স্বর্ণজয়ী সীমান্ত বললেন-এবার আমার স্বপ্ন অলিম্পিক!
প্রত্যাশা ছিল, আস্থা ছিল তার ওপর। সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন ভারোত্তলক মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। নেপাল এস এ গেমসে বাংলাদেশ পঞ্চম স্বর্ণপদক জিতেছে তার নৈপূণ্যে। ভারোত্তলনে ৭৬ কেজি ওজন শ্রেণিতে স্ন্যাচ এবং ক্লিন অ্যান্ড জার্ক ইভেন্টে স্বর্ণপদক জিতেছেন তিনি। হারিয়েছেন শ্রীলঙ্কার প্রতিপক্ষকে।
গেমসে বাংলাদেশকে স্বর্ণপদক এনে দেয়ার আনন্দময় মুহূর্তে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় এই স্বর্ণকন্যা এখন স্বপ্ন দেখছেন ভারোত্তলনে অলিম্পিকে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার। সীমান্ত জানালেন-‘ ক্রীড়া কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের ভাল সুযোগ-সুবিধা দিতে পারেন তাহলে আমি ইনশাল্লাহ ভারোত্তলনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে চাই অলিম্পিকে। সেটাই আমার বড় স্বপ্ন।’
নেপালের এস এ গেমসে স্বর্ণজয়ের সাফল্যের বর্ণনা প্রসঙ্গে সীমান্ত জানালেন-‘সবার দোয়া ছিল আমার ওপর। আমার এই সাফল্যের অংশীদার দেশের সবাই। আমাকে আরো দোয়া করবেন যাতে আমি আরো বড় কোন আর্ন্তজাতিক আসরে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারি।’
স্ন্যাচে এগিয়ে থাকলেও ক্লিন অ্যান্ড জার্কে শ্রীলঙ্কান প্রতিপক্ষের বিপক্ষে পিছিয়ে পড়নে মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। কিন্তু পোখরায় এই ইভেন্টে পিছিয়ে পড়েও স্বর্ণের হাসি শেষপর্যন্ত সীমান্তই হাসলেন। পিছিয়ে থেকে জয়ের সেই ব্যাখায় সীমান্ত বললেন-‘ আমার ওপর কোচ, ফেডারেশনের কর্মকর্তারা সবাই আস্থা রেখেছিলেন। আমার ওপর তাদের সেই বিশ্বাসই আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। পেছন থেকে পাওয়া সবার শুভকামনা ও আস্থা যদি না থাকতো তাহলে আমি বলবো মাবিয়া জিরো হয়ে যেত। আজকে যে জয়ী মাবিয়াকে সবাই দেখতে পাচ্ছেন, তার পেছনে ফেডারেশনের সবার অনুপ্রেরণা এবং অকুণ্ঠ সমর্থন আমার সবচেয়ে বড় সম্পদ। আমার কোচ ফারুক আহমেদ সরকার সবসময় আমাকে সাহস দিয়েছেন। বলেছেন পিছিয়ে পড়লেও তোমাকে জিততে হবে। যখন সমস্যায় পড়েছিলাম তখন কোচ এবং ফেডারেশনের বাদবাকি স্যারদের কথা মনে পড়েছে। তখনই মনে হয়েছে আমাকে পারতেই হবে। আমাকে লড়াইটা জিততেই হবে। এই জেদ এবং সাহসই আমাকে সামনে এগিয়ে যেতে সহায়তা করেছে। নিজের ভেতর একটা বাড়তি সাহস জাগে আমি ক্লিন অ্যান্ড জার্কে আমার প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কার প্রতিযোগিকে হারাবোই। আমি সেটা পেরেছি। সত্যিই খুবই ভাল লাগছে।’
তিনবছর আগে গৌহাটির এস এ গেমসেও স্বর্ণপদক জিতেছিলেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। সেই সুখের দিনের কথা স্মরণ করে জানালেন-‘গৌহাটির স্বর্ণপদক ছিল আমার ক্যারিয়ারের এস এ গেমসে প্রথম স্বর্ণপদক। তাই ওটার আনন্দ আমার কাছে অন্যরকম। সেই আনন্দের অগ্রাধিকার সমসময় থাকবে। তবে এবারের স্বর্ণপদককেও আমি এগিয়ে রাখবো ভিন্ন এক উচ্চতায়। অনেক বাধা ছিল এবার। সত্যিকার অর্থে বলতে কি আমরা অনুশীলন থেকে শুরু করে বাদবাকি অনেক কিছুতেই ভালরকম সুযোগ-সুবিধা পাইনি। অনেক কম সুবিধাদি নিয়েই আমরা এই গেমসে অংশ নিচ্ছি। তাই আমার দ্বিতীয় এই স্বর্ণপদককেও আমি প্রায় সমানই মর্যাদা দেবো। কিন্তু প্রথম স্বর্ণ তো প্রথমই!’