ফিরে দেখা

নৃশংস খুনী এরশাদ শিকদারের শুরু ও শেষ



তানিম কায়সার, কন্ট্রিবিউটিং করেসপন্ডেন্ট
এরশাদ শিকদার

এরশাদ শিকদার

  • Font increase
  • Font Decrease

কিছু মানুষ আছেন যাদের পরিচয় করিয়ে দিতে তাদের কাজের বিবরণ দিতে হয় না। নামই হয়ে ওঠে তাদের কাজের বিবরণ, শুনলেই লোকে বুঝে ফেলে তিনি কে এবং তার কাজ কী। এমনই একজন কুখ্যাত খুনী এরশাদ শিকদার—যার নাম শুনলে লোকে ভয়ে, ঘৃণায় আঁতকে ওঠে এখনো।

একজন মানুষের পক্ষে করা সম্ভব এমন কোনো অপরাধ নেই যা সে করেনি। খুন, গুম, হত্যা, ধর্ষণসহ নির্যাতনের সকল শাখায় ছিল তার অবাধ বিচরণ। মানুষহত্যার ক্ষেত্রে এরশাদ শিকদার মাঝেমাঝে এমন সব উপায় অবলম্বন করত যা শুনলে যে কোনো মানুষ ভয়ে কেঁপে উঠবে। কিন্তু এরশাদ শিকদার তা করত হাসিমুখে। কাউকে হত্যা করার জন্য নির্মমভাবে আঘাত করার পর মৃত্যু না হওয়া পর্যন্ত বুকের পাঁজরের ওপর উঠে নাচতে থাকা ছিল যার প্রিয় শখ, রক্তের পিপাসা মিটিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করে নেওয়া ছিল যার প্রিয় অভ্যাস, সেই এরশাদ শিকদারের কথাই বলছি। শুধু তাই নয়, এরপর নিজেকে বিনোদিত করার জন্য আয়োজন করত জলসার। নাচ গানে ভরপুর সেই জলসায় আবার শরিক হতো ক্ষমতাসীন ব্যক্তিবর্গ, যাদের ছত্রছায়াতেই একজন ছিঁচকে চোর থেকে বিশ্বের সেরা দশজন ‘সিরিয়াল কিলারের’ একজন হিসেবে আত্মপ্রকাশের সুযোগ পায় এরশাদ শিকদার। জলসায় সবচেয়ে বড় চমক হিসেবে থাকত এরশাদের নিজের কণ্ঠে গাওয়া গান—‘আমি তো মরে যাব চলে যাব রেখে যাব সবই…’

এরশাদ শিকদারের উত্থান যে কোনো সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। এজন্যেই হয়তো নিজে একবার হলেও একটি ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করতে চেয়েছিল এরশাদ। শোনা যায় একজন পরিচালককে তিনি প্রায় আড়াই কোটি টাকা দিয়েছিলেন তাকে সিনেমায় ভিলেন হিসেবে নেওয়ার জন্য। কিন্তু বাস্তবে যে এত বড় ভিলেন তার আসলে সিনেমার সাহায্যের দরকার পড়ে না। প্রকৃতিও তাকে তাই সেই সুযোগ দেয়নি।

মুনীর-খুকু এবং রীমা হত্যা ট্র্যাজেডি

এরশাদ শিকদারের জন্ম ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার মাদারঘোনা গ্রামে। তার পিতার নাম বন্দে আলী। জন্মের পর থেকেই দারিদ্র্যের সাথে লড়াই করে করে বেড়ে ওঠা তার। অল্প বয়সেই পিতৃবিয়োগ। এরপর সংসারের হাল ধরেন তার মা। অন্যের বাসায় কাজ করে কোনোমতে দিনাতিপাত করতেন তিনি। অন্যদিকে এরশাদ ছোটবেলা থেকেই ছিল ডানপিটে। ছোট ছোট চুরি, মারামারি এসবের বিচার প্রায়ই আসত তার মায়ের কাছে। তবুও সে থামত না। সারাদিন টইটই করে ঘুরে বেড়াত সারা গ্রামে। একদিন বাসায় এসে এরশাদ এমন একটি দৃশ্য দেখতে পায় যা কোনো ছেলের পক্ষেই মেনে নেওয়া সম্ভব ছিল না। এলাকার একজন প্রভাবশালী লোককে মায়ের সাথে খুবই অন্তরঙ্গ অবস্থায় দেখে ফেলে এরশাদ। তখন সে কিছুই করতে পারেনি। কে জানে এই ঘটনার প্রভাবেই কিনা পরবর্তী জীবনে অসংখ্য নারীকে বানিয়েছে ভোগের পণ্য। এমনকি তার নিজের ঔরসজাত কন্যা সন্তানও তার লালসার শিকার হয়

দেখতে শুনতে এরশাদ ছিল সুদর্শন। এজন্যেই যখন সে নিজ গ্রাম ছেড়ে জীবিকার জন্য ছুটে যায় খুলনার ঘাট এলাকায় আর কুলির কাজের পাশাপাশি শুরু করে ছোটখাট চুরি বাটপারি, তখন সবাই তাকে ‘রাঙ্গা চোর’ নামে ডাককে শুরু করে। আঞ্জু সরদার নামে এক কুলির সর্দার তাকে সমকামিতায় বাধ্য করে। পরবর্তীতে এই আঞ্জু সরকারকে ব্যবহার করেই ট্রলার থেকে মাছ আর গম চুরি এবং জাহাজ থেকে তেল চুরির মতো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে হাত পাকায় এরশাদ। আর এভাবেই এককালের ‘রাঙ্গা চোর’ একদিন ভয়ঙ্কর খুনী হয়ে ওঠে।

এরশাদ শিকদারের জীবন কাহিনী কোনোভাবেই সিনেমার চেয়ে কম নয়। বরং তার বর্বরতা এবং নৃশংসতা কখনো সিনেমার নির্মম কাহিনীকেও হার মানায়। তার রাঙ্গা চোর থেকে এরশাদ শিকদার হয়ে ওঠা গল্পটাও যেন কোনো সুদক্ষ স্ক্রিপ্ট রাইটারের হাতেই লেখা।

মাছ, গম কিংবা তেল চুরি করে তার পোষাচ্ছিল না। ১৯৭৬-৭৭ সালের দিকে এরশাদের নতুন সঙ্গী হলো একটা রামদা। এটা নিয়ে সে শুরু করল ছিনতাই। বেশ কয়েকজন সঙ্গীও জুটে গেল। অপরাধের একটা সার্কেল তৈরি হলো। বার্জ-কার্গো থেকে পণ্য চুরি করে নদীতে লাফিয়ে পড়া, রেললাইনের স্লিপার চুরি, কাঠ চুরি, রেলের ওয়াগন ভাঙা, ট্রলারে চাঁদাবাজি ইত্যাদি শুরু হয়ে গেল পুরোদমে। যে-ই প্রতিবাদ করছিল তার কপালেই জুটছিল রামদার কোপ। ধীরে ধীরে পুরো ঘাটে ছড়িয়ে পড়ল একটি নাম—এরশাদ শিকদার।

এরশাদ শিকদারের গল্প বলতে গিয়ে রবীন্দ্রনাথকে টেনে আনা বাতুলতা। তবুও রবীন্দ্রনাথ বাঙালির জীবনের সাথে যেভাবে মিশে আছেন তাতে তাকে ছাড়া চলাও মুশকিল। রবীন্দ্রনাথ বলেছিলেন “পেয়ে পাওয়া ফুরায় না, বরং চাওয়া বেড়েই ওঠে।” এরশাদের হয়েছিল এই অবস্থা। সময়টা ১৯৮২। এক এরশাদ ঘাটের রাজা, কাকতালীয়ভাবে আরেক এরশাদ তখন দেশের রাজা। বিচক্ষণ এরশাদ শিকদার নিজের ক্ষমতার পরিধি বৃদ্ধির জন্য রাজনীতিতে যোগ দেয়। ১৯৮৮ সালে এক ভোটারবিহীন নির্বাচনে সে হয়ে যায় তৎকালীন ২১ নাম্বার, বর্তমানে ৮ নাম্বার ওয়ার্ডের কমিশনার। ব্যাস, তাকে আর কে আটকায়। চলতে থাকে একে একে জায়গা দখল। রেলের জায়গা, ব্যাংকের জায়গা, বিমানের জায়গা দখল করে গড়ে তোলে প্রায় ৬০ হাজার লোকের জন্য একটি বস্তি। যে লোকগুলো হয়ে ওঠে এরশাদের নিত্যদিনের নানান অপরাধের প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ সঙ্গী

এভাবে এরশাদ হয়ে উঠতে লাগল ওই অঞ্চলের অপরাধ জগতের একচ্ছত্র অধিপতি। বাড়তে লাগল শত্রু, বাড়তে লাগল রক্ত পিপাসা। যে বা যারা বিরোধিতা করতে চাইল, তাকেই হত্যা করা হলো নির্মমভাবে। এই যেমন ইনসাফ, কামাল ও খালেক নামের তিন নৈশপ্রহরী একবার এরশাদের চোরাচালানের কিছু মালামাল ধরিয়ে দিয়েছিল পুলিশের হাতে। কী সাহস! ক্ষিপ্ত এরশাদ বাঘের মতো হামলে পড়ল তাদের ওপর। একেকজনকে মাটিতে ফেলে বুকের ওপর লাফাতে লাগল এরশাদ। অবিরাম আঘাতে পাঁজর ভেঙে দেওয়া হলো তাদের। তারপর গলায় নাইলনের দড়ি দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হলো। একজন এই ঘটনা দেখে ফেলেছিল বলে তাকেও বরণ করতে হলো একই পরিণতি! কী নৃশংস!

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/24/1563963002032.jpg
◤ এখানেই গুলি করে মারা হতো ◢

 

এরশাদের প্রিয় নদী কোনটা এ ব্যাপারে ইতিহাসে কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে অনুমান করে হয়তো নেওয়া যায় সেটা ভৈরব নদীই হবে। কেননা এখানেই খুন করে ফেলে দিয়েছে কত মায়ের সন্তানকে তার কোনো সঠিক হিসেব এরশাদ শিকদারের কাছেও ছিল না।

অপরাধ চালিয়ে যেতে হলে রাজনীতির বিকল্প নেই, একথা বুঝতে এরশাদের দেরি হয়নি। তাই তো ৯০-এর পর রাষ্ট্রপতি এরশাদকে হটিয়ে যখন বিএনপি ক্ষমতায়, তখন এরশাদও বিএনপিতে নাম লেখায়। এরপরে ৯৬ সালে নতুন সরকার পরিবর্তন হলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগেও যোগ দিতে সক্ষম হয় এরশাদ। পাশাপাশি চলতে থাকে তার হত্যাযজ্ঞ। কী বন্ধু, কী শত্রু, কাউকেই রেহায় দেয়নি এরশাদ। শুধুমাত্র সন্দেহের জেরেও সে খুন করে ফেলে মাস্টার জাহাঙ্গীর কিংবা ফটিকের মতো পারিবারিক বন্ধুকে। যারা নিয়মিত বাসায় আসা যাওয়া করত বলে এরশাদের ধারণা হয়েছিল সম্ভবত তার স্ত্রীর সাথে এদের কোনো গোপন সম্পর্ক আছে। এক্ষেত্রে সবচেয়ে হতভাগা লোকটির নাম সম্ভবত আকিমুল। ঝিনাইদহের টেলিফোন অপারেটর ছিল আকিমুল। একরাতে টেলিফোনের ডায়াল ঘোরাতে ঘোরাতে, দৈবক্রমে সে ফোন করে ফেলে এরশাদের বাসায়। আর কই যায়! এরশাদের স্ত্রী খাদিজার সাথে ফোনালাপ এবং ফোনে প্রেম করার অপরাধে আকিমুলেরও স্থান হলো ভৈরব নদীতে

মানুষ মারার জন্য এরশাদ আলাদা জায়গা বানিয়েছিল। আফ্রিকান মাগুরের একটি পুকুর ছিল তার। জ্যান্ত মানুষ সেখানে ছেড়ে দিলে মিনিট পাঁচেক সময় লাগত উধাও হয়ে যেতে। বরফকল ছিল মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে তার আরকটি কুখ্যাত জায়গা। এখানে যে একবার গেছে, তার আর সহজে ফিরে আসা হয়নি।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/24/1563965056550.jpg
◤ এখানেই আফ্রিকান মাগুরের খাবার হতো লাশগুলো ◢

 

এরশাদ শিকদারের অপরাধ জীবনের সবচেয়ে আলোচিত খুনের ঘটনা ছিল যুবলীগ নেতা খালিদ হত্যা। এই হত্যার ঘটনায় করা মামলাতেই গ্রেফতার করা হয়েছিল এই নরপিশাচকে। ১৯৯৯ সালের একরাতে ফোন করে তার বরফকলে যাওয়ার জন্য কয়েকজনকে ডাকে এরশাদ। তার ডাকে সাড়া না দিয়ে উপায় নেই। খুলনা জেলা ছাত্রলীগ নেতা অসিত বরণ বিশ্বাস, আবু হানিফ, আলী আকবর। সাথে ব্যবসায়ী সৈয়দ মনির মীর ও তার ছোট ভাই চয়ন মীর আর যুবলীগ নেতা খালিদ হোসেন তাই রওয়ানা হন মৃত্যুকূপ বরফকলের দিকে। তারা গিয়ে পৌঁছুনোর পর কথাবার্তার একপর্যায়ে এরশাদ অট্টহাসি শুরু করে। এ যেন ঝড়ের আগে প্রকৃতির কঠিন পূর্বাভাস। ভয়ে কলিজার পানি শুকিয়ে যায় সবার। এরশাদ খালিদকে টেনে হিঁচড়ে আঘাতের পর আঘাত করতে থাকে। রক্ত পিপাসা তখন চরমে। বুকের ওপর লাফ দিয়ে উঠে যায় এরশাদ। লাফাতে লাফাতে বুকের পাঁজর ছিন্নভিন্ন করে ফেলে সে। খালেদ ঢলে পড়ে মৃত্যুর কোলে।

এ যাত্রা আর রক্ষা হয় না এরশাদের। মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। ভারত থেকে বিশেষ নকশা করিয়ে আনা এরশাদের আবাসস্থল স্বর্ণকমলে অবস্থান করছিল এরশাদ। এমন সময় খবর আসে পুলিশ তাকে ধরতে আসবে। এরশাদ পালাতে গিয়েও সিদ্ধান্ত বদলায়। সে সবাইকে তার ক্ষমতার জোর দেখিয়ে দিতে চাইল। সকলের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে নিজেই চড়ে বসল ভ্যানে।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/24/1563965154859.jpg
◤ স্বর্ণকমল ◢

 

২০০০ সালের ৩০ এপ্রিল খুলনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারক এম হাসান ইমাম এরশাদ শিকদারের মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করলেন। ২০০৪ সালের ১০ মে রাত ১২টা ১ মিনিটে ফাঁসি কার্যকর হলো দেশের ইতিহাসে কুখ্যাত এই ঘাতকের। এরশাদ ধীরে ধীরে এগিয়ে গেল মৃত্যুর দিকে। পেছনে পড়ে রইল তার সকল কুকর্ম, পুলিশ এলেই লুকিয়ে থাকার জন্য খেলনা কবর, পড়ে রইল তার শত্রদের ফাঁসি দেওয়ার সেই ঘর। পড়ে রইল তার নিজের গাওয়া গান, “আমি তো মরে যাবো...”

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/24/1563965215783.jpg
◤ এরশাদের খেলনা কবর ◢

 

সত্য মিথ্যার, ন্যায় অন্যায়ের লড়াইটা আজকের নতুন না। এই লড়াই চলে আসছে পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকে। যতদিন মানুষ থাকবে, পৃথিবী থাকবে, এই লড়াইও থাকবে। মিথ্যা, অন্যায় হয়তো সাময়িকভাবে বিজয়ের মালা পরতে পারে, কিন্তু সবশেষে সত্য এবং ন্যায়েরই জয় হয়। এরশাদ শিকদারের উত্থান ও পতন এই কথারই প্রমাণ দিয়ে গেল আরেকবার।

 

Image Courtesy: ‘সবাক’, সুমন সওদাগরের ব্লগ (২০১০)

   

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?



কবির য়াহমদ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

বৃষ্টি নাকি ধান, কী প্রার্থনায় দেশ?

  • Font increase
  • Font Decrease

‘পথের কেনারে পাতা দোলাইয়া করে সদা সঙ্কেত/ সবুজে হদুদে সোহাগ ঢুলায়ে আমার ধানের ক্ষেত/ ছড়ায় ছড়ায় জড়াজড়ি করি বাতাসে ঢলিয়া পড়ে/ ঝাঁকে আর ঝাঁকে টিয়ে পাখিগুলে শুয়েছে মাঠের পরে/ কৃষাণ কনের বিয়ে হবে, তার হলদি কোটার শাড়ী/ হলুদে ছোপায় হেমন্ত রোজ কটি রোদ রেখা নাড়ি/ কলমী লতার গহনা তাহার গড়ার প্রতীক্ষায়/ ভিনদেশী বর আসা যাওয়া করে প্রভাত সাঁঝের নায়।’ পল্লীকবি জসীম উদদীনের ‘ধান ক্ষেত’ কবিতার অপূর্ব চিত্রায়ন কৃষকের শ্রম-ঘাম আর প্রকৃতির তরফে। কাব্যে-পঙক্তির বিমূর্ত চিত্র মূর্ত হয়েছে বিস্তীর্ণ মাঠে। কিষান-কিষানির বুক ভরা আশার সার্থক রূপায়ন হতে চলেছে এ-মৌসুমে।

এখন ভরা বৈশাখ। এ-সময়টা বোরো ধানের। বোরো ধান দেশের খাদ্যচাহিদার অন্তত ৫৫ শতাংশ মিটিয়ে থাকে। দেশের হাওরভুক্ত ৭টি জেলা সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওরে এই বোরোর চাষ বেশি হয়ে থাকে। এই ধান অতিবৃষ্টি, বন্যা ও ভারতের পাহাড়ি ঢলে ক্ষতিগ্রস্ত না হলে দেশের খাদ্যচাহিদায় ঘাটতি পড়ে না। তাই এই ধান চাষ থেকে শুরু করে ঘরে ফসল তোলা পর্যন্ত অনুকূল আবহাওয়া, বিশেষ করে রোদের উপস্থিতি অতি জরুরি। বর্তমানে সে পরিস্থিতি চলছে।

সিলেট অঞ্চলের মানুষ বলে এই অঞ্চলের মানুষের চাওয়া-পাওয়া, হতাশা-উচ্চাশার সঙ্গে আমি পরিচিত। তাদেরকে উদাহরণ হিসেবে টানছি। তাদের সঙ্গে থেকে জেনেছি, বোরো মৌসুমে নির্বিঘ্নে ঘরে ফসল তোলা কতটা জরুরি। গবাদি পশুর খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে জরুরি খড় সংরক্ষণও। তীব্র রোদ এখানে সমস্যার নয়, এটা বরং আনন্দের। কারণ এই রোদ গা পোড়ালেও বুক ভরা আশার সার্থক বাস্তবায়নের পথ দেখায়। দেশের যে খাদ্যচাহিদা, যে খাদ্যনিরাপত্তা সেটা এই বোরো ধানের ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। তাই চাষ থেকে শুরু করে প্রতিটি পর্যায়ে দরকার হয় প্রকৃতির সহায়তা। এবার এখন পর্যন্ত সে সহায়তা আছে, যদিও এ মাসের শুরুর দিকে একবার ঝড়বৃষ্টিসহ শঙ্কার কালমেঘ হাতছানি দিয়েছিল। সেটা আপাতত দূরে সরেছে।

কিষান-কিষানির দরকার এখন তীব্র রোদ। তারা এটা পাচ্ছে। দেশে তীব্র তাপদাহ। এখানেও এর ব্যতিক্রম নয়। তবু তারা এই রোদের প্রার্থনায় রয়েছে। বৃষ্টি এখন তাদের কাছে দুর্যোগ-সম। কারণ এই বৃষ্টি এবং অতি-বৃষ্টিসৃষ্ট বন্যা তাদের স্বপ্নসাধ গুঁড়িয়ে ভাসিয়ে নিতে পারে সব। ২০১৭ সালের দুঃসহ স্মৃতি এখনও বিস্মৃত হয়নি সুনামগঞ্জের কৃষকেরা। সে বছর সুনামগঞ্জের ছোট-বড় ১৩৭ হাওরের ফসল বন্যায় এবার ভেসে গিয়েছিল। গতবার কৃষক নির্বিঘ্নে ফসল ঘরে তুলেছেন। এরআগের বছর অন্তত ২০টি হাওরের ফসলহানি হয়েছিল বন্যায়।

প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল ক্ষেতের ফসল, দেশের খাদ্যনিরাপত্তা। এখানে প্রচণ্ড তাপদাহ তাই প্রভাব ফেলে সামান্যই। রোদে পুড়ে, প্রয়োজনে ছাতা মাথায় দিয়ে কিষান-কিষানিরা স্বপ্ন তোলেন ঘরে। তারা বৃষ্টির জন্যে প্রার্থনা না করে বরং রোদ আরও কিছুদিন অব্যাহত রাখার প্রার্থনায় বসেন। কৃষকেরা পরিমিত বৃষ্টি চায় চৈত্র মাসে, বৈশাখে চায় খাঁ খাঁ রোদ্দুর, কারণ এই রোদে সোনালী ধান ঘরে ওঠে। লোককথার প্রচলিত, ধান তোলার মৌসুমে ঝড়বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে ফসল রক্ষা করার জন্য হাওরবাসীরা তন্ত্রসাধক বা ‘হিরাল’ ও ‘হিরালি’-দের আমন্ত্রণ জানাতেন। তারা এসে মন্ত্রপাঠ করে ঝড়বৃষ্টি থামানোর জন্য চেষ্টা করতেন। লোকায়ত বিশ্বাস থেকে আগেকার মানুষজন এমন আচার পালন করতেন। এসবে সত্যি কাজ হতো কিনা সেটা বিতর্ক এবং ব্যক্তি-বিশ্বাসসাপেক্ষ, তবে এই হিরাল-হিরালিদের আমন্ত্রণ বলে বৈশাখে একদম বৃষ্টি চায় না হাওরের কৃষক।

হাওরপারের মানুষেরা যখন রোদ অব্যাহত থাকার প্রার্থনায়, তখন দেশজুড়ে তীব্র তাপদাহে পুড়তে থাকা মানুষেরা আছেন বৃষ্টিপ্রার্থনায়। দেশের জায়গায়-জায়গায় বৃষ্টি প্রার্থনায় ইস্তিস্কার নামাজ পড়া হচ্ছে, গণমাধ্যমে সচিত্র সংবাদ আসছে এর। কোথাও প্রবল বিশ্বাসে কেউ কেউ ‘ব্যাঙের বিয়ে’ দিচ্ছেন, এটাও বৃষ্টি প্রার্থনায়। সামাজিক মাধ্যমে গরমের তীব্রতার আঁচ মিলছে, বৃষ্টি নাকি ধান—কোনটা জরুরি এই প্রশ্নও তুলছেন কেউ কেউ। কেবল তাই নয়, বাংলাদেশের প্রচণ্ড তাপদাহ নিয়ে বিশ্বমিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হয়েছে। প্রচণ্ড গরমে দেশের মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে প্রতিবেদন করেছে দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, বিবিসি, এএফপি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া। গণমাধ্যমগুলো বলছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে টানা দ্বিতীয় বছর বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধের ঘোষণাও এসেছে। বৃষ্টি-প্রার্থনায় নামাজের আয়োজনের কথাও এসেছে বিশ্বমিডিয়ায়।

একদিকে প্রচণ্ড তাপদাহ, অন্যদিকে খাদ্যনিরাপত্তার প্রধান উপকরণ ধান ঘরে তোলার অনিশ্চয়তা—তবু অনেকের কাছে সাময়িক স্বস্তিই যেন মুখ্য। অথচ আর দিন দশেক বেরো আবাদ-এলাকায় বৃষ্টি না নামলে ধানগুলো ঘরে ওঠত কৃষকের। নিশ্চিত হতো খাদ্যনিরাপত্তার।

প্রকৃতির ওপর আমাদের হাত নেই, নিয়ন্ত্রণ নেই; তবু মনে করি আমাদের আকাঙ্ক্ষার প্রকাশে কৃষকদের গুরুত্ব থাকা উচিত। আমাদের চাওয়ায় হয়তো প্রকৃতির রীতি বদলাবে না, তুমুল রোদ্দুরের দেশে হঠাৎ বৃষ্টি নামবে না, তবে ধান ঘরে তোলার আগ পর্যন্ত রোদ্দুর কামনায় কৃষক স্বস্তি পাবে; ভাবতে পারবে এই দেশ আছে তাদের সঙ্গে।

কৃষকের জয় হোক। অন্তত বোরো-এলাকায় প্রকৃতি কৃষকের সঙ্গে থাকুক।

;

৫০ বছর আগে মহাকাশ থেকে তোলা পৃথিবীর ছবি আজও শ্রেষ্ঠ



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সালটা ১৯৬৮। বিশ্বব্যাপী মানুষ মেতে উঠেছিল বড়দিনের আনন্দে। তখনো জানতো না, বড়দিন উপলক্ষে তারা একটি বিশেষ উপহার পেতে চলেছে। পৃথিবী থেকে আমরা হরহামেশাই চাঁদ দেখি। অমাবস্যা-পূর্ণিমা, এমনকি পক্ষের মাঝামাঝি সময়ের বদৌলতে নানা দৃষ্টিকোণে নানা আকারের চাঁদ দেখতে পাই। তবে চাঁদ থেকে পৃথিবী দেখতে কেমন? এরকমটা হয়তো অনেকেই ভাবেন।

নাসার মহাকাশচারীরা অ্যাপোলো ৪ এ করে তখন চাঁদের চারপাশে টহল দিচ্ছে। সেখান থেকে তারা চাঁদের বাসকারীদের দৃষ্টিতে পৃথিবী কেমন হবে তার এক নমুনা জোগাড় করেন। ক্রিসমাসের কিছুদিন আগে ক্রুরা চাঁদকে প্রদক্ষিণ করার সময় ব্যারেন লুনার হরিজোন থেকে একটি ছবি তোলে। সেখানে সুদূর মহাকাশ থেকে পৃথিবীর একটি সুন্দর দৃশ্য ধারণ করা হয়। চমৎকার সেই রঙিন ছবিটি সবকিছু পরিবর্তন করতে চলেছিল।

ছবিটি তুলেছিলেন মার্কিন নভোচারী বিল অ্যান্ডার্স এবং জিম লাভেল। ছবিটি ধারণ করার পর মহাকাশ বিজ্ঞানীরা অবাক হয়ে যান। অর্ধ শতাব্দী পার হয়ে যাওয়ার পরও এটিকে প্রকৃতির সবচেয়ে আইকনিক ছবি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ, এটিই মহাকাশ থেকে তোলা প্রথম রঙিন এবং উচ্চ রেজুলেশনের ছবি।

১৯৭০ সালে পরিবেশ সচেতনতা এবং এই ব্যাপারে সক্রিয়তা বাড়ানোর উদ্দেশে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে পৃথিবী দিবস প্রচারিত হওয়ার কারণে ছবিটিকে বিশেষ কৃতিত্ব দেওয়া হয়।

যুক্তরাজ্যের রয়্যাল ফটোগ্রাফিক সোসাইটির প্রোগ্রাম ডিরেক্টর মাইকেল প্রিচার্ড ছবিটিকে নিখুঁত দাবি করেন। তিনি বলেন, এই ছবিটি পৃথিবীর এমন একটি দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করেছিল, যা আগে কোনো ছবি করতে পারেনি। প্রকাণ্ড মহাবিশ্বে পৃথিবীর অস্তিত্ব কতটা ক্ষুদ্র গ্রহ, তা যেন চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় ছবিটি।

১৯৬০ সালের পরই পৃথিবী নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে শুরু করে। ষাটের দশকের শেষভাগে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের মানুষ অনুধাবন করে পৃথিবীকে আজীবন একইভাবে ব্যবহার করা যাবে না। গ্রহের প্রতি আমাদের আরও অনুরাগী হতে হবে। সেই উদ্দেশে ১৯৬৯, ‘৭০ ও ‘৭১ সালে ‘ফ্রেন্ডস অব দ্য আর্থ’, মার্কিন প্রতিষ্ঠান ‘এনভায়রনমেন্টাল প্রোটেকশন এজেন্সি’ এবং ‘গ্রিনপিস’ প্রতিষ্ঠা করা হয়। এই ছবিটি প্রকাশের ১৮ মাস পর ২০ মিলিয়ন মার্কিন নাগরিক পৃথিবী রক্ষার আন্দোলনে রাস্তায় নামে।

পৃথিবী রক্ষা করার জন্য মানুষদের উৎসাহিত করার বেলায় ছবিটি অনেক বেশি প্রভাব ফেলে। এখনো অবদি মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পাঠানো ছবিগুলোর মধ্যে ১৯৬৮ সালে বড়দিনের আগে তোলা সেই ছবিটিকে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করা হয়।

;

মাঝরাতে আইসক্রিম, পিৎজা খাওয়া নিষিদ্ধ করল মিলান!



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: স্কাই নিউজ

ছবি: স্কাই নিউজ

  • Font increase
  • Font Decrease

আইসক্রিম, পিৎজা অনেকের কাছেই ভীষণ পছন্দের খাবার। তবে ইউরোপসহ পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঝরাতে এসব মুখরোচক খাবার ও পানীয় খাওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। ইতালিতে জেলাটিনের তৈরি আইসক্রিম খুব বিখ্যাত। এজন্য ইতালিতে 'জেলাটো সংস্কৃতি' নামে একটা কালচার গড়ে উঠেছে। সম্প্রতি ইতালির মিলানের বাসিন্দাদের জন্য একটি নতুন আইন প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রতিবেদন- স্কাই নিউজ।

মিলানে বসবাসকারীদের অধিকাংশই মাঝরাতে রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে আইসক্রিম, পিৎজা, ফাষ্টফুড জাতীয় খাবার ও পানীয় পান করে থাকে। এতে করে সেখানকার এলাকাবাসীদের রাতের ঘুম বিঘ্নিত হয়। নতুন প্রস্তাবিত আইনে শহরবাসীর রাতের ঘুম নির্বিঘ্ন করতে মধ্যরাতের পর পিৎজা ও পানীয়সহ সব ধরনের টেকওয়ে খাবার নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

তবে মধ্যরাতের পর আইসক্রিম নিষিদ্ধ করার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে, তৎকালীন মেয়র গিউলিয়ানো পিসাপিয়া অনুরূপ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু 'অকুপাই জেলাটো' আন্দোলনসহ তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরে তিনি এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন।

এরপর আবারও মিলানে এ আইনটি প্রস্তাব করেছেন ডেপুটি মেয়র মার্কো গ্রানেল্লি। দেশটির ১২টি জেলা এই প্রস্তাবের আওতাভুক্ত হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে মিলানের মেয়র গ্রানেল্লি বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সামাজিকতা ও বিনোদন এবং বাসিন্দাদের শান্তি ও প্রশান্তির মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা।

প্রস্তাবটি নিম্নলিখিত এলাকাগুলোতে প্রযোজ্য হবে বলে জানিয়েছে মিলান কর্তৃপক্ষ: নোলো, লাজারেটো, মেলজো, ইসোলা, সারপি, ভায়া সিজারিয়ানো, আরকো ডেলা পেস, কোমো-গাইআউলেন্টি, পোর্টা গ্যারিবল্ডি, ব্রেরা, টিসিনিজ এবং দারসেনা-নাভিগলি।

জানা যায়, প্রস্তাবটি মে মাসের মাঝামাঝি থেকে কার্যকর থাকবে এবং নভেম্বর পর্যন্ত চলবে। এটি প্রতিদিন রাত ১২.৩০ টায় এবং সাপ্তাহিক ছুটির দিন এবং সরকারী ছুটির দিনে রাত ১.৩০ টা থেকে প্রয়োগ করা হবে। তবে এ প্রস্তাবের বিরুদ্ধে নাগরিকদের মে মাসের শুরু পর্যন্ত আপিল করার এবং আইন পরিবর্তনের পরামর্শ দেওয়ার সময় রয়েছে।

 

 

 

;

অস্ট্রেলিয়ায় নিখোঁজ কুকুর ফিরলো যুক্তরাজ্যের মালিকের কাছে



ফিচার ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অস্ট্রেলিয়ায় ঘুরতে এসে নিখোঁজ হয় যুক্তরাজ্যের এক দম্পতির পালিত কুকুর। যুক্তরাজ্যে আসার ১৭ দিন পর মিলো নামের কুকুরটিকে ফিরে পেয়েছেন জেসন হোয়াটনাল নিক রোল্যান্ডস দম্পতি।

হোয়াটনাল এবং তার সঙ্গী নিক সম্প্রতি তাদের কুকুর মিলোকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়া পরিদর্শনে যান। তারা যখন সোয়ানসিতে বাড়িতে যাচ্ছিলেন তখন মেলবোর্ন বিমানবন্দরে তার হ্যান্ডলার থেকে কুকুরটি পালিয়ে যায়।

সাড়ে পাঁচ বছর বয়সী কুকুরটিকে অবশেষে মেলবোর্নের শহরতলিতে ১৭ দিন পর খুঁজে পাওয়া যায়।


হোয়াটনাল স্কাই নিউজকে বলেন, ‘মিলোকে ফিরে পাওয়াটা খুবই আশ্চর্যজনক ছিল আমার জন্য। যখন আমি আমার প্রিয় মিলোর (কুকুর) সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছিলাম, তখন আমি কান্নায় ভেঙে পড়েছিলাম। আমার কান্না দেখে অন্যরাও কেঁদেছিল। এটি সত্যিই আবেগপ্রবণ ছিল।

তিনি আরও বলেন, বিশ্বের অন্য প্রান্তে থেকে মিলোর কথা চিন্তা করে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছিলাম। আমরা জানতাম না মিলো কোথায় আছে। এটি বেশ হতাশাজনক ছিল আমাদের জন্য, কিছুটা আশা হারিয়ে ফেলেছিলাম। তাকে ফিরে পাবো ভাবিনি।

মিলোকে পাওয়ার জন্য সামাজিক মাধ্যমে জানিয়েছিলাম, তখন স্বেচ্ছাসেবকদের কাছ থেকে সাহায্য আসে, তারা মিলোর সন্ধান দেয়। মিলোকে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

;