প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের অনুদান

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস


স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন

পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন

  • Font increase
  • Font Decrease

করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে একদিনের বেতনের সমপরিমাণ ১ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকার অনুদান দিয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ।

বুধবার (১৫ এপ্রিল) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের পক্ষে প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমেদ কায়কাউসের কাছে অনুদানের চেক হস্তান্তর করেন।

এ সময় পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের সচিব মো. রেজাউল আহসান উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর এক মাসের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ এবং পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ এবং এর আওতাধীন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (বিআরডিবি), সমবায় অধিদপ্তর, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) বগুড়া, বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বাপার্ড), বাংলাদেশ দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় ইউনিয়ন লি:( মিল্ক ইউনিয়ন), ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ সমবায় ব্যাংক লি., পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশন এবং পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একদিনের বেতনের সমপরিমাণ ১ কোটি ১৮ লাখ ৫৯ হাজার ৬শ’ ১০ টাকার একটি চেক হস্তান্তর করা হয়।

চেক হস্তান্তরের সময় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে সংযুক্ত থেকে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় ত্রাণ তহবিলে মানবিক সহায়তা দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানান।

   

দৃষ্টিহীনতা বাধা হতে পারেনি মেধাবী ঐতির



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
দৃষ্টিহীনতা বাধা হতে পারেনি মেধাবী ঐতির

দৃষ্টিহীনতা বাধা হতে পারেনি মেধাবী ঐতির

  • Font increase
  • Font Decrease

‘অন্ধজনের কিবা রাত্রি, কিবা আবার দিন, সুন্দর এই পৃথিবী হায়রে রইলো অচিন'। না ! পৃথিবী দেখা তার অচিন হলেও সকল প্রতিবন্ধকতাকে পেছনে ফেলে আলোকিত হওয়ার জন্য যুদ্ধে নেমে জয়ী হয়েছেন ঐতি রায় (১৫)।

জীবনযুদ্ধে জয়ী হওয়ার স্বপ্নে বিভোর দৃষ্টি প্রতিবন্ধী এই শিক্ষার্থী বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার হলদিবুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করেছেন। মায়ের শ্রুতি লেখকের সহায়তায় পড়াশোনা এবং একই এলাকার অষ্টম শ্রেণির বিজয়া হালদার নামে এক শিক্ষার্থীর সহযোগিতা নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ ৪ দশমিক ৩৯ পেয়ে 'এ' গ্রেডে উত্তীর্ণ হয়েছে ঐতি রায়।

সোমবার (১৩ মে) সরেজমিনে গিয়ে মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের হলদিবুনিয়া গ্রামের বালুর মোড় এলাকায় ঐতির বাড়িতে কথা হয় তার বাবা অনুপম রায়ের সাথে। আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, জন্ম থেকে দৃষ্টিহীন তার মেয়ে এমন ফল করবে ভাবতে পারেননি। ছোটবেলা থেকে তার মেয়ে পড়াশোনার ব্যাপারে খুবই আগ্রহী। আমরা সেভাবেই তাকে যত্ন করে স্কুলে ভর্তি করে পড়াশোনা করাই।

একমাত্র মেয়েকে তার মা শংকরি রায় প্রথমে শ্রুতি লেখনির মাধ্যমে বাড়িতে পড়াশোনা শেখায়। এভাবে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় তার মেয়ে। পরীক্ষার হলে ঐতি রায় মুখস্থ বলতো আর একই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী বিজয়া হালদার তা পরীক্ষার খাতায় লিখত। এভাবে সে সবগুলো পরীক্ষা দিয়ে এসএসসি পাস করেছে।

ঐতির রায়ের মা শংকরি রায় বলেন, ছোটবেলা থেকে ঐতির পড়াশোনার আগ্রহ দেখে তাকে স্কুলে নিয়ে যেতাম। ওর জীবনের স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা করবেই। এখন সে এসএসসি পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছে। আমরা খুবই খুশি, শ্রষ্টার কাছে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।

তবে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো না। মেয়েকে অনেকদূর পড়াশোনা করাতে চান । এজন্য ঐতির পরিবার সরকারের সহযোগিতা চান।

এ বিষয়ে মোংলা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, দৃষ্টিহীন ঐতি রায়ের এমন প্রতিভা দেখে অবাক হয়েছি। মেধা না থাকলে এমন ফল করা কোনভাবেই সম্ভব না। ঐতির চোখের চিকিৎসা জরুরি। এছাড়া সে যাতে নিয়মিত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে, সে ব্যাপারে উপজেলা প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাথে নিয়ে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

‘গেটলক’ সিস্টেমে চলছে আন্তঃজেলা বাস, ফিরেছে শৃঙ্খলা



অভিজিত রায় কৌশিক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর যানজট নিরসনে চালু করা গেটলক সার্ভিসের নিয়ম মেনেই চলেছে আন্তঃজেলা বাস। ফলে রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালকেন্দ্রিক যানজট কিছুটা নিরসন হয়েছে। ভিন্ন রূপ এসেছে বাস চলাচলে। যত্রতত্র যাত্রী উঠানামার বিপরীতে নিয়ম মেনেই নির্দিষ্ট স্থানে থামছে বাস। ফলে রাজধানীর ভেতরে অবস্থানরত বাস পয়েন্টগুলোর ট্রাফিক ব্যবস্থায় ফিরেছে শৃঙ্খলা।

তবে শৃঙ্খলা ফিরলেও এই নিয়মে চলাচলে কিছুটা অসন্তোষ প্রকাশ করছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তাদের মতে, মহাখালী থেকে খিলক্ষেত বাস পয়েন্টের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থানরত যাত্রী পরিবহন করে যে বাড়তি আয়ের সুবিধা পেতেন সেটা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

আলম এশিয়া পরিবহনের চালকের সহকারী দেলোয়ার বলেন, বর্তমানে দূরপাল্লার গাড়িগুলোতে গেটলক নিয়ম হয়েছে। এখন টার্মিনাল থেকে গাড়িতে যাত্রী তোলার পর আমরা ওয়েবিলে যাত্রীর সংখ্যা লিখে মালিক পক্ষের স্বাক্ষর নিয়ে গাড়ি ছাড়ছি। রাস্তার মাঝ থেকে যাত্রী তোলার কোন সুযোগ নেই। ওয়েবিলের যাত্রীর থেকে গাড়িতে বেশি যাত্রী থাকলে জরিমানার নিয়ম করেছে। তাই এখন মহাখালী থেকে যাত্রী তোলা হলে গাড়ির গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। আবার খিলক্ষেত কাউন্টারে গিয়ে গেট খোলা হয়। মাঝপথে কোন যাত্রী তোলার সুযোগ নেই।

ছবি: মহাখালী বাস টার্মিনাল

তিনি বলেন, আগে আমরা মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে খিলক্ষেত পর্যন্ত যেতে যেতে ১৫০০ থেকে ৩ হাজার টাকার যাত্রী নিতে পারতাম। এর কারণে মালিকপক্ষও কিছুটা লাভবান হতো, আবার আমাদেরও কিছুটা বাড়তি আয় হতো। কিন্তু এখন তো আর সেই সুযোগ নেই। আমাদের প্রতি ট্রিপের উপর একটা পার্সেন্টেজ দেয়া হয়। বেশি টাকা রোজগার করতে পারলে আমরা বেশি পার্সেন্টেজ পাই। মালিক পক্ষ লাভবান হলে আমরা লাভবান হয়। এখন আর সেই সুযোগটা পাবো না।

শুধু দেলোয়ারই না। একই ধরনের অসন্তোষের কথা জানান মহাখালী বাস টার্মিনালে কর্মরত অন্য পরিবহন শ্রমিকেরাও।

এদিকে, নতুন এই নিয়মে শৃঙ্খলা ফেরার কারণে সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করলেও কতদিন নিয়ম কার্যকর থাকবে সেটা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন। তাদের ভাষ্য, প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সিস্টেম চালু করা হলেও প্রথমে কার্যকর থাকলেও কিছুদিন যেতেই আবারও নিয়মের বাইরে চলে যায় সবকিছু। ফলে কয়েকদিনের ব্যবধানেই ফিরে আসে আগের রূপ।

আবির আহমেদ নামের এক যাত্রী বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশে তো নতুন নতুন কত নিয়ম হয়। প্রতিটা নিয়মের শুরুতে কঠোর অবস্থান দেখা যায়। কিন্তু কিছুদিন পর নিয়ম হারিয়ে যায়। কেউ আর নিয়ম মানে না। এই নিয়মগুলো যদি সঠিকভাবে পালন করা হতো তাহলে দেশের সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসতো।

তিনি বলেন, মহাখালী বাস টার্মিনালে যে নিয়ম চালু হয়েছে সেটা যদি ঠিকমতো কার্যকর থাকে, তাহলে এই সড়কের শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। কোন যানজট থাকবে না।

ছবি: বাসগুলো ‘বাস বে’- এর মাধ্যমে যাত্রী উঠানামা করছে

অন্য এক যাত্রী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, নিয়ম হয়েছে তবে সেই নিয়ম কতদিন থাকবে সেটাই কথা। যদি আইন শৃঙ্খলা বাহিনী নিয়মিত তদারকি করে এবং নিয়ম মানতে বাধ্য করে তাহলে এই সড়কে চলাচলকারী সাধারণ মানুষের ভোগান্তি কমবে।

এদিকে সোমবার (১৩ মে) রাজধানীর মহাখালী বাস টার্মিনালে সরেজমিনে দেখা গেছে, যাত্রীরা বাসে ওঠার পর গাড়ি ছাড়ার আগ মুহূর্তে মালিকপক্ষের কাছ থেকে ওয়েবিল সাক্ষর করছেন পরিবহন শ্রমিকেরা। এরপর গাড়ির গেট লক করে টার্মিনাল থেকে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যাচ্ছে বাস। ওয়েবিল স্বাক্ষরের পর কোন যাত্রী গাড়িতে উঠলেও তাদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।

এছাড়াও টার্মিনালে অবস্থিত কন্ট্রোল রুম থেকে মাইকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা দিতেও শোনা গেছে। সেই সঙ্গে কোন পরিবহন প্রধান সড়কে পার্কিং করলে মাইকের মাধ্যমে তাদের বার বার স্থান ত্যাগের নির্দেশ দেওয়া এবং স্থান ত্যাগ না করলে চালক এবং চালকে সহকারীকে কন্ট্রোল রুমে ডেকে পাঠানো হচ্ছে।

এছাড়াও রাজধানীর মধ্যে চলাচলকারী লোকাল বাসগুলো ‘বাস বে’- এর মাধ্যমে যাত্রী উঠানামার চিত্রও দেখা গেছে।

এর আগে গতকাল রোববার (১২ মে) বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর যানজট নিরসনে আন্তঃজেলা বাসের ‘গেটলক’ সিস্টেম চালু, কার্যক্রম উদ্বোধনে করেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিকের গুলশান বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) আব্দুল মোমেন। এ সময় পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন এই ডিসি। সেই সঙ্গে যেখানে সেখানে হাত নাড়িয়ে বাসে না ওঠার জন্য যাত্রীদেরও অনুরোধ করেন তিনি।

গেটলক সিস্টেম প্রসঙ্গে (ডিএমপি) ট্রাফিকের গুলশান বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) সায়েম বলেন, আন্তঃজেলার যেসব বাস মহাখালী থেকে ছেড়ে যাবে সেগুলোতে কতজন যাত্রী আছে মালিক সমিতির লোকজন তা গুনে রাখবে। পরবর্তীতে কাকলী স্টপেজে বাস থামিয়ে দেখা হবে মহাখালী থেকে যে যাত্রী ছিল সেটাই আছে কিনা। এরপর কুর্মিটোলা, খিলক্ষেত এবং সর্বশেষ আব্দুল্লাহপুর স্টপেজ পর্যন্ত মালিক সমিতির লোক দ্বারা চেক করা হবে। এসব স্টপেজ ব্যতীত কোথাও থেকে যাত্রী ওঠানো যাবে না।

তিনি বলেন, পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ প্রতিনিয়ত এটি তদারকি করবে। কোনো পরিবহন এই নিয়ম অমান্য করে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী উঠানামা করলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

এর আগে শনিবার রাতে ট্রাফিকের গুলশান বিভাগের ফেসবুক পেজ থেকে এক পোস্টে জানানো হয়, মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে বাস ছেড়ে প্রথমে কাকলী, তারপর কুর্মিটোলা, খিলক্ষেত এবং সর্বশেষ আব্দুল্লাহপুর থেকে যাত্রী নিয়ে নিজ নিজ গন্তব্যে যাবে। যেসব পরিবহন এই নিয়ম অমান্য করে যত্রতত্র বাস থামিয়ে যাত্রী ওঠানামা করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেসবুক পোস্টে যত্রতত্র হাত নাড়িয়ে বাসে না ওঠার জন্য যাত্রীদেরও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও পোস্টে উল্লেখ করা হয়।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

চট্টগ্রামে সেরাদের সেরা প্রজ্ঞা



তাসনীম হাসান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
মা ঊমা দাশের সঙ্গে প্রজ্ঞা চৌধুরী। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

মা ঊমা দাশের সঙ্গে প্রজ্ঞা চৌধুরী। ছবি: আনিসুজ্জামান দুলাল

  • Font increase
  • Font Decrease

মুখজুড়ে উপচে পড়া হাসির ঢেউ। চোখে খুশির ঝিলিক। ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে শত শত শিক্ষার্থী আর অভিভাবকদের থিকথিকে ভিড়েও আলাদা করে ধরা পড়ছিল ঊমা দাশের উচ্ছ্বাসটা। এমনটা হবেই বা না কেন? মা দিবসে-এই মাকে যে জীবনের অন্যতম সেরা উপহারটা দিয়েছে মেয়ে প্রজ্ঞা চৌধুরী। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এবার সেরাদের সেরা হয়েছে মায়ের বড় আদরের এই বড় মেয়ে। তাই তো মায়ের পৃথিবীজুড়ে এত এত উৎসব, রাজ্য-জয়ের আনন্দ।

ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে দিবা শাখায় বিজ্ঞান বিভাগে পড়ত প্রজ্ঞা। ছোটকাল থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিতি ছিল প্রজ্ঞার। সেটা বোঝা যাবে ক্লাসে তার ক্রমিক নম্বরের দিকে তাকালেও। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে কখনো দ্বিতীয় হয়নি সে। সব শ্রেণিতেই প্রথম হওয়া এই কিশোরী এবার এসএসসি পরীক্ষাও বেশ ভালোভাবেই দিয়েছিল। তাই বলে পরীক্ষায় পাস করা ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে সেরা হয়ে যাবে ভাবেনি প্রজ্ঞা নিজেও। ১ হাজার ৩০০ নম্বরের মধ্যে সে পেয়েছে ১ হাজার ২৭৭ নম্বর। অর্থাৎ মাত্র ২৩ নম্বর কাটা পড়েছে তার। শিক্ষাবোর্ড যদিওবা নম্বরের ভিত্তিতে কে সেরা সেটি প্রকাশ করে না। তবে বোর্ডের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন-প্রজ্ঞাই এবার সবচেয়ে বেশি নম্বর পেয়েছে।

এমন সাফল্যের ‘রেসিপি’ কি? জানতে চাইলে একটু হাসল প্রজ্ঞা। তারপর বার্তা২৪.কমের কাছে খুলে দিল গল্পের ঝাঁপি, ‘একেবারেই সহজ। কোনো চাপ নিইনি। অস্থিরও হইনি। একেবারে রাত জেগে পড়া বলতে যা বোঝায় তা কখনো আমি করিনি। সর্বোচ্চ রাত ১১টা পর্যন্ত পড়েছি। এরপরই ঘুম। ভোরে ওঠে আবার পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ততা। পরীক্ষার সময়ও নিজেকে শান্ত রেখেছি।’

প্রতিটি পরীক্ষা দুর্দান্ত হয়েছিল প্রজ্ঞার। আশা ছিল ভালো কিছু হবে। কিন্তু প্রজ্ঞার আশার চেয়েও দারুণ কিছু হলো। প্রজ্ঞা তাই তো বলল, ‘পরীক্ষা খুব ভালো হয়েছিল, সেরার তালিকায় এক থেকে পাঁচের মধ্যে থাকতে পারলেই জীবন ধন্যি হয়ে যাবে ভেবেছিলাম। সৃষ্টিকর্তার কাছে বারবার সেটিই চেয়েছি। কিন্তু তাই বলে একেবারে বোর্ড সেরা হয়ে যাব ভাবিনি। এখন তাই আনন্দটা বহুগুণ বেড়ে গেছে।’

মা ঊমা দাশও মেয়ে দারুণ কিছু করবে সেই আশায় ছিলেন, তবে এতটা ভালো কিছু হবে কল্পনা করেননি। মেয়ের পাশে বসে এই মা বললেন, ‘মেয়েকে কখনো পড়ালেখা নিয়ে বলতে হয়নি। সে নিজে নিজেই পড়াশোনাটা সবসময় ঠিক রেখেছে। আশায় ছিলাম মেয়ে এসএসসিতে ভালো কিছু করবে। কিন্তু সবার সেরা হবে চিন্তা করিনি। এখন বুঝতেই পারছেন, আমাদের খুশির আনন্দটা কতগুণ বেড়ে গেছে।’

আনন্দে আপ্লুত মা-মেয়ে

প্রজ্ঞার সাফল্যের পেছনে মায়ের অবদানটাই বেশি। অবশ্য কত মা-ই তো তাদের জীবনের সেরা সময়টা ব্যয় করে দেন সন্তানের জন্য। তবে ঊমা দাশের সংগ্রামটা একটু বেশিই। নিজের কর্মস্থলে যাওয়া আশায় প্রতিদিন তাকে অন্তত ৪০ কিলোমিটার গাড়িতে চড়ার ধকল সইতে হয়। ভোরে ঘুম থেকে উঠে মেয়ে আর ছেলেকে প্রস্তুত করে বিদ্যালয়ে পাঠানো, তারপর নিজের কর্মস্থলের উদ্দেশে দৌড়। বিকেলে ফিরে আবার সংসারের কাজে ডুবে যাওয়া। তারই ফাঁকে ফাঁকে সন্তানদের দেখভাল। অবশ্য মায়ের সেই সব পরিশ্রম-ত্যাগেরা আজ হলো পুরষ্কৃত। তাই তো এই গর্বিত মা বললেন, ‘মেয়ের জন্য কষ্ট করছি, মেয়েও তো ভালো ফল উপহার দিল। এমন কিছু পাওয়ার আশাতেই তো এত পরিশ্রম করে যাওয়া। আর যখন সবাই বলছে মা-মেয়ে দুজনকেই অভিনন্দন, তখন কি যে আনন্দ লাগছে বলে বোঝাতে পারব না।’

দুই সন্তানকে নিয়ে চট্টগ্রামের আনোয়ারার পূর্ব বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ঊমা দাশ আর ইপিজেডে একটি পোশাক কারখানায় জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত সুচরিত চৌধুরীর সংসার। প্রজ্ঞার ছোট ভাই প্রাচুর্য চৌধুরী সেন্ট প্ল্যাসিডস্ স্কুল এন্ড কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছে। গ্রামের বাড়ি রাউজানে হলেও পড়াশোনা আর মা-বাবার কর্মস্থলের জন্য নগরীর পাথরঘাটাতেই থাকা হয় প্রজ্ঞাদের।

এমন ফলের পরেও পা মাটিতেই রাখছে প্রজ্ঞা। ভবিষ্যতে কি হতে চাও-এমন প্রশ্নের উত্তরে খুব নিচু গলায় বলল, ‘এখনো তেমন কিছু ভাবিনি। অনেকেই চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্নের কথা বলেন, কেউ বলেন প্রকৌশলী হওয়ার। আসলে আমি এখনো তেমন কিছু ঠিক করে রাখিনি। উচ্চমাধ্যমিকে পড়ার সময়েই ঠিক করব কোন পথে এগোতে চাই।’

মেয়েকে আপাতত হাতের কাছেই রাখতে চান মা-বাবা। প্রজ্ঞার মা ঊমা বললেন, ‘আমরা দুজন যেহেতু চট্টগ্রামে চাকরি করি, মেয়েকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চট্টগ্রাম কলেজেই পড়াতে চাই। এরপর না হয় নিজের মতো করে পড়বে।’

সামনে যারা এসএসসি পরীক্ষা দেবে তাদের জন্যও নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে ছোট্ট একটা পরামর্শ দিয়েছে প্রজ্ঞা। বলল, ‘শুরুতে লক্ষ্যটা ঠিক করতে হবে। তারপর সেই লক্ষ্য ধরে মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে। তবে কোনোভাবেই বেশি চাপ নেওয়া যাবে না। অবশ্য যতটুকু পড়বে, ততটুকু ভালোভাবেই পড়তে হবে। তাহলেই হবে।’

আবার ফেরা যাক মা ঊমা দাশের কাছে। মেয়ের সাফল্যে গর্বে বুক ভরে যাচ্ছে মায়ের। একদিন এই মা স্বপ্ন দেখতেন মেয়ের সাফল্যের কল্যাণে তাকেও সবাই চিনবেন, তার ছবিও ছাপা হবে পত্রিকায়-দেখানো হবে টিভিতে। এখন প্রজ্ঞার সাফল্যের পর অনেক সাংবাদিকই ছবি তুলছেন মা-মেয়ের, নিচ্ছেন সাক্ষাৎকারও।

ঊমা দাশের স্বপ্নটা খুব তাড়াতাড়ি সত্যি হয়ে গেল, দারুণভাবে সত্যি হয়ে গেল…

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;

সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে সেনাপ্রধান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে দ্যা ল্যান্ড ফোর্সেস প্যাসিফিক সিম্পোজিয়াম অ্যান্ড এক্সপোজিশন-২০২৪ এ অংশগ্রহণ করতে সরকারি সফরে যুক্তরাষ্ট্রে গেছেন সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ।

সোমবার (১৩ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)।

আইএসপিআর জানায়, সেনাবাহিনী প্রধান সফরকালে যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াই অঙ্গরাজ্যে আগামী ১৪-১৬ মে পর্যন্ত অনুষ্ঠিতব্য দ্যা ল্যান্ড ফোর্সেস প্যাসিফিক সিম্পোজিয়াম অ্যান্ড এক্সপোজিশন-২০২৪ এ অংশগ্রহণ করবেন। এ সিম্পোজিয়ামের লক্ষ্য হলো ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের স্থল বাহিনীগুলোর মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে পারস্পরিক আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং পেশাদার সম্পর্ক উন্নয়ন ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা।

সিম্পোজিয়ামে অংশগ্রহণের পাশাপাশি সেনাবাহিনী প্রধান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও অস্ট্রেলিয়ার বাহিনী প্রধানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে আগত সেনাবাহিনী প্রধান ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন এবং পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করবেন।

সিম্পোজিয়াম শেষে সেনাবাহিনী প্রধান আগামী ১৯ মে দেশে ফিরবেন।

  বাংলাদেশে করোনাভাইরাস

;