সুয়ারেজে বাঁচল মান, টাইব্রেকার জিতে তৃতীয় উরুগুয়ে
এ যেন ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল। কানাডা-উরুগুয়ের মধ্যকার রোমাঞ্চকর এই ম্যাচের এক মুহূর্তে সবাই যেন ভুলেই গিয়েছিল এটি তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ। নিজেদের অভিষেক আসরেই ইতিহাস গড়া কানাডা একদম দুয়ারে পৌঁছেছিল আরেক ইতিহাসের। নিজেদের প্রথম আসরে খেলতে নেমেই তৃতীয় হওয়া, যেই কীর্তি কেবল ২০০১ আসরে গড়েছিল হন্ডুরাস। ম্যাচের ৯০তম মিনিট পর্যন্ত ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে ছিল কানাডা। তবে শেষ মুহূর্তে ত্রাতা হয়ে এলেন দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ফুটবলার সুয়ারেজ। যোগ করা সময়ে গোল করে ম্যাচ আনলেন সমতায়। পরে টাইব্রেকারে ৪-৩ ব্যবধানে কানাডাকে হারিয়ে তৃতীয় স্থানে কোপার এবারের আসর শেষ করল উরুগুয়ে।
টাইব্রেকারেও শেষ শটটি নিয়েছেন সুয়ারেজ এবং তাদের আগের তিনটি শটও জড়িয়েছে জালে। অন্যদিকে কানাডার ইসমাইল কোনে ও আলফোনসো ডেভিস মিস করে বসেন নিজেদের শট। এতেই গড়ে যায় ব্যবধান।
উরুগুয়ের জন্য এবারের আসরটি ছিল টুর্নামেন্টের ইতিহাসের রেকর্ড ১৬তম শিরোপা জয়ের। তবে সেই স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে কলম্বিয়ার কাছে, দ্বিতীয় সেমিতে ১-০ ব্যবধানে হেরে। এদিকে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৩৪ ধাপ নিচে থাকার দলের কাছেও হারতে বসেছিল মার্সেলো বিয়েলসার দলটি। তবে শেষ পর্যন্ত ‘বুড়ো’দের কাতারে নাম লেখান সুয়ারেজের নৈপুণ্যে কিছু এক অর্জন নিয়েই কোপার এবারের আসর শেষ করল উরুগুয়ে।
নর্থ ক্যারোলিনার শার্লোটের ব্যাংক অব স্টেডিয়ামে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণে দাপট দেখাতে থাকে উরুগুয়ের ফুটবলাররা। ফলাফলটাও তারা পেয়ে যায় হাতেনাতেই। ম্যাচের অষ্টম মিনিটে কর্নার কিক থেকে পাওয়া বলটি জালের ঠিকানায় পৌঁছে দেন মিডফিল্ডার রদ্রিগো বেন্তানকুর। ম্যাচের শুরুতেই পিছিয়ে পড়ায় এমনটাই ভাবছিল সবাই, পুরো ম্যাচে দাপট থাকবে উরুগুইয়ানদেরই।
তবে কানাডা যেন ভাবছিল ভিন্ন কিছু। নিজেদের অভিষেক আসরেই একের পর চমক দেখিয়ে যাওয়া দলটি সমতায় ফিরতে খুব একটা সময় নেয়নি। ২২তম মিনিটেই দলটির হয়ে সমতাসূচক গোলটি করেন ইসমায়েল কোনে। পরে প্রথমার্ধ শেষ হয় সেই ১-১ ব্যবধানের ড্র দিয়েই।
দ্বিতীয়ার্ধের শেষ দিকে এসে এবার লিড নিল কানাডাই। তবে ৮০তম মিনিটে এসে গোল করে বসেন ফরোয়ার্ড জনাথন ডেভিড এবং তারা ইতিহাস গড়ার পথে দূরে থাকে স্রেফ ১০ মিনিটের। ম্যাচের ৯০ মিনিট পর্যন্তও স্কোরলাইন ২-১। তবে শেষটাই এলো দারুণ রোমাঞ্চ। যোগ করার সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে হিমিনেজের বাড়িয়ে দেওয়া বলে বাঁ পায়ে জোরালো এক শট নেন সুয়ারেজ এবং সোজা জালে। তখনকার মত স্বপ্নভঙ্গ কানাডার। ২-২ সমতায় ম্যাচ গেল টাইব্রেকারে এবং সেখানে জয় উরুগুয়ের।