আফতাব নগরের আকর্ষণ ‘যুবরাজ’ ও সৌদি আরবের ‘মেষ’

  • নাজমুল আহসান রাজু , স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তাটোয়েন্টিফোর.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

আফতাব নগরের আকর্ষণ ‘যুবরাজ’

আফতাব নগরের আকর্ষণ ‘যুবরাজ’

রাজধানীর আফতাব নগর হাটের আকর্ষণ ৩০ মন ওজনের গরু ‘কিশোরগঞ্জের যুবরাজ’ ও সৌদি আরবের মেষ। যুবরাজকে ঘিরে দেখা গেল উৎসুক মানুষের ভিড়। একজন তো বলে ওঠলেন গরু নয় যেন ‘হাতির বাচ্চা’।

আফতাব নগর হাটের প্রবেশপথে ১ নম্বর হাসিল কাউন্টারের সঙ্গে দেখা মিলে মেষের ছ্উানি। পাবনার সুজানগরের দুলাই থেকে আসা ‘জয়  এগ্রো ফার্ম’ মেস বিক্রি করছে। দেখতে ভেড়ার মতো মনে হলেও আসলে মেষ। বড় বাকানো শিং আর গায়ে সাদা ঘন লোম। এগ্রো ফার্মের মালিক এইচ এম জয়নুল আবেদীন জয়।

বিজ্ঞাপন

গত বৃহস্পতিবার ১৩ টি মেষ নিয়ে এসেছেন, বিক্রি হয়েছে পাঁচটি। বাকী ৮টি ছাউনিতে রাখা। বড় মেষটির ওজন আড়াই মণ। মালিক দাম হাকছেন লাখ টাকা।

আরও পড়ুন: সড়কে পশু কোরবানি না দেওয়ার নির্দেশ

জয়নুল আবেদীন জয় জানিয়েছেন মেষগুলো সৌদি আরব থেকে বাচ্চা বয়সে আনা। প্রত্যেকটির কানে রাবারের ট্যাগ লাগানো। আনার সময় চেনার সুবিধার্থে এ ট্যাগ লাগানো হয়েছে। ছাগল বা ভেড়ার মতো ঘাস, লতাপাতা, আর খড় যোগে ভুষি খায় মেষ।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ৯০ হাজার হলে বিক্রি করে দেবেন। জয় একসময় শেরাটন হোটেলে (বর্তমানে ইন্টারকন্টিনেন্টাল) কাজ করছেন। এখন এগ্রো ফার্ম দিয়ে মেষের পাশাপাশি মাছ চাষ করছেন সুজানগরে।

মূল হাটে যেতে হলে অনেকদূর পথ হাটতে হয়। হাটও বিশাল। হাটে যেতে দেখা মিলবে গরুর খাবার, রশি এবং পশু সাজানোর রঙ্গিন মালার পসরা। দুই পাশে রশি দিয়ে বাধা ছাগলের সারি।  ছাগলে হাট পেরিয়ে গেলে দেখা গেলো উৎসুক মানুষের ভিড়।

আরও পড়ুন: গাবতলী হাটে ভিড়, নেই ক্রেতা!

ভিড় ঠেলতে দেখা মিললো আলাদা ছাউনিতে কালো চকচকে বিশাল এক গরু। সঙ্গে খুঁটিতে লাগানো কাগজে লেখা ‘কিশোরগঞ্জের যুবরাজ।’ পাশে বসা ছিলেন যুবরাজের মালিক। নাম মো. আশিকুল ইসলাম শ্যামল। কিশোরগঞ্জ সদরের হয়বতনগর থেকে গত বৃহস্পতিবার এসেছেন যুবরাজকে নিয়ে।

যুবরাজ নাম রাখার ব্যাখ্যায় আশিকুল ইসলাম শ্যামল বলেন, আমার দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া মেয়ে অন্বেষা আদর করে ‘যুবরাজ’ নামকরণ করেছে। দেখতেও যুবরাজের মতো গরুটির ওজন ৩০ মণ। দাম হাঁকছেন ২০ লাখ টাকা। গত কয়েকদিনে সাড়ে ১৩ লাখ টাকা দাম বলেছেন কয়েকজন ক্রেতা। তবে ১৫ লাখ হলে বিক্রি করবো।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে উদ্বুদ্ধ হয়ে আশিকুল ইসলাম শ্যামল গরুর খামার গড়ে তোলেন। তার খামারে চারটি গাভি এবং দুটো ষাড় রয়েছে। যুবরাজের পাশে দাঁড়ানো কালো রংয়ের মাঝে ছোপ ছোপ সাদা রংয়ের গরুর মূল্য চাইছেন ৬ লাখ টাকা।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Aug/10/1565430964394.jpg

এ প্রতিবেদক যখন আলাপ করছিলেন তখন একজন দর্শনার্থী যুবরাজকে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, গরু নয় যেন ‘হাতির বাচ্চা’। বাজারের অন্যান্য গরুর ব্যাপারীরাও বলেছেন, ‘যুবরাজ’-ই আফতাবনগরের সবচেয়ে বড় গরু।

যুবরাজকে দেখা শোনার জন্য সার্বক্ষণিক দুইজন লোক নিয়োজিত ছিল। তার খাবারের তালিকায় রয়েছে খড়ের সঙ্গে ভুষি, ছোলা, ধান, চাউলে গুঁড়া ও চিটাগুড়। মাঝে মাছে যুবরাজকে আপেল ও কলা খাওয়ানো হতো।

নাটোরের কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে আসা আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া একটি গরুর দাম হাঁকছেন সাড়ে ছয় লাখ টাকা। সাড়ে তিন লাখ হলে বিক্রি করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা গরু কিনে গন্তব্যে যাচ্ছেন। বিক্রির হারও ভাল। বেলা গড়ালে বিক্রি আরো বাড়বে বলে জানিছেন এক নম্বর কাউন্টারের হাসিলকারী সামিউল হক। আফতাবনগর হাটের ইজারা পেয়েছেন নবী হোসেন রনী।

তবে এ হাটে ধুলোবালি আর যানজট একটি বড় সমস্যা।