এই দুইটি পানীয় নিয়মিত পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় সবাইকে। কিন্তু পান করা ব্যতীত আর কী কোন কাজে প্রয়োজন হয় এই দুইটি পানীয়?
অবশ্যই হয়। অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ও আপেলের জ্যুস কিংবা রস ব্যবহার করা যায় প্রাত্যহিক নানান প্রয়োজনীয় কাজে। দেখে নিন এই দুইটি উপাদানের এমন কয়েকটি বুদ্ধিদীপ্ত ব্যবহারিতা।
ঘরকে সুবাসিত করতে কেমিক্যালযুক্ত পণ্য ব্যবহারের পরিবর্তে ঘরেই তৈরি করে নিতে পারবেন চমৎকার অ্যাপেল সেন্টেড রিফ্রেশার। অনেকের কাছেই সেন্টেড ক্যান্ডেল থাকে না। পেঁয়াজ কিংবা মাছ কাটার ফলে ঘরে আঁশটে দুর্গন্ধ হয়ে যায়। এমন সময় যদি মেহমানরা আসেন, তবে বিরাট বিপদ দেখা দেয়। তখন প্রয়োজন হবে শুধু এক কাপ আপেলের জ্যুস। ছোট একটা সসপ্যানে এক কাপ আপেলের জ্যুস, কয়েকটি তেজপাতা অথবা দারুচিনি ছেড়ে হালকা আঁচে রেখে দিতে হবে।
কিছুক্ষণের ভেতর পুরো ঘরে মিষ্টি সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পরবে। যা খুব সহজেই মন ভালো করবে ও ঘরের পরিবেশ বদলে দেবে।
মাথার ত্বকের খুশকির সমস্যা খুবই যন্ত্রণাদায়ক ও বিরক্তিকর। বাজারের সবচেয়ে ভালো অ্যান্টি-ড্যানড্রাফ শ্যাম্পুও অনেক ক্ষেত্রে খুশকি দূর করতে পারে না। আপনি যদি এমন সমস্যার ভুক্তভোগী হন, তবে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন আপেলের রস। অ্যাপল সাইডার ভিনেগার তৈরি হয় আপেল থেকে। আর আপেলে থাকে ম্যালিক অ্যাসিড। যা এক্সফলিয়েশনের কাজ করে ত্বকের শুকনো ও মৃত চামড়াকে তুলে ফেলে।
মাথার ত্বকে ব্যবহারের জন্য এক কাপ কুসুম গরম পানির সঙ্গে দুই টেবিল চামচ আপেলের রস মিশিয়ে ব্যবহার করতে হবে। এই মিশ্রণটি মাথার ত্বকে ব্যবহার করে মিনিট পাঁচেক অপেক্ষা করে এরপর শ্যাম্পু করে ফেলতে হবে।
ভিনদেশীয় নানান ধরণের মুখরোচক রান্নার রেসিপিতে প্রায়শ অ্যালকোহলের ব্যবহার দেখা যায়। স্বাভাবিকভাবেই অ্যালকোহল ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে হয়। এতে করে রান্নার প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায় না। এই সমস্যার সমাধানে ব্যবহার করুন অ্যাপল সাইডার ভিনেগার। যে সকল রান্নাতে বিয়ার কিংবা ওয়াইন ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা থাকবে, সেই সকল রান্নায় অ্যালকোহলের সমপরিমাণ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ব্যবহার করুণ। এতে রান্নার স্বাদে কোন তারতম্য দেখা দিবে না।
আবহাওয়ার পরিবর্তনে কিংবা হুটহাট জ্বরজারির সমস্যা দেখা দেয় শিশুদের। এমন ধরণের ফ্লু দেখা দিলে আপেল ও আঙ্গুরের রস পান করালে উপকার পাওয়া যায় এবং জ্বর দ্রুত সেরে যায়। আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণার তথ্য এমনটাই জানায়।
পুরো মুখে একটি ব্রণ দেখা দেওয়াই যথেষ্ট। পরবর্তিতে সেই ব্রণের জীবাণু ছড়িয়ে পুরো মুখেই ব্রণের উপদ্রব দেখা দেয়। এমনটা যেন না হয় সেজন্য ব্যবহার করতে হবে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার। এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান জীবাণুর সংক্রমণে বাধা দান করে।
মুখের ত্বকে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার ব্যবহারের জন্য এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ এসিভি মিশিয়ে তুলে কিংবা নরম ও পরিষ্কার কোন কাপড়ের সাহায্যে মুখ মুছতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে এসিভি খুব বেশি যেন ব্যবহার না করা হয়। কারণ এসিভির প্রবল অ্যাসিডিক উপাদান ত্বক পুড়িয়ে দিতে পারে।
দাঁত পরিষ্কার রাখতে যেই টুথব্রাশটি নিয়মিত ব্যবহার করছেন, সেটা পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত তো? প্রতি তিন মাস অন্তত ব্যবহৃত টুথব্রাশ পরিবর্তন করাটা নিয়ম। তবে এই সময়ের মাঝেই টুথব্রাশটিকে জীবাণুমুক্ত ও পরিষ্কার রাখার বিষয়ে সচেতন হওয়া প্রয়োজন।
টুথব্রাশকে জীবাণুমুক্ত রাখতে আধা কাপ পানিতে দুই চা চামচ এসিভি ও দুই চা চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে তাতে টুথব্রাশের ব্রাশের অংশটি ডুবিয়ে রাখতে হবে আধা ঘন্টা। এরপর মিশ্রণ থেকে তুলে পানিতে ভালোভাবে ধুয়ে নিয়ে ব্যবহার করতে হবে।