সাহায্য করছে। এর সাথে রয়েছে রাজনৈতিক ভণ্ডামি ও নির্লজ্জ দালালি। তাই সামনে মুক্তির কোনো রাস্তা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। ফলে সুপ্ত সংঘাতের শেষ কোথায়, কেউ জানে না।

ইতিহাস ঘাঁটলে দেখা যাচ্ছে, কেবলমাত্র নিরপেক্ষ নেতৃত্ব এবং নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা থেকেই সম্পর্কের শীতল বরফ গলে জল হতে পারে। তবে বর্তমানে যা বাস্তব পরিস্থিতি, তাতে নেতৃত্বের মধ্যে পারস্পরিক বিশ্বস্ততার লেশমাত্র নেই। এজন্যই একটি বিকল্পের প্রয়োজন আছে। নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজ হতে পারতো যথার্থ বিকল্প। তাদের উদ্যোগে ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব ছিল। শান্তি ও সমঝোতার সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু সেই আশাও ক্রমে ক্রমে ফিকে হয়ে আসছে।

এদিকে, আসছে নভেম্বরে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল আর জানুয়ারিতে ভোট, এমন জানা যাচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পর্কে। একই সাথে বিরাজমান রয়েছে নির্বাচন ঘিরে অচলায়তন। দলগুলোর মধ্যে যেমন সমঝোতা ও ঐকমত্য নেই, তেমনি নাগরিক পরিসর তথা সুশীল সমাজের কণ্ঠও উচ্চকিত নয়। বিভাজিত নাগরিক সমাজ জনগণকে সংগঠিত করে তাদের কথা বলার সুযোগ করে দিতে এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতার মাধ্যমে গণতন্ত্রের পথকে কণ্টকমুক্ত করতেও পারছে না।

বাংলাদেশের মতো সম্ভাবনাময় দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র যদি না থাকে, সংসদ যদি বেশির ভাগ মানুষের প্রতিনিধিত্বশীল না হয়– তাহলে জনস্বার্থ ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা যাবে না। এজন্যই সকল বিরোধের মীমাংসা করে দেশে সুষ্ঠু নির্বাচনী প্রক্রিয়া ও গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকতে হবে। জনগণকে পছন্দ করতে দিতে হবে তাদের নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার। শুধু সংবিধান নয়, জাতির স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে হলে বাংলাদেশকে কোনো অবস্থাতেই দীর্ঘস্থায়ী অচলাবস্থার মধ্যে ঠেলে দেওয়া যায় না। ক্ষুদ্র দলীয় রাজনৈতিক বিভেদের পঙ্কে সমগ্র দেশ ও জাতিকে নিমজ্জিত করাও যায় না।

গণতান্ত্রিক ও ন্যায্যতাভিত্তিক সমাজের জনবান্ধব-অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের জন্য নেতৃত্বে যারা আছেন বা আসতে চান, তাদের সবার আগে দেশের স্বার্থ দেখতে হবে এবং জনগণের কথা শুনতে হবে। একই সাথে গণতান্ত্রিক ব্যর্থতা তথা জনপ্রতিনিধিত্বমূলক সরকার না থাকার বিপদ থেকে সতর্ক থাকতে হবে এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজব্যবস্থা বিনির্মাণের পথকেও মসৃণ রাখতে হবে।

এসব কাজে গাফিলতি হলে রাজনৈতিক সঙ্কট আরও ঘণীভূত হওয়ার পাশাপাশি উন্নয়নে ব্যত্যয় ঘটবে, দারিদ্র বৃদ্ধি পাবে, মানুষের অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবন আরও ভঙ্গুর দশায় নিপতিত হবে। হত-দরিদ্র মানুষকে সুরক্ষা দেওয়াও তখন অসম্ভব হবে। বাড়বে ঋণের বোঝা, যা থেকে নতুন নতুন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংকটও তৈরি হবে। বলা বাহুল্য, নির্বাচনের অনেক আগেই বাজার ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। সমাজ ও বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি বেড়েছে। এসবই অশনিসংকেত বিশেষ।

অতএব, সামাজিক স্থিতি ও সুষম উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্রের ধারাবাহিক উত্তরণ দরকার। আর সেটা সম্ভব হবে নির্বাচন ব্যবস্থায় সমঝোতা, জবাবদিহিতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মধ্য দিয়ে। দেশের বিবদমান নির্বাচনী রাজনীতিকে তাই শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে সমঝোতায় আসতে হবে। এবং রাজনৈতিক দ্বৈরথ থামিয়ে গণতন্ত্র ও নির্বাচনের অনুকূল পরিস্থিতি সৃজনে নিরপেক্ষ নাগরিক সমাজকে শির উঁচিয়ে দাঁড়াতেই হবে।

ড. মাহফুজ পারভেজ, প্রফেসর, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়; অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম; নির্বাহী পরিচালক, চট্টগ্রাম সেন্টার ফর রিজিওনাল স্টাডিজ, বাংলাদেশ (সিসিআরএসবিডি)।

   

তালাবদ্ধ বিএনপি কার্যালয় থেকে ইসির চিঠি সরালো কে?



রাজু আহম্মেদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪.কম

ছবি: বার্তা ২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

 

সরকার পতনের এক দফা দাবিতে গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশকে ঘিরে সংঘর্ষের পর থেকেই নেতাকর্মী শূন্য হয়ে পড়ে বিএনপি কার্যালয়। সে সময় একে একে গ্রেফতার হতে থাকে দলের শীর্ষ নেতারা, দলীয় কার্যক্রম থেকে ছিটকে গিয়ে নেতাকর্মী শূন্য হয়ে পড়ে দলটির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়। বিএনপির সেই সংকটপূর্ণ সময়ে সংলাপের চিঠি পাঠানো হয় ইসি পক্ষ থেকে।

গত (২ নভেম্বর) ইসির চিঠি নিয়ে আসা ব্যক্তি বিএনপির গুলশান কার্যালয় ঘুরে কাউকে না পেয়ে শেষে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তালাবদ্ধ গেটের ফাঁকা অংশ দিয়ে রেখে যান সংলাপের চিঠি।

এরপর দীর্ঘদিন বন্দি দশায় ধুলোবালিতে পড়ে থাকলেও কদিন থেকেই সেখানে দেখা যাচ্ছে না বিএনপিকে দেওয়া ইসির সংলাপের সেই চিঠিটি। বর্তমানে চিঠির জায়গায় হঠাৎ দেখা যাচ্ছে বেশ কিছু দৈনিক পত্রিকা।

প্রশ্ন উঠেছে প্রায় একমাস ভয়ে বিএনপি নেতা কর্মীরা তো যাচ্ছেনা সেখানে। তাহলে চিঠি সরালো কে, কেউ না সরালো হঠাৎ ইসির চিঠি গেলো কোথায়? নাকি রাতের আধারে বা চুপি সারে বিএনপি নেতাদের কেউ নিয়ে গেছে সেই চিঠি?

এ বিষয়ে খোঁজ নিতে বেশ কিছু বিএনপি নেতা কর্মীর সাথে কথা বলেছে বার্তা২৪.কমের প্রতিবেদক।

পুলিশ নিজেই চিঠিটি সরিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপি নেতারা বলছেন, ইসির চিঠির কোন ভিত্তি আমাদের কাছে নেই৷ এটা আমাদের সাথে তামাশা করা হয়েছে। আর চিঠি আমাদের প্রয়োজন হলে সংলাপের তারিখের আগেই আমরা নিয়ে আসতে পারতাম। যেহেতু পুলিশ সেখানে ঘাটি গেড়েছে তারা ছাড়া এটা অন্য কেউ সরানোর প্রশ্নেই আসেনা। কারণ পুলিশ সেখানে কাউকে ঘেঁষতে দিচ্ছেনা। তাদের ভাষ্যমতে স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও নাকি বলছেন একি কথা।

এদিকে সমাবেশে সংঘর্ষের পর থেকেই কার্যালয়টিতে পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। শুরুর দিকে কার্যালয়ের আশপাশে ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি কাউকে। এর মধ্যে সেখান থেকে বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী গ্রেফতার হয়েছে। তবে পুলিশের এমন কড়া নিরাপত্তা থাকা অবস্থায় গেলো কোথায় সেই চিঠি?

এ বিষয়ে কথা হয় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মতিঝিল জোনের ডিসি হায়াতুল ইসলাম খানের সাথে। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিএনপির কেউ নিয়ে যেতে পারে। ইসির চিঠি, কে সরিয়েছে তা আমরা জানি না।

২৪ ঘণ্টা সেখানে পুলিশ থাকা সত্ত্বেও না জানার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির কার্যালয়ে আমাদের কোন হস্তক্ষেপ নেই। সেখানে যে কেউ আসতে পারে। তাদের কেউ সরাবে এ বিষয়ে আমরা তো কথা বলতে পারি না।

বিএনপি মর্যাদা দেয়নি ইসির আবেগের, তার পরিণতি ছিল চিঠির বিনা আদেশের কারাবন্দি জীবন, আর কারাবন্দি থাকাতেই অবস্থায় নিখোঁজ ইসির চিঠি। বিএনপি নেতাকর্মীরা জানেন না ইসির চিঠি গেলো কোথায়। জানেনা সেখানে ২৪ ঘণ্টা অবস্থান করা পুলিশ সদস্যরা। তাহলে কি গ্রামীণ ভাষায় বিএনপির বন্ধ কার্যালয় এখন মগের মল্লুক?

;

নির্বাচনের ট্রেন চলছে, কেউ থামাতে পারবে না: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নির্বাচনের ট্রেন চলছে। কারো বাধায় কোথাও আর থামবে না। গন্তব্যে পৌঁছানো পর্যন্ত এই ট্রেন চলবে। যত বাধাই দেওয়া হোক, কেউ এই ট্রেন থামাতে পারবে না, নির্বাচন হবে।

শুক্রবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক বিফ্রিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন নির্বাচন কমিশনে গিয়ে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কথা বলে এসেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, একটা দল না আসলেই অংশগ্রহণমূলক হবে না এই কথা কি তারা বলেছে? সামগ্রিকভাবে একটা ফ্রি-ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল ইলেকশনের কথা তারা বলেছে। ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশ নিয়েছে এই নির্বাচনে। প্রতি সিটে ৯ জন করে প্রার্থী। তাহলে অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে না এই কথা কে বলল? মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সময় আচরণবিধি লঙ্ঘন না করতে। আওয়ামী লীগ সে দায়িত্ব নিবে না। সেটার জন্য যদি নির্বাচন কমিশন কোন অ্যাকশন নেই সে ক্ষেত্রে আমরা কোন ব্যবস্থা নিবো না।

নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের আচরণবিধি শুরু হয়েছে। নির্বাচন কমিশন ব্যবস্থা নিতে পারে। এটা নিয়ে আমরা কোন আপত্তি করব না।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিজেই বলেছেন জিয়ার রাজনীতি থেকে বঙ্গবন্ধুর রাজনীতিতে সম্মানিত বোধ করছেন। তারও তো স্বাধীনতা আছে। তার যদি আওয়ামী লীগ করতে ভাল লাগে তার সে স্বাধীনতা আছে। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, হয়তো আগে ভুল করে থাকতে পারে। নিজেই স্বীকার করেছেন। ইলেকশনে অনেকগুলো কৌশলের ব্যাপার আছে। কৌশলগত সিদ্ধান্ত আমরা নিতেই পারি। এখানে কোন ভুল নেই। নির্বাচন কমিশনের কোন কোড কেউ এখানে লঙ্ঘন করেনি।

স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিরুদ্ধে দলগতভাবে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, অ্যাকশনের ব্যাপারটা ভিন্ন। আমাদের কৌশলগত দিক আছে। আমাদের নেত্রীর বক্তব্য যেটা উনি গণভবনে দিয়েছিলেন, আমাদের প্রার্থীদের উদ্দেশে। সেখানে আমরা ঢালাওভাবে সবাই ইলেকশন করব বিষয়টা এমন না। দলীয় শৃঙ্খলার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ১৭ তারিখের মধ্যে আমরা বিষয়টা নতুন করে দেখবো। অ্যাডজাস্টমেন্ট, অ্যাকুমুডেশন আমরা দলীয়ভাবে বিষয়টি দেখব।

এসময় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য শফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

;

যে কারণে বিএনপি ছাড়লেন শাহজাহান ওমর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কারামুক্তির পরদিনই অনেকটা নাটকীয়ভাবে বিএনপি থেকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ঝালকাঠি-১ আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান ওমর বীরউত্তম।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে নিজের আইন পেশার চেম্বারে সাংবাদিকদের সঙ্গে আপালকালে শাহজাহান ওমর বলেন, এই মুহূর্ত থেকে আমি আর ‘বিএনপি ম্যান’ নই।

হঠাৎ করে দল বদল করে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে শাহজাহান ওমর বলেন, আর কতবার নির্বাচনের বাইরে থাকব। এসময় তিনি বলেন, বিএনপির ২০১৪ সালের নির্বাচনে যাওয়া উচিত ছিল।

দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও বিএনপি যেন ভোটে আসে, সেজন্য কারাগারে দলের মহাসচি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ অন্য শীর্ষ নেতাদের বলেছেন বলে জানান তিনি। ওই সময় তারা ইতিবাচক মনোভাবও দেখিয়েছিলেন বলে দাবি শাহজাহান ওমরের।

বিএনপির ভোট বর্জনের নীতির সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করে দলটির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, আর কতবার আমরা নির্বাচনের বাইরে থাকব? বিএনপির দোষ-গুণ বিবেচনার সামর্থ্য আমার নাই। আমি মনে করি, বিএনপির ২০১৪ সালে নির্বাচনে যাওয়া উচিত ছিল। ২০১৮ সালে যাওয়া মিসটেক ছিল এবং এবার যাওয়া উচিত ছিল।

বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান ওমর বিএনপির টিকিটে ১৯৭৯, ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে ৫ বার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

জোট সরকারের আমলে তিনি আইন প্রতিমন্ত্রী ও ভূমি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। সম্প্রতি স্থায়ী কমিটির সদস্যপদ না পাওয়ায় এবং ঝালকাঠি জেলা বিএনপির নিয়ন্ত্রণ হারানোর কারণে তারেক রহমানের সঙ্গে তার দূরত্ব তৈরি হয়।

;

জোট আছে-থাকবে, আমি নৌকা নিয়েই নির্বাচন করব: নজিবুল বশর



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী

সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনের প্রার্থী তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান ও বর্তমান সংসদ সদস্য সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেছেন, জোটের সঙ্গে আসন সিদ্ধান্ত না হওয়ার কোন কারণই নাই, আমি জেনে শুনে কথা বলি, না জেনে কথা বলি না। জোট ছিল, জোট আছে, জোট থাকবে। তাছাড়া নৌকা নিয়ে আমিই নির্বাচন করবো এবং ১৪ দলীয় জোটের যারা শরিক তারা সবাই নৌকার প্রতিনিধি।

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয়ে মনোনয়নপত্র জমা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি বলেন, ফটিকছড়ি আসন জোটের আসন। আর জোট এখনো বহাল আছে। জোটের কয়েকটা দল ছাড়া সবাই নৌকা চাচ্ছে। এতোগুলো দলকে তো নৌকা দেওয়া সম্ভব না। নৌকার প্রার্থী এখনো কাউকে দেওয়া হয়নি, আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। নৌকার চিঠি আরেকটা পরে দেবে। সেই চিঠিতে আমরাই নির্বাচন করবো, ২০১৪ সালে করেছি, ১৮ সালে করেছি, ইনশাআল্লাহ ২৪ সালেও করবো।

তিনি আরও বলেন, ফটিকছড়ি আসনে আমার ভাইপোসহ যারা দাঁড়াচ্ছে, আমি আওয়ামী লীগের সনিকেও স্বাগত জানিয়েছি। নির্বাচনকে সামনে রেখে চিন্তা করলে হবে না। চিন্তা করতে হবে যে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট কি। নির্বাচনের পরে সবচেয়ে বড় যুদ্ধ ৷ বহির্বিশ্বসহ বড় যুদ্ধ আসবে। তখন সেই যুদ্ধ আওয়ামী লীগ কি একা মোকাবিলা করবে নাকি জোট নিয়ে করবে। এটি বুঝতে হবে, তখন জোট না থাকলে আওয়ামী লীগ একা হয়ে যাবে। সুতরাং বাস্তবতার নিরিখে জোট থাকবে।

সৈয়দ নজিবুশ বশর মাইজভান্ডারি ২০১৪ সাল থেকে জোট সমীকরণে চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে টানা দুবার নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। এবার আসনটিতে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য খাদিজাতুল আনোয়ার সনি। যদিও তিনি ১০১৮ সালে দলীয় মনোনয়ন পেলেও জোটের কাছে ছেড়ে দিতে হয় আসনটি। এবারও অপেক্ষা জোটের সিদ্ধান্তের। অতীত হিসেব পর্যালোচনা করলে এবারও আসনটি জোটের শরিক তরিকতের নজিবুল বশরকে ছেড়ে দিতে হতে পারে।

একদিকে মনোনয়ন জমার শেষ দিন বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) পর্যন্ত আসনটি দলীয় ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মোট ১৪ জন মনোনয়ন দাখিল করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা।

;