সুকুমার রায়ের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

, শিল্প-সাহিত্য

নিউজ ডেস্ক, বার্তা ২৪ | 2023-10-06 12:13:30

শিশুদের আনন্দ দিতে তিনি লিখেছেন, 'চলে হনহন/ ছোটে পনপন/ ঘোরে বনবন/ কাজে ঠনঠন/ বায়ু শনশন/ শীতে কনকন/ কাশি খনখন/ ফোঁড়া টনটন/ মাছি ভনভন/ থালা ঝন ঝন।'

শৈশবে আমাদের মুখে মুখে ছিলো যে ছড়া- সেটিও লিখেছেন তিনি, 'বাবুরাম সাপুড়ে,/ কোথা যাস বাপুরে/ আয় বাবা দেখে যা,/ দুটো সাপ রেখে যা ...।'

লিখেছেন, 'হলদে সবুজ ওরাং ওটাং/ ইট পাটকেল চিত্পটাং/ গন্ধ গোকুল হিজিবিজি/ নো অ্যাডমিশান ভেরি বিজি।'

সেই প্রখ্যাত শিশুসাহিত্যিক এবং উপমহাদেশের সাহিত্যে ‘ননসেন্স ছড়া’র প্রবর্তক সুকুমার রায়চৌধুরীর আজ মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বর মাত্র ৩৭ বছর বয়সে কালাজ্বরে আক্রান্ত হয়ে সুকুমার রায় মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি একাধারে লেখক, ছড়াকার, রম্যরচনাকার, প্রাবন্ধিক, নাট্যকার ও সম্পাদক। সুকুমার রায় জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরীর সন্তান এবং তার ছেলে খ্যাতিমান বাঙালি চলচ্চিত্রকার সত্যজিৎ রায়।

সুকুমারের লেখা কবিতার বই ‘আবোল-তাবোল’, গল্প ‘হ-য-ব-র-ল’, গল্প সংকলন ‘পাগলা দাশু’ এবং নাটক ‘চলচ্চিত্তচঞ্চরী’ বিশ্বসাহিত্যে সর্বযুগের সেরা ‘ননসেন্স’ ধরনের ব্যঙ্গাত্মক শিশুসাহিত্যের অন্যতম বলে মনে করা হয়। কেবল ‘অ্যালিস ইন ওয়ান্ডারল্যান্ড’ ইত্যাদি কয়েকটি মুষ্টিমেয় ধ্রুপদী সাহিত্যই যাদের সমকক্ষ। মৃত্যুর বহু বছর পরও তিনি বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিকদের শীর্ষে রয়েছেন।

সুকুমার রায়ের জন্ম ১৮৮৭ সালের ৩০ অক্টোবর কলকাতায়। মা বিধুমুখী দেবী ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের দ্বারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের মেয়ে। তার আদি নিবাস বৃহত্তর ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জে। সুকুমার ছিলেন ব্রাহ্মসমাজের সংস্কারপন্থি গোষ্ঠীর এক তরুণ নেতাও। তিনি ‘অতীতের কথা’ নামে একটি কবিতা লেখেন, যা ব্রাহ্মসমাজের ইতিহাসকে সরল ভাষায় ব্যক্ত করে।

কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে ১৯০৬ সালে রসায়ন ও পদার্থবিদ্যায় বি.এসসি.(অনার্স) করার পর সুকুমার মুদ্রণবিদ্যায় উচ্চতর শিক্ষার জন্য ১৯১১ সালে ইংল্যান্ডে চলে যান সুকুমার রায়। সেখানে আলোকচিত্র ও মুদ্রণ প্রযুক্তির ওপর পড়াশোনা করেন এবং কালক্রমে তিনি ভারতের অগ্রগামী আলোকচিত্রী ও লিথোগ্রাফার হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। ১৯১৩ সালে সুকুমার কলকাতায় ফিরে আসেন।

সুকুমারের ইংল্যান্ড থেকে ফেরার অল্প কিছু দিনের মধ্যেই উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যু হয়। উপেন্দ্রকিশোর জীবিত থাকতে সুকুমার লেখার সংখ্যা কম থাকলেও উপেন্দ্রকিশোরের মৃত্যুর পর সন্দেশ পত্রিকার সম্পাদনার দায়িত্ব সুকুমার নিজের কাঁধে তুলে নেন। শুরু হয় বাংলা শিশুসাহিত্যের এক নতুন অধ্যায়।

এ সম্পর্কিত আরও খবর