চট্টগ্রামে শনিবারের জনসভায় আন্দোলনের সূত্রপাত হবে: আমীর খসরু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে চট্টগ্রামে আগামী শনিবারের (৬ জুলাই) যে জনসভা, সেই জনসভা থেকে নির্বাচনের পরে আমরা যে আন্দোলনটা শুরু করছি, সে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) বিকেল পাঁচটায় নগরীর জিইসি কনভেনশন সেন্টারে শ্রমিকদলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ কর্মশালার সমাপনী ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন।

চট্টগ্রামের বিক্ষোভ ও সমাবেশের নতুন তারিখ ঘোষণা দিয়ে আমীর খসরু বলেন, আমাদের গত সোমবার (১ জুলাই) একটি জনসভা ছিল, বৃষ্টি এবং বন্যার কারণে সেটি আগামী শনিবার নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমি শ্রমিকদের অনুরোধ করব, এই সভাটা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এখানে দুইটা বিষয় আছে। একটি হচ্ছে- দেশনেত্রী গণতন্ত্রের মা’র মুক্তি, গণতন্ত্রী মায়ের মুক্তির সঙ্গে দেশের মানুষের অধিকার অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। এটাকে আলাদা করা যাবে না। এই দেশের মানুষের অধিকার এবং গণতন্ত্রের মায়ের মুক্তি এক সূত্রে গাঁথা।

দ্বিতীয়ত, চট্টগ্রামে শনিবারের যে জনসভা, সেটি থেকে নির্বাচনের পরে আমরা যে আন্দোলনটা শুরু করছি সে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে। যেভাবে আমরা বিভাগীয় জনসভার মাধ্যমে বিগত দিনের আন্দোলন শুরু করেছিলাম পলোগ্রাউন্ড মাঠ থেকে, সে সূত্রপাত আমরা করেছিলাম। ইনশাল্লাহ, আগামী শনিবার (৬ জুলাই) আবারও নতুনভাবে আন্দোলনের সূত্রপাত হবে চট্টগ্রামের এ জনসভা থেকে।

আমীর খসরু বলেন, একজন প্রশিক্ষিত পলিটিশিয়ানের সঙ্গে আরেকজন রাজনীতিবিদের পার্থক্য অনেক বড়। যারা ট্রেইন পলিটিশিয়ান, নিজেদেরকে সেভাবে গড়ে তুলেছে। তারা রাজনীতিতে যতটুকু দিতে পারবে, যতটুকু বুঝাতে পারবে, যতটুকু মানুষের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে ও সংযোগ সৃষ্টি করতে পারবে। একজন আন-ট্রেইন পলিটিশিয়ানের পক্ষে সেটা সম্ভব হয় না। শ্রমিকদের বেলায় এই বিষয়টি অত্যন্ত প্রযোজ্য। একজন প্রশিক্ষিত শ্রমিক নেতা যেটা তার নিজেদের এবং দেশের স্বার্থে, দলের স্বার্থে করতে পারবে। একজন আন-ট্রেইন নেতার পক্ষে সেটি করা সম্ভব না। এমন না যে, করতে পারবে না। পারবে, তবে সে তার কাজ করবে।

একজন প্রশিক্ষিত শ্রমিক নেতার চিন্তা-ধারাটা সেভাবে কাজ করে। সেজন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং আমি মনে করি যে উদ্যোগটা নেওয়া হয়েছে, এটা অব্যাহত রাখতে হবে। স্থায়ীভাবে এ ট্রেনিং যদি আমরা চালু করে রাখতে না পারি একসময় এটা আপনাদের মন থেকে মুছে যাবে। একইভাবে যারা রাজনীতি করে তাদেরও কিছু কিছু চর্চার দরকার। সেই চর্চা না থাকলে কিন্তু আপনি রাজনীতি করবেন, শ্রমিক নেতা হবেন। 

আমীর খসরু শ্রমিকদের অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, শ্রমিকের অবস্থান বাংলাদেশের কোথায় আছে? একটু বিবেচনা করা দরকার। বাংলাদেশের শ্রমিকের সঙ্গে মালিকের যে সম্পর্ক, শ্রমিকের সঙ্গে সরকারের যে সম্পর্ক, শ্রমিকের সঙ্গে রাজনীতির যে সম্পর্ক। এগুলো একটু বিবেচনায় আনা দরকার। আপনাদের ট্রেড ইউনিয়নের মধ্যে অনেকগুলো অনিবন্ধিত। এগুলো নিবন্ধন হচ্ছে না কেন প্রশ্নটা তুলতে হবে শ্রমিক নেতাদের। শ্রমিক নেতাদের রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক।  

তিনি বলেন, যেখানে যে শ্রমিক কাজ করবে তাদের রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। আমি যদি ভুল করে না থাকি, শ্রমিকদের আইনগত দিক থেকে রেজিস্ট্রেশন দিতে হবে। এটি একটা প্রক্রিয়া। শ্রমিকদের রেজিস্ট্রেশন খুব গুরুত্বপূর্ণ, এই প্রশ্নটা তোলা দরকার, রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা কোথায়?

তিনি আরও বলেন, যে সমস্ত শ্রমিক নেতা গার্মেন্টস সেক্টরের সত্যিকার অর্থে দাবি-দাওয়া নিয়ে কাজ করেছিল। তাদের অনেককে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। তাদের অনেকের বাড়ি-ঘরে হামলা করা হয়েছে। তাদের ওপর আক্রমণ চালানো হয়েছে এবং অনেকে যারা সেই নেতৃত্বে আছেন তারা সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গার্মেন্টস শ্রমিকদের যে পাওনা সেই পাওনার বিষয়ে কোন আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে আমরা কিন্তু বলেছিলাম। ২৫ হাজার টাকা গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন দেওয়ার জন্য। শ্রমিক দলের পক্ষ থেকেও এরকম একটি দাবি-দাওয়া দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন সাড়ে ১২ হাজার টাকা, ২৫ হাজারের অর্ধেক। কিন্তু গার্মেন্ট সেক্টরের কেউ এই দাবি আদায় করতে পারছে না। 

খসরু আরও বলেন, অথচ একটি দেশের প্রোডাকশনের যে মূল বিষয়গুলো রয়েছে তার মধ্যে শ্রমিক হচ্ছে অন্যতম। এখানে জমি আছে, মূলধন আছে কিন্তু শ্রমিক ছাড়া যে বিষয়টা আছে সেটি অসম্পূর্ণ থাকবে। শ্রমিকের কল্যাণ যত কম হবে উৎপাদন ব্যবস্থা তত বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুতরাং উৎপাদন ব্যবস্থাকে নিয়ে আমরা যদি একটি প্রোডাক্টিভ দেশ গড়তে চাই, জিয়াউর রহমানের যে মূল থিমটা ছিল, “উন্নয়নের রাজনীতির সাথে উৎপাদনের রাজনীতি, উৎপাদন ব্যতীত কোন দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।” এই দুটো তার স্লোগান। আমাদেরকে এ অবস্থা থেকে যদি মুক্ত পেতে হয়। তাহলে আমরা আজকে যে আন্দোলনে নেমেছি এই আন্দোলনে এ আন্দোলনে অন্য সকলের সাথে শ্রমিকের স্বার্থ গভীরভাবে জড়িত। 

আমীর খসরু বিএনপির ভিশনের কথা উল্লেখ করে বলেন, আপনারা জানেন বিএনপির ভিশন-২০৩০ যেটা আছে, স্পষ্টভাবে আমরা সেখানে শ্রমিকের স্বার্থগুলো তুলে ধরেছি। আমরা যে ৩১ দফা করেছি, এই ৩১ দফা বিএনপি একা করে নাই। সবার সঙ্গে আলোচনা করে করেছি। সেখানে শ্রমিকের দাবিগুলো পরিষ্কারভাবেই বলা আছে। বাংলাদেশের সব মানুষের তাদের রাজনৈতিক অধিকার, সাংবিধানিক অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার সুনিশ্চিত করার জন্য যে মৌলিক সংস্কারগুলোর প্রয়োজন আছে। সেই ৩১ দফার মধ্যে প্রত্যেকটি মৌলিক সংস্কারের জন্য বলা হয়েছে। এবং শোকের বিষয় হচ্ছে এটা বিএনপির একার কোন দাবি নয়। এটা সমস্ত বিরোধী দল অর্থাৎ বামপন্থী, ডানপন্থী, মধ্যমপন্থী সবাই কিন্তু একমত হয়ে এই ৩১ দফা প্রণয়ন হয়েছে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান বলেন, বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে শ্রমিক সমাজ আজ অবহেলিত। শ্রমিকদের দুবেলা খাওয়ার সুযোগ নেই। আজকে শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও বাসস্থান নেই। শ্রমিকদের বিষয়ে সরকারের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। অথচ শ্রমিকদের কারণে বাংলাদেশ টিকে আছে। সভ্যতা বিনির্মাণের কারিগর হচ্ছে শ্রমিক শ্রেণির মানুষেরা। ৯০ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে শ্রমিক সমাজের ভূমিকা আন্দোলনকে সফল করেছিল। বর্তমান ফ্যাসিস্ট ডামি সরকারের বিরুদ্ধে শ্রমিকদেরকে কঠিন আন্দোলনে শরিক হতে হবে।

বিভাগীয় শ্রমিকদলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপত্বিতে সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় সমাপনী অধিবেশনে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চেয়ারপার্সনের বিশেষ সহকারী এড শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন, মহানগর বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির নবনির্বাচিত সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ শ্রম সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান ও মামুন মোল্লা।

এর আগে সকাল সাড়ে নয়টা থেকে শুরু হয়ে দিনব্যাপী এই কর্মশালার উদ্বোধন করেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান। বিভাগীয় শ্রমিকদলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এড. শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন।

দ্বিতীয় পর্বে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয় দুপুর বারটায়। কেন্দ্রীয় শ্রমিকদলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে প্রধান আলোচক ছিলেন চেয়ারপার্রসনের উপদেষ্টা এড শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস।

চট্টগ্রাম মহানগর আ.লীগের সম্মেলন ১৮ সেপ্টেম্বর



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভা/ছবি: বার্তা২৪.কম

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভা/ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

'আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। ২৫ জুলাইয়ের মধ্যেই ইউনিট আওয়ামী লীগের অসমাপ্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত করতেই হবে এবং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে থানা আওয়ামী লীগের সম্মেলনগুলো সম্পন্ন করতে হবে। সম্মেলন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি ও উদ্যোগ গ্রহণের জন্য থানা ভিত্তিক দায়িত্বপ্রাপ্ত মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তারা যদি সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে অপারক ও ব্যর্থ হন তাহলে এই কমিটিগুলো বাতিল হিসেবে বিবেচিত হবে।'

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই ঘোষণা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা ও জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী সারা দেশে তৃণমূল স্তরে নেতৃত্ব ঢেলে সাজানোর জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো নেতা যদি ব্যর্থ হন, তার যোগ্যতা ও দক্ষতা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, নেতৃত্ব যাচাই বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যোগ্যতা, দক্ষতা, ত্যাগ-তিতিক্ষা ও দলীয় আদর্শের প্রতি আনুগত্যের বিষয়সহ সমাজে গ্রহণযোগ্যতার বিষয়টিকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে নেতৃত্ব ও পদ-পদবীতে কোনো অবাঞ্চিত ও জনগণের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ কোনো ব্যক্তি যাতে আসীন হতে না পারে, সেদিকেও সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় ঘটলে দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের দায়ী হতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ আন্দোলন-সংগ্রামে এবং দল ও জাতির সংকট উত্তরণে সবচেয়ে বেশি ফলপ্রসু ও কার্যকর অবদান রেখেছে। মহানগর আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটি কেন্দ্রের নিদের্শনা অনুযায়ী সাংগঠনিক কার্যক্রম ও বিষয়ভিত্তিক ইস্যুতে সবসময় রাজপথে ছিল এবং বর্তমান নেতৃত্ব অবশ্যই কর্মীবান্ধব হিসেবে সকলের আস্থা অর্জন করেছে। এই আস্থা ও বিশ্বাসকে অবশ্যই ধরে রাখতে হবে।

চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন বলেন, কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন মহানগর আওয়ামী লীগ ও এর আওতাধীন থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে যে নির্ধারিত তারিখ ও সময়সূচি করে দিয়েছেন তার জন্য তাকে ধন্যবাদ। নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী মহানগর আওয়ামী লীগসহ থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিট স্তরে সম্মেলন অনুষ্ঠানের জন্য দলের সকল স্তরের নেতা-কর্মীরা মুখিয়ে আছেন। এসকল সম্মেলনের মাধ্যমেই দক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য সকলস্তরের নেতাকর্মীকে আন্তরিকভাবে কাজ করে যেতে হবে। এই কার্য-পরিধি পরিচালনার ক্ষেত্রে অবশ্যই শতভাগ সাংগঠনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে হবে এবং কোনো ধরনের দলীয় আদর্শ ও নীতি-নৈতিকতা বিরোধী আচরণকে কিছুতেই প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

আ.জ.ম. নাছির আরও বলেন, আমাদের মধ্যে অবশ্যই নেতৃত্ব ও পদ-পদবীর জন্য প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। আওয়ামী লীগের মতো একটি বিশাল সংগঠনে এই প্রতিযোগিতা থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার মত কোনো ঘটনা বা আচরণ যাতে না হয় সেদিকেও সকলকে লক্ষ্য রাখতে হবে এবং সর্বোপরি কোনোভাবেই যাতে বিভেদ ও অনৈক্যের হানাহানি না ঘটে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব নঈম উদ্দিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, আলতাব হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বদিউল আলম, উপদেষ্টা এ.কে.এম বেলায়েত হোসেন, আলহাজ্ব সফর আলী, শেখ মাহমুদ ইসহাক, কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম এম.পি, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ, শফিক আদনান, সম্পাদনা মণ্ডলীর সদস্য সৈয়দ হাসান মাহমুদ সমশের, চন্দন ধর, মশিউর রহমান চৌধুরী, আহমেদুর রহমান সিদ্দিকী, হাজী মোহাম্মদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মানষ রক্ষিত, জুবাইরা নার্গিস খান, দিদারুল আলম চৌধুরী, মাহাবুবুল হক মিয়া, আবু তাহের, নির্বাহী সদস্য আবুল মুনসুর, নুরুল আবছার মিয়া, সৈয়দ আমিনুল হক, আলহাজ্ব পেয়ার মোহাম্মদ, আলহাজ্ব দোস্ত মোহাম্মদ, গাজী শফিউল আজিম, কামরুল হাসান বুলু, বখতেয়ার উদ্দিন খান, গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী, সাইফুদ্দিন খালেদ বাহার, নজরুল ইসলাম বাহাদুর, আহমদ ইলিয়াস, ইঞ্জিনিয়ার বিজয় কিষান চৌধুরী, জাফর আলম চৌধুরী, মোহাব্বত আলী খান, আবদুল লতিফ টিপু, নেছার উদ্দিন মঞ্জু, মোহাম্মদ জাবেদ, হাজী বেলাল আহমদ, মোরশেদ আকতার চৌধুরী প্রমুখ।

;

সরকার প্রধানের নির্দেশেই বাচ্চুর উপর হামলা করা হয়েছে: রিজভী



md.nazrul
রুহুল কবির রিজভী/ছবি: সংগৃহীত

রুহুল কবির রিজভী/ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুর উপর হামলার প্রতিবাদে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকার প্রধানের নির্দেশেই এই বর্বরোচিত আক্রমণটা করা হয়েছে। কারণ বিএনপি নেতাদের রক্ত দেখলেই সরকার প্রধান আনন্দিত এবং খুশি হন। এই কারণেই একটি দোয়ার অনুষ্ঠান এবং বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে বর্বরোচিত হামলা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলািই) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে বর্বর হামলায় গুরুতর আহত নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চুকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, একজন বর্ষীয়ান ও অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ। যাকে গোটা উত্তরবঙ্গের মানুষ সজ্জন হিসেবেই চেনেন। জেলার একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা। এমনকি জেলার তিনি প্রধান নেতা। তার গায়ে আদিম বন্য হিংস্রতায় এভাবে আক্রমণ করে তার হাত, পা, শরীর ক্ষতবিক্ষত করেছে। আজকে তাকে মৃত্যুমুখে ঠেলে দিয়ে কী আনন্দ পেলেন সেখানকার আওয়ামী লীগের এবং এমপি শিমুল সাহেব?

বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে গত বুধবার কেন্দ্রঘোষিত নাটোর জেলা বিএনপির সমাবেশে দুষ্কৃতিকারীদের বর্বর হামলায় গুরুতর জখম হন নাটোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম বাচ্চু। তার হাতের কব্জিসহ বিভিন্ন অঙ্গ ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। পরে তাকে বুধবার রাতেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীতে জাতীয় বার্ণ এন্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

;

মিথ্যাচার-অপপ্রচার বিএনপির রাজনৈতিক হাতিয়ার: কাদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ছবি: বার্তা২৪.কম

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার বিএনপির একমাত্র রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন।

বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিবৃতিকে মিথ্যা ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উল্লেখ করে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপির মিথ্যাচার ও অপপ্রচার জনগণের সামনে প্রকাশিত হওয়ায় বিএনপি বার বার জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়েও তারা মিথ্যাচার করছে। খালেদা জিয়া চিকিৎসাগ্রহণ শেষে বাসায় ফিরে গেছেন।

তিনি বলেন, বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তি কোনো রাজনৈতিক বিষয় না। এটা আইনগত বিষয়। আইনগত বিষয়ে বিএনপি আইনি প্রক্রিয়ায় মোকাবিলা না করে বিষয়টিকে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর অপচেষ্টা করছে। বিগত কয়েক বছর ধরে বিএনপি খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন করছে। কিন্তু সেই আন্দোলনে জনগণের কোনো সম্পৃক্ততা নেই।

সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ইস্যুকে প্রাধান্য না দিয়ে একটি অরাজনৈতিক বিষয়কে রাজনৈতিক ইস্যু করার অপচেষ্টা করছে। আর বিএনপি যখনই তাদের তথাকথিত আন্দোলন নিয়ে মাঠে নামে তখন তারা তাদের সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীকে সক্রিয় করে। বিএনপি আন্দোলনের নামে সন্ত্রাসী ও ক্যাডারবাহিনীকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অপচেষ্টা করে। আর এ সব সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বিএনপি নেতৃবৃন্দ মিথ্যাচার-অপপ্রচারের মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ায়।

আওয়ামী লীগ কখনো অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক উপায়ে ক্ষমতায় যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবসময় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। গত ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিএনপি ও তার দোসররা সর্বদা তৎপর থেকেছে। এটা বিএনপির জন্মগত রাজনৈতিক লিগ্যাসি। কারণ অবৈধ ও অসাংবিধানিক পন্থায় রাষ্ট্রক্ষমতা দখলকারী সামরিক স্বৈরাচারের হাতে প্রতিষ্ঠিত দল কখনো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে পারে না।

ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি যদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় আন্দোলন করতে সক্ষম হতো বা তাদের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে পারতো তাহলে তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণের সৎ সাহস দেখাতে পারতো। সেটা না থাকার কারণে বরাবরই বিএনপি সন্ত্রাস ও সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, যারা গণতান্ত্রিক পন্থার ব্যত্যয় ঘটাতে সন্ত্রাস-সহিংসতাকে উস্কে দেওয়ার পাঁয়তারা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, বিএনপি কখনোই জনগণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হয়ে উঠতে পারেনি। তাদের অবস্থান সব সময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিপরীত মেরুতে। বিএনপি ও তাদের দোসররা তাদের সেই আদর্শগত অবস্থান পরিবর্তন না করায় আমাদের গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে বিরাজমান সংকটের সমাধান দুরূহ।

এই সংকট মোকাবিলায় মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও গণতান্ত্রিক চেতনায় বিশ্বাসী সবাইকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান সেতুমন্ত্রী।

;

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি নিয়ে কৌশলী আওয়ামী লীগ!



রুহুল আমিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় প্রতীক

ছবি: সংগৃহীত, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দলীয় প্রতীক

  • Font increase
  • Font Decrease

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রায় ৬ মাস পর আবারও রাজপথ দখলে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

বিএনপি তার চেয়ারপারসনের মুক্তি ও সরকারের দুর্নীতিকে সামনে রেখে সমাবেশের ডাক দিচ্ছে। বিপরীতে আওয়ামী লীগ বলছে, ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী অনুষ্ঠান করবে তারাও।

দুই প্রধান বিরোধীদলের কর্মসূচির উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও মিলে যাচ্ছে দিন, তারিখ ও সময়। তবে এনিয়ে কৌশলী আওয়ামী লীগ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির অপবাদ ঘোচাতে তাই বছরব্যাপী প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছে দলটি।

দলটির নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপিকে শূন্য রাজপথ ছেড়ে দিতে নারাজ হাইকমান্ড। সে কারণে বিএনপির সরকারবিরোধী কর্মসূচিকে চ্যালেঞ্জ করে রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগও। তবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির ‘তকমা’ যেন না লাগে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকবে এবার।

পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির বিষয়টি মানতে নারাজ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরও। আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মসূচিকে অনেক ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় পাল্টাপাল্টি উল্লেখ করায় এর কড়া সমালোচনাও করেন তিনি।

২৯ জুন (শনিবার) কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় সাংবাদিকদের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমরা বলেছিলাম বছরব্যাপী উদযাপন করবো। সেখানে খবর হয়, আমরা নাকি পাল্টাপাল্টি করছি! গতকাল আমরা সাইকেল র‌্যালি করেছি; বিএনপির কি কিছু ছিল! তাহলে কেন এই অপবাদ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দিচ্ছেন'!

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ছবি- সংগৃহীত


এসময় তিনি অগ্রিম সমাবেশেরও ঘোষণা দিয়ে রাখেন। ওবায়দুল কাদের বলেন বলেন, ‘আমরা সারাবছর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করবো। আমাদের কেন্দ্র থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত এই কর্মসূচি উদযাপন করা হবে। আগস্ট মাসের পরে জেলা পর্যায়ে সমাবেশ হবে। সে সমাবেশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বক্তব্য রাখবেন’।

এর আগে, সর্বশেষ চলতি বছরের মহান মে দিবসে রাজধানীতে পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করে দুই দল। ওইদিন বিএনপি তার সহযোগী সংগঠন জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের ব্যানারে সমাবেশ করে। অপরদিকে, আওয়ামী লীগও তার সহযোগী সংগঠন জাতীয় শ্রমিক লীগের ব্যানারে সমাবেশ করে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ২৭ জানুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা মিছিল করে। এরপর এটাই ছিল দলটির বড় কোনো কর্মসূচি।

এরও আগে ২০২২ সালের জুলাই মাস থেকে বিএনপি তার মিত্রদের সঙ্গে যুগপৎভাবে সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করে। তখন থেকে সরকারি দল আওয়ামী লীগও রাজপথ দখলে রাখার ঘোষণা দিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়ে আসছিল। সে সময় বিএনপি ও তার মিত্রদের সরকার পতনের ‘এক দফা’ আন্দোলনের বিপরীতে আওয়ামী লীগ ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশ করে।

বিএনপির বিপরীতে দেওয়া আওয়ামী লীগের কর্মসূচি নিয়ে তখন ব্যাপক সমালোচনা হয়। বিএনপির পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়ে আওয়ামী লীগ সহিংসতাকে উস্কে দিচ্ছে বলেও অভিযোগ তোলেন কেউ কেউ। এত সমালোচনার পরেও রাজপথ ছাড়েনি আওয়ামী লীগ। বরং বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচির বিপরীতে আওয়ামী লীগও তার কর্মসূচি অব্যাহত রাখে।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশের ডাক দিলে আওয়ামী লীগও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশ করার ঘোষণা দেয়। সেদিন বিএনপির মহাসমাবেশকে ঘিরে ব্যাপক নাশকতা-সন্ত্রাস, জ্বালাও-পোড়াও হয়। সহিংসতায় মারা যান একজন পুলিশ কনস্টেবলও। এমন চরম উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির মহাসমাবেশ।

এরপর থেকে নির্বাচন পর্যন্ত কয়েক দফা হরতাল-অবরোধের ডাক দিলেও মাঠে নামতে পারেনি বিএনপি। ব্যাপক ধরপাকড়, মামলা ও নেতাকর্মী গ্রেফতারের কারণে বিপর্যস্ত ছিল দলটি। ফলে, কোনো বাধা ছাড়াই হয়ে যায় নির্বাচন। টানা চতুর্থ বারের মতো সরকার গঠন করে আওয়ামী লীগ।

তবে সে অবস্থা থেকে আবারও রাজপথে আন্দোলন জোরালো করতে চায় বিএনপি। বিপরীতে শূন্য রাজপথ ছেড়ে না দিয়ে মাঠে থাকতে চায় আওয়ামী লীগও। তবে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির তকমা ঘোচাতে এবার কৌশলী আওয়ামী লীগ।

আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নির্বাচন ও আন্দোলনে ব্যর্থ বিএনপি ও তার মিত্ররা। এখন নির্বাচিত সরকার ও দেশকে অস্থিতিশীল করতে নতুন করে মাঠে নামতে চায় দলটি। সে কারণে বিএনপির সহিংসতা ও নৈরাজ্য সৃষ্টির ষড়যন্ত্রকে নস্যাৎ করতে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি দলের নেতাকর্মীরাও মাঠে থাকবেন।

আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকে এ ব্যাপারে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগসহ সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীদের দেওয়া হয়েছে কড়া নির্দেশনা। দলের যে কোনো কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাগম নিশ্চিত করতে সবাইকে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।

এছাড়াও দলের ঢাকা মহানগরীর এমপি ও অন্যান্য জনপ্রতিনিধিদেরও দলের কর্মসূচিতে সর্বাত্মক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করারও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পাল্টাপাল্টি সমাবেশ নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, ৭৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগ থেকে আমরা আগেই বছরব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেছি। ঐতিহ্যবাহী সাফল্য ও গৌরব গাথার দল আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সর্ববৃহৎ এই দলটি তার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বছরব্যাপী উৎসব উদযাপন করছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ছবি- সংগৃহীত


নাছিম বলেন, এখন আকস্মিকভাবে বিএনপির সঙ্গে যদি কোনো কর্মসূচি একই দিনে হয়ে যায়, তাহলে কি শুধু পাল্টাপাল্টি হবে! এটা তো এমন কোনো সমাবেশ ডাকা হয়নি যে, বিএনপি ডেকেছে বলে আমরা ডেকেছি।

বিএনপি-জামাতের কোনো সেমিনার হল বা আলোচনার অডিটরিয়ামে গিয়ে কোনো সভা ডেকেছি, এমন তো না। এরকম ঢাকা শহরে একাধিক দলের একাধিক সভা অতীতেও হয়েছে। তাতে কোনো সংঘাত বা উচ্ছৃঙ্খলা, মারামারি-খুনোখুনি এমন কিছু হয়নি।

বিএনপির সভা থেকে আওয়ামী লীগের সভা অনেক দূরে উল্লেখ করে বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, এটা নিয়ে অহেতুক দ্বন্দ্ব বা সংঘাত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। একটি নির্বাচন হয়েছে, নির্বাচিত সরকার দেশ পরিচালনা করছে, ছয় মাসও হয়নি। এখন এই সরকারকে উৎখাতের কথা যারা বলে, তারা ব্যর্থ! সে ব্যর্থতার দায় অন্যভাবে আওয়ামী লীগকে দেওয়ার জন্য বিএনপি কৌশল নিচ্ছে। এই কৌশলকে আমরা পাত্তা দেই না।

;