বেঙ্গালুরুতে আটকেপড়া বাংলাদেশিরা খাদ্য সংকটে

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস


হাসান আদিব, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজশাহী
বেঙ্গালুরুতে আটকে পড়া মেহেদী আরিফ ও তার পরিবার

বেঙ্গালুরুতে আটকে পড়া মেহেদী আরিফ ও তার পরিবার

  • Font increase
  • Font Decrease

“দিন গেলেই ৫৫০ রুপি লজ ভাড়া গুণতে হচ্ছে। খেতেও হচ্ছে নিজের টাকায়। টাকা শেষ, খাবার যা আছে টেনেটুনে দুই দিন চলবে। বাংলাদেশ হাইকমিশনে দফায় দফায় কল করছি, কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না। পরবাসে ভাগ্যে কী আছে, কিছুই বুঝছি না!”

ফোনের ওপাড় থেকে এক নিঃশ্বাসে এভাবে কথাগুলো জানালেন ভারতের বেঙ্গালুরুতে আটকেপড়া বাংলাদেশি মেহেদী হাসান আরিফ। তার বাড়ি রাজশাহী মহানগরের সপুরা এলাকায়। গত ৩ মার্চ অসুস্থ মামা ও সঙ্গে মামিকে নিয়ে বেঙ্গালুরুর নারায়ণা হাসপাতালে পৌঁছান তিনি।

তার মামার ওপেনহার্ট সার্জারি হয়েছে। গত ২৭ মার্চ তাদের ট্রিটমেন্ট শেষ হয়। তবে ভারতে লকডাউন চলায় সেখানে আটকে পড়েছেন তারা। উঠেছেন বোম্মসান্দ্রা শিল্প এলাকায় অবস্থিত শান্তিনিকেতন গেস্ট হাইজে। মেহেদী আরিফের তথ্যমতে, ওই লজে আটকে পড়েছেন ১৫ জন বাংলাদেশি। সেখানে অজানা শঙ্কা মাথায় নিয়ে মানবেতর জীবন কাটছে তাদের।

বার্তা২৪.কমকে মেহেদী আরিফ বলেন, ২৯ তারিখে সবশেষ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সাথে আমাদের যোগাযোগ হয়েছিল। তারা আমাদের সকলের তথ্য নিযে জানিয়েছিল— ১৪ তারিখে ভারতে লকডাউন উঠে গেলে দেশে ফেরানোর ব্যবস্থা করবে। কিন্তু এরপর আর কোন খবর নেয়নি। আমরা কল করলেও রিসিভ করছে না।

তিনি বলেন, লজের আশেপাশে কোনো বাড়ি-ঘর নেই। পুরোটা শিল্প এলাকা। লজ থেকে বের হয়ে মূল রাস্তায় গেলেই তাড়া করছে পুলিশ। পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে কোনোমতে চাল-ডাল, শাক-সবজি কিনে গত ১৭ দিন কাটছে। যে দোকান থেকে খাদ্যসামগ্রী কিনছিলাম, সোমবার (১৩ এপ্রিল) সেই দোকানিও জানালেন—আগামীতে আর চাল-ডাল নাও পাওয়া যেতে পারে।

লজে আটকে পড়েছেন দুই সহোদর মিজানুর রহমান ও মামুনুর রশিদ

লজে আটকে পড়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের মনাকষার দুই সহোদর মিজানুর রহমান ও মামুনুর রশিদ। চিকিৎসার জন্য বেঙ্গালুরু গিয়েছিলেন।

মিজানুর রহমান মোবাইলে বার্তা২৪.কমকে জানান, লকডাউনের পর লজ থেকে বিনামূল্যে খাবার দেওয়ার কথা ছিল। দু’দিন দিয়েছিলও। পরে তারা খাবার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে।

ভেলোরে যারা আছেন, তাদের লজ ভাড়া কমানো হয়েছে। সেখান থেকে খাবার দিচ্ছে বলেও শুনলাম। কিন্তু আমরা কিছুই পাচ্ছি না। দুই-তিন দিন পর খাবারও থাকবে না। কী যে করব, কিচ্ছু বুঝতে পারছি না, বলেই ঢুকরে কেঁদে ফেলেন মিজানুর রহমান।

মেহেদী ও মিজানুরের তথ্যমতে, লজে আটকে পড়া অন্যরা হলেন— রাজশাহীর শিরোইল কলোনির মোস্তফা কামাল, তার স্ত্রী সখিনা কামাল, শিবগঞ্জের মনাকষার মামুনুর রশিদ, চট্টগ্রামের শীতাকুণ্ডের আব্দুল হোসাইন ও তার পরিবারের দুই নারী সদস্য, খুলনার রায়পাড়ার শোয়েবুর রহমান এবং তার পরিবারের একজন নারী ও আরেকজন পুরুষ সদস্য, জামালপুরের মাদারগঞ্জের নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী এবং ময়মনসিংহের মুক্তাগাছার সুনীল সাহা এবং তার পরিবারের একজন নারী সদস্য।

শান্তিনিকেতন গেস্ট হাইজের কাছাকাছি ¬¬স্বৈতা গেস্ট হাউজে আটকে পড়েছেন আরও ৪৫ বাংলাদেশি। তাদের মধ্যে আতিকুল ইসলাম নামে একজন রাজশাহী নগরের বাসিন্দা।

তিনি বলেন, আমার ৭ মাস বয়সী বাচ্চার হার্টে ছিদ্র। চিকিৎসা করাতে গত ১২ মার্চ ভারতে এসেছি। নারায়ণা হাসপাতালে কোনো চিকিৎসা সেবা পাইনি। তারা এখন আমাদের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করছে।

চট্টগ্রামের আব্দুল হোসাইন ও তার পরিবার

আতিকুল আরও বলেন, গেস্ট হাউজে প্রতিদিন রুম ভাড়া ৮০০ রুপি। ভাড়ার টাকা বকেয়া হয়েছে। হাতে টাকা-পয়সা শেষ। গেস্ট হাউজের বেশ দূরে কাঁচাবাজার ও একটি মুদিখানা দোকান আছে। সেখানে খাবার কিনতে বের হলে পুলিশ বাধা দেয়।

তিনি আারও জানান, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার ৪৫ জন বাংলাদেশি স্বৈতা গেস্ট হাউজে আটকে পড়েছেন। সবাই রোগী নিয়ে এসেছিলেন। তারা মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। হোটেল থেকে খাবারসহ কোনো সার্ভিস নেই। শুধু কোনমতে থাকার ব্যবস্থাটা হচ্ছে। বাংলাদেশ হাইকমিশনে যোগাযোগ করছি। তারা কোনো সহযোগিতাও করছে না।

আতিকুল বলেন, এখানে আমরা প্রতারণার শিকারও হচ্ছি। এয়ার এশিয়ার লোকজন এসে বিমানের টিকিট দিয়ে গেছে। ৬৫ হাজার টাকার টিকিট নিয়েছি। কিন্তু ভারতে লকডাউন বাড়ানোয় তারা আর যোগাযোগ করছে না। বলছে— পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে বিমান চললে ব্যবস্থা করবে।

এদিকে, লকডাউন শেষে চেন্নাই হয়ে সিলেট ফেরার পরিকল্পনা করেছিলেন বেঙ্গালুরুর অন্য একটি লজে আটকে পড়া ১২ জন বাংলাদেশি। শনিবার (১১ এপ্রিল) সকালে বেঙ্গালুরু থেকে চেন্নাই ৩০০০ রুপি এবং চেন্নাই থেকে সিলেটে ১৯০০০ রুপি মূল্যে আগাম টিকিট সংগ্রহ করেন।

তবে টিকিট সংগ্রহের পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লকডাউনের সময়সীমা বাড়ানোর ঘোষণা দেন। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন তারা। এসব তথ্যও জানিয়েছেন বেঙ্গালুরুর শান্তিনিকেতন লজে আটকেপড়া মেহেদী আরিফ। তবে তাদের নাম-পরিচয় বিস্তারিত জানাতে পারেননি তিনি।

বেঙ্গালুরুতে আটকেপড়া খুলনার একটি পরিবার

জানতে চাইলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন মোবাইলে বার্তা২৪.কমকে বলেন, ভারতে আটকে পড়াদের বিষয়ে হাইকমিশন অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ নেবে। কিন্তু তাদের হাইকমিশনে টেলিফোন করে নাম-তথ্য দিয়ে তালিকাভুক্ত হতে হবে। পরিস্থিতি উন্নতি হলে দ্রুত তাদের ফিরিয়ে আনব আমরা।

খাদ্য সংকটে পড়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা যে সমস্ত হোটেলে থাকছেন, সেখান থেকে দুঃসময়ে খাদ্য সরবরাহ করার কথা। যদি তা না করে থাকে, সেটাও হাইকমিশনে হোটেলের নামসহ জানাতে হবে। হাইকমিশন থেকে সেইসব হোটেলের সাথে যোগাযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।

সার্বিক বিষয়ে হোয়াটসঅ্যাপে মুম্বাইয়ে বাংলাদেশি সহকারী হাইকমিশন দফতরের প্রশাসনকি কর্মকর্তা শাহীন আলমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রতিদিনিই প্রচুর ফোন কল আসছে। আমরা তাদের নাম-পরিচয় ও তথ্য নিচ্ছি। তালিকাভুক্ত করে রাখা হচ্ছে। ভারতে লকডাউন শেষ হলে পরিস্থিতি বিবেচনা করে অগ্রাধিকার ভিত্তিকে সবাইকে দেশে ফেরার ব্যবস্থা করা হবে।

বেঙ্গালুরুতে আটকেপড়াদের যেসব নম্বরে যোগাযোগ করতে হবে: +৯১৯৯৩০০৭৫০২৬ (মো. লুৎফর রহমান, সহকারী হাইকমিশনার, মুম্বাই), +৯১৯৮৩৩১৯৯৩০ (নাফিসা মনসুর, ফার্স্ট সেক্রেটারি, মুম্বাই) ও +৯১৯৬৫৩২৯৮৪ (শাহীন আলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, মুম্বাই)।

   

‘কর্মদক্ষ যুবসমাজ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনের অন্যতম পূর্বশর্ত’



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

স্থানীয় সরকার, পল্লী ও উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে যুগোপযোগী ও কর্মদক্ষ যুবসমাজের কোন বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সম্ভাবনাময় সময় পার করছে জানিয়ে তিনি বলেন, জনসংখ্যাগত এই সুবিধার সঠিক ব্যবহার করতে আমাদের সবাইকে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসতে হবে।

শনিবার (১১ মে) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাণিজ্য অনুষদের অধ্যাপক হাবিবুল্লাহ কনফারেন্স হলে ‘ইয়ুথ লিডারশিপ স্কিলস্ ফর স্মার্ট বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তাজুল ইসলাম একথা বলেন।

তিনি বলেন, এমডিজি, এসডিজিসহ, ডেল্টা প্ল্যান-২১০০ সহ নানা কর্মসূচি প্রমাণ করে সরকার যুবসমাজ ও দেশের নাগরিকদের নিয়ে নিয়ে দূরদর্শী পরিকল্পনা করছে।

মার্কেট ইকোনমি নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের পণ্য ও সেবার মান বিশ্বমানের হতে হবে। তাহলেই এই মুক্তবাজার অর্থনীতির যুগে আমরা অন্যান্য দেশের সাথে প্রতিযোগিতা করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করতে পারব। ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়ন করে ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করতে হলে নিজেরদের যোগ্য ও দক্ষ করে গড়ে তোলা অপরিহার্য।

ডিজিটাল বাংলাদেশের বাস্তবায়ন এক অবারিত সুযোগের দুয়ার খুলে দিয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, সাবমেরিন ক্যাবলের ফলে গ্রামের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও এখন প্রযুক্তির ছোঁয়া। এই সমস্ত সুযোগ সুবিধা তরুণ ও জনসাধারণের জন্য নানা রকমের সম্ভাবনা ও আয়ের মাধ্যম সৃষ্টি করছে। যুবসমাজ ফ্রিল্যান্সিংসহ রিমোট জবের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় করছে। যা অর্থনীতিকে করছে বেগবান।

স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার বিকল্প নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ একটি বহুমাত্রিক ধারণা। সকল ভেদাভেদ ভুলে সকলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে জ্ঞান ও দক্ষতা ভিত্তিক সমাজ গঠনে এগিয়ে আসলে আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সোনার বাংলা তথা স্মার্ট বাংলাদেশ গঠন করতে পারব।

একশনিস্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন ড. শারিন শাহাজাহান নাওমির সভাপতিত্বে সভায় সম্মানিত বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্মার্ট বাংলাদেশ নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

পল্টনে ককটেল বিস্ফোরণে পথশিশু আহত



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর নয়াপল্টনে ককটেল বিস্ফোরণে এক পথশিশু আহত হয়েছে। আহত ওই শিশুর নাম সানি (১৬)। রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসে।

শনিবার (১১ মে) বেলা পৌনে ৩টার দিকে নয়াপল্টন হোটেল মিডওয়ের পেছনে এই ঘটনা ঘটে।

আহত সানি জানায়, তার বাবার নাম টিটু মিয়া। সে কাকরাইল এলাকায় থাকে। বিভিন্ন ভাঙ্গারি জিনিসপত্র কুড়িয়ে বিক্রি করে।

শনিবার দুপুরে ভাঙ্গারি কুড়ানোর সময় সে একটি পরিত্যক্ত ব্যাগ পায়। সেটিতে ককটেল ছিল। হাত দিয়ে ধরে সেটি নাড়াচাড়া করার সময় বিস্ফোরণ ঘটে। এতে তার দুই হাত ও দুই পায়ে আঘাত লাগে।

আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে আসে পুলিশ।

পল্টন থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. সেন্টু মিয়া জানান, পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যাগের ভেতরে থাকা ককটেল বিস্ফোরণে সানি নামে ওই পথশিশু আহত হয়েছে। ঘটনাটি বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ অবস্থান করছে।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

জলাতঙ্ক নির্মূলে চসিকের কুকুরের টিকাদান কর্মসূচি সম্পন্ন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: বার্তা২৪

ছবি: বার্তা২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

জলাতঙ্ক নির্মূলে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) অধীনে ৪১টি ওয়ার্ডে কুকুরের টিকাদান (এমডিভি) কর্মসূচি শেষ হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ মে) থেকে শনিবার (১১ মে) পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত এ কার্যক্রম চলে।

টিকাদান কর্মসূচির প্রতিটি টিমে কাজ করেছেন দুইজন কুকুর ধরার লোক, একজন টিকাদান কর্মী, একজন তথ্য সংগ্রাহক ও একজন স্থানীয় দিকনির্দেশক।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ৪১টি ওয়ার্ডে ৪৬টি টিম পর্যবেক্ষণ করেন এমডিভি সুপারভাইজার, ওয়ার্ড সচিব ও এমডিভি এক্সপার্ট।

টিকা দেওয়া কুকুরকে লাল বা গোলাপি রং দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। একইসঙ্গে ডিজিটাল মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিটি কুকুরের রেকর্ড নিশ্চিত করা হয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ড এলাকা বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করা হয়। যেসব কুকুর এখনো টিকার আওতায় আসেনি, সেগুলোকে পরবর্তীতে টিকার আওতায় আনা হবে।

চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ফজরের নামাজ পড়তে মসজিদে গেলে দেখি কুকুর খুব আগ্রাসী থাকে এবং দলবদ্ধভাবে প্রায়শ পথচারীদের ধাওয়া করে। এজন্য জলাতঙ্ক নির্মূলে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান প্রয়োজন। আশা করি, এমডিভি কর্মসূচির মাধ্যমে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে জলাতঙ্ক রোগ শতভাগ নির্মূল করা সম্ভব হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম বলেন, পথের পাশের বেওয়ারিশ কুকুর আঁচড় কিংবা কামড় দিলে র‌্যাবিস ভাইরাস সংক্রমণে মস্তিষ্কে প্রদাহ হয়। একে বলা হয় ‘এনকেফালাইটিস’, যা আমাদের কাছে জলাতঙ্ক রোগ হিসেবে পরিচিত। এতে মৃত্যুহার প্রায় একশ ভাগ।

প্রাণীটি কামড় দেওয়ার পর পাঁচদিন থেকে শুরু করে কয়েক বছরের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন মাসের ভেতরেই লক্ষণ প্রকাশ পায়। আক্রান্ত স্থানে ব্যথা, চুলকানি, ঝিন ঝিন ভাব, অনুভূতি কমে যায়। এরপর অনুভব হয় শরীর ব্যথা, মাথাব্যথা, জ্বর, বমি। লালা ঝরতে থাকে। বাতাস হলে ও পানি দেখলে ভয় লাগে। চোখে আলো পড়লে অস্বস্তি লাগে।

মাংসপেশিতে টিকা নিলে সাতদিন পর দুটি নিতে হবে। চামড়ার নিচে নিলে দুই পাশে দুই ডোজ। সাতদিন পর দ্বিতীয় ডোজ। সামান্য আঁচড় কাটলে এবং রক্তক্ষরণ না হলে ক্ষতস্থানের চিকিৎসা এবং যত দ্রুত সম্ভব অ্যান্টি-র‌্যাবিস ভ্যাকসিন এক ডোজ নিতে হবে। একাধিক কামড় বা আঁচড় এবং কামড়ের অবস্থান যদি মুখে, ঘাড়ে, মাথায়, হাতে হয় এবং প্রাণীটি যদি জলাতঙ্ক আক্রান্ত থাকে অথবা জলাতঙ্ক আক্রান্ত হিসেবে সন্দেহ করা হয়, তাহলে অবশ্যই অ্যান্টি-র‌্যাবিস ভ্যাকসিনের পাশাপাশি ইমিউনোগ্লোবিলিন টিকাও নিতে হবে।

জলাতঙ্কের প্রধান বাহক পথকুকুরের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ ও জলাতঙ্ক রোগের টিকা দিতে ২০২১ সালের জুন মাসে একটি প্রকল্পের অধীনে কাজ শুরু করে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয় (সিভাসু)। কুকুরকে হত্যা না করে চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ এবং রোগমুক্ত করাই ছিল এ প্রকল্পের লক্ষ্য। অস্ত্রোপচারের পর সুস্থ হলেই এসব কুকুরকে ছেড়ে দেওয়া হতো।

বিশ্ববিদ্যালয়টির ফিজিওলজি ও প্রাণিকল্যাণ বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ রাশেদুল আলমের নেতৃত্বে সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক তুলি দেসহ শল্যচিকিৎসকরা ‘নিউটার (বন্ধ্যাকরণ)’, ‘ভ্যাকসিন (জলাতঙ্ক টিকা)’ প্রদানের কাজও করেছেন।

 

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

টাকা দিয়ে কেনা সনদের তালিকা পেয়েছি: হারুন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)’র অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানসহ বোর্ডের অন্যান্য কর্মকর্তারা বছরের পর বছর টাকার বিনিময়ে সনদ ও মার্কশীট বিক্রি করেছেন। বিক্রি করা এসব সনদগুলো কিভাবে শনাক্ত করা যায় সেই তথ্য শামসুজ্জামান আমাদের দিয়েছেন। আমরা সেই তথ্য বোর্ডের কাছে দিবো তারা সেগুলো বাতিলের ব্যবস্থা নেবে।

শনিবার (১১ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।

অতিরিক্ত কমিশনার হারুন বলেন, কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামান পাঁচ হাজার মানুষকে জাল সনদ দিয়েছেন। এমনকি তার সঙ্গে বোর্ডের বহু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও জড়িত রয়েছেন। শামসুজ্জামান রিমান্ডে টাকার বিনিময়ে বিক্রি করা সনদ বাতিলের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। যার মাধ্যমে সনদ শনাক্ত করে বাতিল করা যাবে। তাই আমরা এই তথ্য কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সচিব ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানাবো। পাশাপাশি বুয়েটের এক্সপার্টদের যুক্ত করে এই কাজটি কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদিক ও দুদক কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে শামসুজ্জামান সনদ বিক্রি করে আসছিলেন। তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে ডিএমপির এই অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, আপনারা জানেন গত ১ এপ্রিল রাজধানীর কাফরুল এলাকায় অভিযান চালিয়ে সিস্টেম অ্যানালিস্ট শামসুজ্জামানকে গ্রেফতার করা হয়। তখন রমজান মাসের শেষের দিকে। শামসুজ্জামান আমাদের কাছে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় অনেক সাংবাদিক ফোন দিয়ে ঈদের বোনাস চেয়েছিল। এর প্রেক্ষিতে আমরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। সে খোলামেলাভাবে জানিয়েছে, আমার পদে থাকতে অনেককে ম্যানেজ করতে হয়েছে। সে কারণেই ম্যানেজ করে চলতে হয়েছে। তাকে দ্বিতীয় রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদে সে জানিয়েছে কোন সাংবাদিক কখন, কিভাবে, কত টাকা দিয়েছে। আমাদের ডিবির কর্মকর্তারা যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। কোনো সংবাদিক যদি চায় শামসুজ্জামানের মুখোমুখি বসে কথা বলতে চায় আমরা তাকে সেই সুযোগ দিব। আমরা মনে করি আমরা অন্যায়ভাবে কেউ হয়রানির শিকার হোক সেটা আমরা চাই না। পাশাপাশি দুদকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আমরা তাদেরকেও বলেছি, দুদক সম্পর্কে শামসুজ্জামান যে তথ্য দিয়েছে। চাইলে আপনারাও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। যাদের নাম বলেছে সবাইকে কথা বলার সুযোগ দিবো।

দুদক কর্মকর্তারা শামসুজ্জামানের সঙ্গে কিভাবে যুক্ত হলেন জানতে চাইলে হারুন বলেন, শামসুজ্জামান মনে করেছে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের চারপাশে দালাল প্রকৃতির লোক থাকে। পাশাপাশি সাংবাদিক ও দুর্নীতি দমন কমিশনের অনিয়ম তদন্ত করে। তারাও যদি তার পাশে থাকে তাহলে তার যে সনদ বাণিজ্যটা বড় আকারে করতে পারে। সে কারণেই সে এই নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। ফলে শামসুজ্জামানের সহযোগী ফয়সালকে নিয়ে একটি আলাদা বাসায় বসে সনদ তৈরি করত। যার কারণে বিভিন্ন মানুষ তার সঙ্গে যোগাযোগ করে। এই অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের সবার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রসঙ্গত, সিস্টেম অ্যানালিস্ট একেএম শামসুজ্জামানকে গ্রেফতারের পর গত ২১ এপ্রিল কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলী আকবর খানের স্ত্রী সেহেলা পারভীনকে চক্রের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়। স্ত্রী জড়িত থাকার বিষয়টি সামনে আসার পরে চেয়ারম্যান আলী আকবরকে ওএসডি করে প্রজ্ঞাপন জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;