নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, উপজেলা নির্বাচন সুষ্ঠু করতে সব কিছুই কঠোর হবে, কোনো কিছু নরম হবে না। শান্তি, শৃঙ্খলা রক্ষা ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা প্রয়োজন, করা হবে, যতটা কঠোর হওয়া প্রয়োজন, হতে হবে। এর কম করা যাবে না, আর কেউ কম করলে, গাফিলতি করলে তাকেও ছাড়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের চেয়ে উপজেলা নির্বাচনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বেশি জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে শুধু সেনাবাহিনী ছিল। আর উপজেলা নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সঙ্গে অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীর সদস্যরাও থাকবেন।’
রোববার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপলক্ষে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা জাতীয় নির্বাচন করেছি গত ৭ জানুয়ারি। এ নির্বাচনটি গোপালগঞ্জে যেমন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা যে রেকর্ডটি করেছি সুষ্ঠু নির্বাচনের, সেটি আমরা ধরে রাখতে চাই।
তিনি আরও জানান, উপজেলায় নির্বাচনে যাতে ভোটাররা সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পারেন, সুষ্ঠুভাবে যাতে ভোট গণনা হয়, সুষ্ঠুভাবে যাতে ফলাফল ঘোষণা করা যায় এবং জনগণ যাকে ভোট দেবেন, তিনিই যেন নির্বাচিত হতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে হবে। কোনো প্রভাবশালী ব্যক্তি যেন ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোটারদের কাছ থেকে ভোট আদায় করতে না পারেন বা ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পারেন।
গণমাধ্যমকে সব কথা বলা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর বলেছেন, ‘পূর্বে আমরা দেখেছি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে সবসময় ভোটের হার বেশি থাকে। আমি কোথাও বলিনি যে, শতকরা ৮০ ভাগ ভোট পড়বে। তবে কিছু গণমাধ্যম এমনটা প্রচার করেছে। অনেকে আবার এ নিয়ে কলামও লিখেছেন। এজন্য আমি গণমাধ্যমকে ভয় পাই।’
ইভিএম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিগত কমিশন ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) কিনেছিলেন, এটার কিছু সমস্যা ছিল। ইভিএমগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এটার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে লোকবল, অর্থ এবং সংরক্ষণের যে স্থান প্রয়োজন, সেসব আগের প্রজেক্টে ছিল না। ফলে এগুলো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে ইভিএমগুলো ভালো আছে, তার ভিত্তিতে আমরা নয়টি জেলায় ইভিএমে ভোটগ্রহণের পরিকল্পনা করেছি।
জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর।
পরে বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে সুরা ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।