রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের ভারে বিধ্বস্ত বিএনপি: কাদের
রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের ভারে বিধ্বস্ত জনবিচ্ছিন্ন বিএনপি বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (১৩ মার্চ) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে বর্তমান সরকার জন-আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে রাষ্ট্র পরিচালনা করছে। দেশে কোনো গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক সংকট নেই এবং আগামী পাঁচ বছর পরে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ক্ষমতায়ন ও গণতন্ত্রকে সুদৃঢ় করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এখন জাতির সামনে এমন কোনো সংকট নেই, যার জন্য রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে সংলাপের কোনো আবশ্যকতা বা প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রধান লক্ষ্য হলো দেশবিরোধী অপশক্তির নানামুখী অপতৎপরতা ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত এবং প্রতিবন্ধকতাকে জয় করেই দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রাকে কাঙ্ক্ষিত অভীষ্টে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি নেতৃবৃন্দ অবিবেচনাপ্রসূত ও অযৌক্তিকভাবে মিডিয়ার সামনে সংলাপের মাধ্যমে আলাপ-আলোচনার বিষয়টি উত্থাপন করেছে। রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের ভারে বিধ্বস্ত জনবিচ্ছিন্ন বিএনপির এই আলোচনার আবদার অর্থহীন। কারণ তারা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক রীতি-নীতির তোয়াক্কা না করে ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডে মেতে উঠেছিল। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুসংহত রাখার লক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি এবং নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিএনপিকে আলোচনার জন্য আহ্বান করা হলেও তখন তারা সাড়া দেয়নি। বরং তারা নির্বাচন বানচালের জন্য সর্বাত্মক অপচেষ্টা চালিয়েছিল। আজ তারা কোনমুখে আলোচনার কথা বলে?
বিএনপি সবসময় প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের শর্তযুক্ত সংলাপের দাবি করে আসছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এমনকি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বেও এই দাবিতে তারা সরকার পতনের তথাকথিত এক-দফার আন্দোলনের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু দেশবাসী তাদের অযৌক্তিক দাবিতে কোনো সাড়া দেয়নি। আমরাও দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলে আসছি, শর্তযুক্ত কোনো আলোচনার সুযোগ নেই। দেশবাসী ভুলে যায়নি, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে আওয়ামী লীগ সভাপতি বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা আলাপ-আলোচনার জন্য বিএনপি নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ফোন করেছিলেন। সেই ফোনালাপে বেগম জিয়া বিদ্বেষপূর্ণ হিংসা আচরণ করেছিল। একইভাবে খালেদা জিয়ার পুত্র কোকোর মৃত্যুর পর বিএনপি নেত্রীর বাড়ির গেট থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক শিষ্ঠাচারকে চরমভাবে লঙ্ঘন করেছিল; পারস্পরিক আলাপ-আলোচনার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল। গণতন্ত্রের পথ পরিহার করে যারা আগুন সন্ত্রাসের মাধ্যমে নির্বিচারে মানুষ হত্যায় মেতে উঠেছিল তাদের সঙ্গে সংলাপ হতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সব সময়ই গণতন্ত্রের সুষ্ঠু বিকাশ এবং উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। গণতন্ত্রের পথকে আরও মসৃণ করার এবং গণতন্ত্রের অন্তর্নিহিত আদর্শ সুপ্রতিষ্ঠার জন্য আওয়ামী লীগ যে কারও মত প্রকাশের পথকে উন্মুক্ত রেখেছে। সেক্ষেত্রে গণতন্ত্র ও নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করতে আওয়ামী লীগ যেসকল সংস্কার করেছে তার স্বীকৃতি দিয়ে যে কেউ ভাবীকালের গণতন্ত্রের পথকে মসৃণ করার লক্ষ্যে যে কোনো প্রস্তাব রাখতে পারে। আওয়ামী লীগ শুধু একটি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়া নিয়ে নয়, বরং দেশের গণতন্ত্রকে একটি শক্তিশালী ভীতের উপর প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। আওয়ামী লীগ কখনো কোনো ষড়যন্ত্র বা চাপের মুখে জনস্বার্থকে জলাঞ্জলি দেয়নি কখনো কারও কাছে মাথা নত করেনি করবেও না। বাংলাদেশের অগ্রগতির ধারাকে সমুন্নত রাখতে আমরা বদ্ধপরিকর।