ক্যারিবীয় অঞ্চলে বেরিলের আঘাত, নিহত ৬

, আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম | 2024-07-03 12:04:07

আটলান্টিক মহাসাগরে সৃষ্ট প্রবল শক্তিশালী হারিকেন বেরিলের আঘাতে এখন পর্যন্ত ছয়জন নিহেতের খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও বেরিলের আঘাতে দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলের গ্রেনাডাইন দ্বীপপুঞ্জে প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়েছে।

বুধবার (০৩ জুলাই) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-ক্যারিবীয় অঞ্চলের উইন্ডওয়ার্ড দ্বীপপুঞ্জে আঘাত হানার পর হারিকেন বেরিল আরও শক্তিশালী হয়ে ক্যাটাগরি-পাঁচ মাত্রার ঝড়ে রুপ নিয়েছে। বেরিলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের ফলে দুর্ভোগে পড়েছেন এসব অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ।

হারিকেন বেরিল দক্ষিণ-পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলে আঘাত হানার পর আরও শক্তিশালী হয়ে জ্যামাইকার দিকে ধেয়ে আসছে, বেরিলের আঘাতে এই অঞ্চলে কমপক্ষে ছয়জন নিহত হয়েছে এবং গ্রেনাডাইন দ্বীপপুঞ্জের একটি দ্বীপে প্রায় ৯০ শতাংশ বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়েছে।

বেরিল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তীব্রতা হারাতে শুরু করবে বলে আশা করা হয়েছিল৷ তবে স্থানীয় পূর্বাভাসকারীরা বলেছেন, এটি এখনও অত্যন্ত বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। এটি বুধবার জ্যামাইকার কাছাকাছি বা তার ওপর দিয়ে এবং বৃহস্পতিবার কেম্যান দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি চলে যাবে।

ক্যারিবীয় অঞ্চলে বেরিলের আঘাত/ছবি: সংগৃহীত

বিজ্ঞানীরা ঝড়ের দ্রুত শক্তিশালী হওয়ার কারণ হিসেবে মানব সৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তনকে উল্লেখ করেছেন।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি) বলেছে, বেরিল এখন সরাসরি জ্যামাইকার দিকে ধেয়ে আসছে। ভারী বৃষ্টিপাত এবং ব্যাপক ঝড়ের ফলে দেশটিতে প্রাণহানীর আশঙ্কা রয়েছে।

এনএইচসির পরিচালক মাইকেল ব্রেনান এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে বলেছেন, আমরা জ্যামাইকা সম্পর্কে সবচেয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। কেননা, হারিকেন এখন এই দ্বীপের কাছাকাছি অবস্থান করছে। এটি অল্প সময়ের মধ্যে জ্যামাইকার ওপর দিয়ে অতিক্রম করবে।

এর আগে সোমবার (০১ জুলাই) পূর্ব ক্যারিবীয় অঞ্চলে প্রবল শক্তি নিয়ে আছড়ে পড়ে হারিকেন বেরিল। বাতাসের তীব্র বেগে সেখানকার বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো ভেঙে গিয়ে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে অসংখ্য মানুষ। এছাড়া অনেক ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে সেখানকার বিমানবন্দরগুলোতে।

শক্তিশালী এই হারিকেনটি আরও শক্তি সঞ্চয় করেছে এবং ওই অঞ্চলে আগেই প্রাণঘাতী বাতাস ও বিপজ্জনক ঝড়বৃষ্টির সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছিল।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় হারিকেন সেন্টার (এনএইচসি)-এর সর্বশেষ আপডেট অনুসারে, হারিকেনটির বাতাসের সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ মাইল বা ২৪১ কিলোমিটার। এ পরিস্থিতে সেন্ট ভিনসেন্ট, গ্রেনাডাইনস এবং গ্রেনাডার জন্য হারিকেন সতর্কতা জারি করা হয়েছিল এবং জ্যামাইকার জন্য একটি হারিকেন ওয়াচ জারি করা হয়েছে। এছাড়া কাছাকাছি অঞ্চল টোবাগোতে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। সোমবার থেকে স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

অল টোবাগো ফিশারফোক অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট কার্টিস ডগলাস বলেন, 'দ্বীপের পূর্ব দিকের অংশ সবচেয়ে বেশি আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছে এবং সাগরগুলো বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে। উপকূলে জেলেদের বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে এবং তারা তাদের নৌকাগুলোকে পানি থেকে সরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছেন।'

এছাড়া দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে গ্রেনাডাও বেশ কিছু বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সম্মুখীন হয়েছে, যা দেশটির যোগাযোগ ব্যবস্থাকে ক্ষতির মুখে ফেলেছে এবং এই আবহাওয়া ও অন্যান্য সতর্কতা সংক্রান্ত সরকারি আপডেট পাওয়ার ক্ষেত্রেও মানুষকে বাধাগ্রস্ত করেছে।

এদিকে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে গ্রেনাডার প্রধানমন্ত্রী ডিকন মিচেল সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, 'আমরা এখনও বিপদমুক্ত হইনি।'

এ সম্পর্কিত আরও খবর