বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ক্যান্সারের মতো দুরারোগ্য ব্যাধির শিকড় বেশ অনেকটা ছড়িয়ে পড়ার পর রোগী বুঝতে পারেন। চিকিৎসকরা প্রায়ই আশ্বস্ত করে থাকেন, সঠিক সময়ে ক্যান্সার ধরা পড়লে তা নাকি সারিয়ে তোলা যায়। তবে এই রোগ এমন চুপিসারে তার ডালপালা বিস্তার করে যে, আগে থেকে তার নাগাল পাওয়া মুশকিল হয়। বিদেশে যদিও বিভিন্ন রকম পরীক্ষা করে জানার উপায় রয়েছে। কিন্তু এ দেশে তেমন পরীক্ষার চল নগণ্য এবং খরচ সাপেক্ষও বটে। বাহ্যিক বেশকিছু পরিবর্তন দেখে বোঝা যায় কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন কি না। কিন্তু ভবিষ্যতে কেউ ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন কি না, তা কি বাইরে থেকে নির্ধারণ করা সম্ভব?
সাম্প্রতিক এক গবেষণা বলছে, তা-ও সম্ভব। যাদের উচ্চতা যত বেশি, তাদের নাকি ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও তত বেশি। ‘ওয়ার্ল্ড ক্যান্সার রিসার্চ ফান্ড ইন্টারন্যাশনাল’-এর গবেষণা থেকে উঠে এসেছে বিস্ময়কর এই তথ্য। বিশেষ করে জরায়ু, প্রস্টেট, অগ্ন্যাশয়, স্তন এবং কিডনির ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তুলনায় কম উচ্চতার মানুষরা নিরাপদ।
বিশ্বের সব দেশে নাগরিকদের খাদ্যাভাস, ওজন এবং শরীরচর্চার সঙ্গে ক্যান্সারের কোনও সম্পর্ক আছে কি না, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চালানোর পর গবেষকরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। গবেষণা থেকে আরও জানা যায়, প্রতি ৫ সেন্টিমিটার উচ্চতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিডনিতে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ১০ শতাংশ। ঋতুবন্ধের আগে বা পরে স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হতে পারেন ১১ শতাংশ দীর্ঘাঙ্গী নারী। জরায়ু, অগ্ন্যাশয়, মলাশয় এবং প্রস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় যথাক্রমে আট, সাত, পাঁচ এবং চার শতাংশ।
উচ্চতার সঙ্গে ক্যান্সারের যোগ কোথায়?
গবেষক, চিকিৎসক সুজ়ানা ব্রাউন বলেন, এ ক্ষেত্রে ক্যান্সার নির্ধারণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কারও দৈর্ঘ্য নয়। মাথা থেকে পায়ের দূরত্ব। জন্মগত ভাবে পাওয়া উচ্চতায় বদল আনা সম্ভব নয়। তাই উচ্চতার পাশাপাশি আর কোন কোন লক্ষণ দেখলে টের পাবেন?
>> পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিয়েও ক্লান্তি কাটতে না চাওয়া।
>> অস্বাভাবিক হারে ওজন কমে যাওয়া।
>> দেহে যত্রতত্র ফোড়া বা টিউমর গজিয়ে ওঠা।
>> অকারণেই সারা দেহে ব্যথা, যন্ত্রণা হওয়া।
>> শ্বাসকষ্ট, কাশি, বুকের হাড়ে ব্যথা হওয়া।
>> প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তপাত হওয়া।
>> রাতের দিকে জ্বর হওয়া।