ভারতের তৈরি ভারী অস্ত্রের গোলা ইউরোপ হয়ে ইউক্রেনে চলে যায় বলে এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
জানা যায়, ভারতের তৈরি গোলা ইউরোপে বিক্রি ভারত। পরে সে গোলা ইউরোপের কয়েকটি দেশ হয়ে ইউক্রেনের চলে যায় আর সে অস্ত্র রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ব্যবহার করে ইউক্রেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অন্তত ১১টি সূত্র এমন তথ্য নিশ্চিত করেছে বলে জানায় রয়টার্স।
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রয়টার্সের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।
খবরে বলা হয়, এ তথ্য জানার পর রাশিয়া ভারতকে সতর্ক করেছে। যদিও ভারতের সঙ্গে রাশিয়ার সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর। এ ঘটনায় রাশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্কে ফাটল ধরতে পারে বলে খবরে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।
জানা যায়, এক বছর ধরে রাশিয়ার সঙ্গে ইউক্রেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার পর থেকে ভারী অস্ত্রের ঘাটতি পড়ে ইউক্রেনের। এরপর ঘুরপথে ইউরোপের কয়েকটি দেশ হয়ে ভারতের তৈরি গোলা পৌঁছায় ইউক্রেনে।
যদিও এটি সম্পূর্ণ বাণিজ্যিক বলে জানিয়েছে ভারত। অস্ত্র বিক্রির ঘোষিত শর্ত অনুযায়ী ব্যবহারের বাইরে এ ঘটনা ঘটেছে। এর ব্যত্যয় ঘটলে চুক্তি বাতিল হতে পারে বলে রয়টার্স প্রতিবেদনে জানায়।
এ তথ্য জানার পর মোট দু’বার ভারত ও রাশিয়ার প্রতিনিধিদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এর মধ্যে চলতি বছরের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ এবং ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তার বৈঠকে রাশিয়া এ বিষয়ে তাদের আপত্তির কথা জানায়।
তবে ভারতের ও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য রয়টার্সকে জানাতে অস্বীকার করে।
এর আগে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে এক সংবাদ সম্মেলন ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়শওয়াল সাংবাদিকের জানান, ভারত ইউক্রেনে অস্ত্র বিক্রি করে না।
রয়টার্সের অনুসন্ধানে যে তথ্য পাওয়া গেছে, সে অনুযায়ী ভারত ইউরোপীয় দেশ ইতালি ও চেক রিপাবলিকের কাছে অস্ত্র বিক্রি করে। পরে সে অস্ত্র তা ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশ মূলত স্পেন হয়ে ইউক্রেন চলে যায়।
ভারত সরকারের দুইজন এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুইজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, দিল্লি খুবই অল্প পরিমাণে ভারী গোলা উৎপাদন করে, যা ইউক্রেনের অস্ত্র আমদানির মাত্র ১ শতাংশ।
এদিকে, এ ঘটনার পর ভারত পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করছে বলে জানা গেছে। ভারতে উৎপাদিত ভারী অস্ত্রের গোলা ইউরোপীয় ইউনিয়ন হয়ে ইউক্রেন চলে যায়, এ বিষয়ে রয়টার্স জানতে চাইলে ইউক্রেন, ইতালি, স্পেন এবং চেক প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।