ক্রিকেট
গল টেস্ট–৫ম দিন
শ্রীলঙ্কা–নিউজিল্যান্ড
সকাল ১০–৩০ মিনিট, সনি স্পোর্টস টেন ৫, টি স্পোর্টস
জিম আফ্রো টি–১০
হারারে–জোবার্গ
সন্ধ্যা ৭টা, স্টার স্পোর্টস ১
বুলাওয়ে–ডারবান
রাত ৯–১৫ মিনিট, স্টার স্পোর্টস ১
কেপটাউন–লাগোস
রাত ১১–৩০ মিনিট, স্টার স্পোর্টস ১
ফুটবল
লা লিগা
রিয়াল বেতিস–মায়োর্কা
রাত ১টা, এ স্পোর্টস
ইন্ডিয়ান সুপার লিগ
মোহন বাগান–নর্থইস্ট ইউনাইটেড
রাত ৮টা, স্পোর্টস ১৮–২
প্রিমিয়ার লিগের দুই ফেভারিটের লড়াই। এমন ম্যাচ থেকে যেমন লড়াই আশা করা হচ্ছিল, ম্যাচটায় দুই দল লড়াই করেছে তেমনভাবেই। ম্যানচেস্টার সিটির মাঠে শুরুতে গোল হজম করে, ১০ জনের দল নিয়েও জয় তুলে নেওয়ার আশায় ছিল আর্সেনাল। তবে শেষ মুহূর্তে গোল হজম করে ২-২ গোলের ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে দুই দলকে।
ম্যাচের ৯ মিনিটেই ম্যানসিটি এগিয়ে গিয়েছিল আর্লিং হালান্ডের গোলে। মৌসুমের ১০ম আর সিটির হয়ে ১০০তম গোলের দেখা পেয়ে যান এই নরওয়েজিয়ান গোলমেশিন। সে গোলের পর মনে হচ্ছিল ম্যাচের ফেভারিট সিটিই।
তবে আর্সেনাল জবাবটা দেয় ম্যাচের ২২ মিনিটে। দ্রুত নিয়ে ফেলা এক ফ্রি কিক থেকে বাম পাশে বল পেয়ে যান গ্যাব্রিয়েল মার্তিনেলি। তার নিচু ক্রস থেকে বলে প্রথম ছোঁয়াতেই গোলের দেখা পেয়ে যান ইতালিয়ান ডিফেন্ডার রিকার্ডো কালাফিওরি।
এরপর আর্সেনাল আরও গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। তার ফলটা পায় প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে। বুকায়ো সাকার বাড়ানো বল থেকে গ্যাব্রিয়েল মাগালায়েসের গোলে ২-১ গোলে এগিয়ে যায় গানাররা।
তবে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে উল্লেখযোগ্য ঘটনা ওই একটাই ঘটেনি। বার্নার্দো সিলভাকে ফাউল করে বসেন লিয়ান্দ্রো ত্রোসার্দ। তিনি আগে একটা হলুদ কার্ড দেখে ছিলেন। বিরতির একটু আগে আরও এক বাজে ফাউল করে লাল কার্ড দেখে বসেন তিনি। ফলে আর্সেনাল ১০ জনের দলে পরিণত হয়।
দ্বিতীয়ার্ধে আর্সেনাল মনোযোগী ছিল গোল না খাওয়ায়। একটা বড় সময় ধরে তারা কাজটা করেছেও। তবে শেষ মুহূর্তে পারেনি আর। ম্যাচের শেষ কিকে গোল করেন জন স্টোন্স। গোলটা অনেকটাই ভাগ্যগুণে পেয়ে গেছে সিটি। শর্ট কর্নার থেকে গুন্দোয়ান, গ্রিলিশ হয়ে বলটা যায় মাতেও কোভাচিচের কাছে। তার শট আর্সেনাল রক্ষণে প্রতিহত হয়ে যায় স্টোন্সের পায়ে, যিনি দাঁড়িয়ে ছিলেন ফাঁকায়। সে সুযোগটা তিনি কাজে লাগাতে ভোলেননি। ফলে ১০ জনের আর্সেনালের সঙ্গে কষ্টসাধ্য এক ড্র নিয়ে মাঠ ছাড়ে সিটি।
৫ ম্যাচ থেকে ১৩ পয়েন্ট নিয়ে সিটি রইল লিগের শীর্ষে। চারে থাকা আর্সেনাল সমান ম্যাচ থেকে পেয়েছে ১১ পয়েন্ট। ওদিকে আগের দিন শীর্ষে উঠে আসা লিভারপুল আজ নেমে গেছে দুইয়ে, তাদের পয়েন্ট ১২।
দুই দলের সাম্প্রতিক ফর্মটা ছিল বিপরীতমুখী। চলতি মৌসুমে ভিয়ারিয়াল একটা ম্যাচেও হারেনি। ওদিকে বার্সেলোনা সবশেষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ম্যাচে হেরে এসেছিল মোনাকোর কাছে। তার ওপর আবার ম্যাচটা ছিল ভিয়ারিয়ালের মাঠ এল মাদ্রিগালে। সব মিলিয়ে ফেভারিট ছিল ইয়েলো সাবমেরিনরাই।
তবে গত রাতে সেই ভিয়ারিয়ালকেই উড়িয়ে দিয়েছে বার্সেলোনা। রবার্ট লেভান্ডভস্কি আর রাফিনিয়ার জোড়া গোলে ৫-১ গোলের জয় তুলে নিয়েছে কাতালানরা।
প্রতিপক্ষের মাঠে এই ম্যাচে গোলের জন্য বার্সাকে অপেক্ষা করতে হয়েছে ২০ মিনিট। তরুণ পাবলো তোরের বাড়ানো বলে গোলটা করেন লেভান্ডভস্কি। ৩৫ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে বার্সা, এবারও গোলদাতা লেভাই। লামিন ইয়ামালের ক্রস ঠেকালেও ভিয়ারিয়াল রক্ষণ তার শট ঠেকাতে পারেনি।
এর তিন মিনিট পর নিকলাস পেপের বাড়ানো বলে আয়োজে পেরেজের গোলে আশা দেখতে শুরু করেছিল স্বাগতিকরা। তবে বিরতির পর সে আশার আলো নিভিয়ে দেন পাবলো তোরে। পেদ্রির পাস থেকে ৫৮ মিনিটে ব্যবধান ৩-১ করে বসেন তিনি।
হ্যাটট্রিকের সুযোগ এসেছিল লেভান্ডভস্কির কাছে। তবে পেনাল্টি মিস করে সে সুযোগ হেলায় হারান তিনি। বার্সার অবশ্য তাতে কোনো সমস্যা হয়নি। ৭৪ মিনিটে পাউ ভিক্তরের সহায়তায় গোলের দেখা পান রাফিনিয়া। এরপর ৮৩ মিনিটে মাঝমাঠ থেকে লামিন ইয়ামালের দারুণ ট্রিভেলা পাস পেয়ে বক্সে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে তিনি পেয়ে যান তার দ্বিতীয় গোল। বার্সা ৫-১ গোলে জিতে ম্যাচটা শেষ করে।
এর ফলে বার্সা ৬ ম্যাচে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে রইল শীর্ষে। ভিয়ারিয়াল সমান ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে নেমে গেছে তালিকার পাঁচে। আর ৬ ম্যাচ থেকে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ আছে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে।
রীতিমতো উড়ছিল বাংলাদেশ। প্রথম দিনে দলের ভালো শুরুর পর ভারত ৩৭৬ রান করলেও খেলাটা হাত থেকে বেরিয়ে যায়নি। ব্যাটাররা ভালো করলেই পরিস্থিতিটা সহজ হয়ে যেত আবার। কিন্তু নাজমুল হোসেন শান্তর দল সেটা করতে পারল কই?
প্রথম ইনিংসে ১৪৯ রানে অলআউট হয় দল। বাংলাদেশ ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় তখনই। ২৮০ রানের ব্যবধানে হারের দায়টা তাই টপ অর্ডারের কাঁধেই নিলেন শান্ত।
তিনি বলেন, ‘প্রথম ইনিংসে আমরা ভালো ব্যাটিং করতে পারিনি। ম্যাচের ওই সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। টপ অর্ডারে যদি অন্তত একটা জুটি করতে পারতাম তাহলে আমরা আরও ভালো অবস্থায় থাকতে পারতাম।’
‘এই ম্যাচ থেকে যদি শেখার কথা বলেন তাহলে আমার মনে হয় টপ অর্ডারদের ক্ষেত্রে, বিশেষ করে প্রথম ইনিংসে আরও বেশি সাবধানী হওয়া উচিত ছিল। আমাদের আরও বেশি রান করা প্রয়োজন ছিল। সব ব্যাটাররা মনে করে তারা কামব্যাক করতে পারবে।’
দ্বিতীয় ইনিংসে কিছুটা উন্নতি হয়েছে ব্যাটিংয়ে, রান এসেছে স্রেফ টপ আর মিডল অর্ডার থেকেই। তবে ৫১৫ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে এটা যথেষ্ট হয়নি শেষমেশ। তবে শান্ত ভবিষ্যতের কথা ভাবছেন এখন, তার অভিমত, এটা কানপুর টেস্টে দলের কাজে আসবে।
তিনি বলেন, ‘উইকেটে সময় কাটানোটা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু আমরা যতটা কাটিয়েছিলাম সেটা যথেষ্ট ছিল না। কিন্তু এখনও দ্বিতীয় টেস্টে এটা সহায়তা করবে। ৬২ রানের জুটি গড়াটা ওপেনারদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এটা এমন একটা জিনিস যা সামনের টেস্টে নজর রাখতে পারে।’
এবারের ভারত সফরে এখন পর্যন্ত সাকিব আল হাসান বিবর্ণ। ব্যাট হাতে ভালো শুরু করেও তা বড় রানে রূপ দিতে পারেননি। বল হাতেও উইকেট পাননি।
সাকিবের উপস্থিতি মাঠে বেশ ম্লান। ফিল্ডিংয়ে দুটো ক্যাচ ছাড়ছেন, গ্রাউন্ড ফিল্ডিংয়ে মন্থর। আর বোলিংয়ে যখন প্রয়োজন, তখন তাকে আনা যাচ্ছে না আক্রমণে। সব মিলিয়ে তাকে নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে বেশ।
সে প্রশ্নটা আজ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর কাছে যেতে যেতে সাকিবের একাদশ থেকে বাদ পড়ার প্রশ্নে রূপ নিল। সে প্রশ্নটা শান্তর কাছে বাউন্সার হয়ে গিয়েছিল রীতিমতো। বাংলাদেশ অধিনায়ক তা ডাক করেছেন। বলেছেন, ‘খুব সাহসী প্রশ্ন! মাশাআল্লাহ্!’
‘ফলাফল নয়, প্রক্রিয়া’ এ মন্ত্রে বাংলাদেশের বিশ্বাস অনেক দিন ধরেই। সাকিবের জায়গা নিয়ে প্রশ্নেও ওই একই ঢঙে উত্তর দিলেন শান্ত। বললেন, ‘অধিনায়ক হিসেবে আমি যেটা দেখি, শুধু সাকিব ভাই বলে বলছি না, আমি দেখি যে কে কতটুকু কষ্ট করছে এবং কামব্যাক করার জন্য যা যা দরকার, সে কাজগুলো করছে কি না, দলের প্রতি ইন্টেনশনটা কী রকম। এই জিনিসগুলো আমি খেয়াল রাখি। আমি চেষ্টা করি, ওই ক্রিকেটার দলকে দেওয়ার জন্য কতটুকু প্রস্তুত, শতভাগ কি না।’
শুধু সাকিব নয়, পুরো দলই এই প্রক্রিয়ার আওতায় পড়ে, মনে করিয়ে দিয়েছেন শান্ত। বলেছেন, ‘অনেকে ভাবতে পারে, সাকিব ভাই দেখে আমি বলছি। তবে এ রকম না। নাহিদ রানা থেকে শুরু করে মুশফিক ভাই, সবার জন্যই আমি একই জিনিস দেখার চেষ্টা করি। এমন নয় যে রান করছে বা রান করছে না। এর চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আমার মনে হয়, তার প্রস্তুতি কেমন, দলের প্রতি তার চিন্তাভাবনা কেমন, দলকে ভালো কিছু দেওয়ার জন্য ওই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিচ্ছে কি না। এই জিনিসগুলো দেখে আমি খুশি, দলে যে ১৫-১৬ জন ক্রিকেটার আছে, তাদের নিয়ে আমি খুশি।’