হংসবলাকা আসছে ১৮ নভেম্বর
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বহরে দ্বিতীয় বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনার উড়োজাহাজ হংসবলাকা যুক্ত হচ্ছে আগামী ১৮ নভেম্বর।
এর আগে গত ১৯ আগস্ট রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সে যুক্ত হয় ড্রিমলাইনার আকাশবীণা। ঢাকা-কুয়ালালামপুর রুট দিয়ে এর বাণিজ্যিক ফ্লাইট শুরু হয়। আকাশবীণা দিয়ে বিমান এখন মধ্যপ্রাচ্য রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। সূত্র জানায়, বর্তমানে হংসবলাকায় বোয়িংয়ের সিয়াটলের কারখানায় পেইন্টিংসহ শেষ পর্যায়ের কিছু কাজ চলছে।
বিমান সূত্রে জানা গেছে, দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার বিমানের বহরে যুক্ত হলে গুয়াংজু, লন্ডনসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ রুটে এই উড়োজাহাজ দিয়ে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে বিমানের। তৃতীয় ও চতুর্থ ড্রিমলাইনার গাঙচিল ও রাজহংস যুক্ত হবে আগামী বছরের সেপ্টেম্বরে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই চারটি উড়োজাহাজের নাম দিয়েছেন।
সূত্র জানায়, আগামী ১৮ নভেম্বর হংসবলাকা আসার কথা রয়েছে। সময়টি দু’একদিন পিছিয়েও যেতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত ১৮ নভেম্বরই উড়োজাহাজ আগমনের দিন ঠিক করা হয়েছে।
বিমানের জেনারেল ম্যানেজার (পিআর) শাকিল মেরাজ বার্তা২৪.কমকে বলেন, দ্বিতীয় ড্রিমলাইনার আগামী নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহের যেকোনো দিনে বিমানের বহরে যুক্ত হচ্ছে। তবে সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ এখন বলা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করা যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যে বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।
দেশে আসার পর কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স, উড়োজাহাজের রেজিষ্ট্রেশনসহ কিছু প্রক্রিয়া শেষ করতে ৫ থেকে ৭ দিন সময় লাগবে। এসব প্রক্রিয়া শেষে হংসবলাকা বাণিজ্যিক ফ্লাইট চলাচলের জন্য উপযুক্ত হবে।
উড়োজাহাজটিতে মোট আসন রয়েছে ২৭১টি। এর মধ্যে বিজনেস ক্লাসের আসন ২৪টি। এই উড়োজাহাজের মাধ্যমে বৈশ্বিক এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে বিমানের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়বে, সেই সঙ্গে যাত্রীদের দিতে পারবে আধুনিক প্রযুক্তির সব ধরনের সেবা।
২০০৮ সালে বিমান চারটি ড্রিমলাইনারসহ মোট ১০টি বোয়িং উড়োজাহাজ কেনার চুক্তি করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক উড়োজাহাজ নির্মাতা কোম্পানি বোয়িং এর সঙ্গে। চুক্তি অনুযায়ী এরই মধ্যে তারা বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর এর চারটি এবং বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এর দুটি সহ মোট ৬টি উড়োজাহাজ বিমানকে সরবরাহ করেছে।
বিমানের এক কর্মকর্তা বলেন, জ্বালানি সাশ্রয়ী এই উড়োজাহাজ চালনার জন্য রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী এয়ারলাইন্সের ১৪ জন প্রশিক্ষিত বৈমানিক রয়েছে। তালিকায় স্থান পাওয়া সবাই জাতীয় এয়ারলাইন্সের সবচেয়ে দক্ষ ও জ্যেষ্ঠ বৈমানিক। এছাড়া সহ-বৈমানিক হিসেবে প্রশিক্ষণের তৈরি হচ্ছে আরো ১০ জন ফার্স্ট অফিসার। তৃতীয় ও চতুর্থ ড্রিমলাইনার যুক্ত হওয়ার আগে আরো বৈমানিককে প্রশিক্ষিত করা হবে।
উড়োজাহাজটির ককপিটে পাইলটদের জন্য রয়েছে নতুনত্ব। ফ্লাইট পরিচালনা সংক্রান্ত কোনো কাজে পাইলটদের অযথা কাগজ নষ্ট করতে হবে না। এটি একটি পেপারলেস উড়োজাহাজ, সেখানে থাকছে হেডআপ ডিসপেন্ট। এর মাধ্যমে চোখের সামনের প্রয়োজনীয় তথ্য দেখতে পারবেন পাইলটরা। সার্বক্ষণিক ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঢাকায় বিমানের ফ্লাইট অপারেশন রুমের সঙ্গে যুক্ত থাকবে এটি। এর মাধ্যমে উড়োজাহাজের ইঞ্জিন, ককপিট, ফুয়েল, নেভিগেশনসহ সব তথ্য জানতে পারবেন ফ্লাইট অপারেশন বিভাগের কর্মকর্তারা। যেকোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে তারা অপারেশন রুম থেকে পাইলটকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিতে পারবেন। এজন্য ঢাকায় বিমানের প্রধান কার্যালয়ে ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সার্ভার স্থাপন করা হয়েছে।