বিশেষ করে যেকোন ধরণের ফাস্ট ফুডের স্বাদ বাড়ানোর জন্য ব্যবহার করা হয় চিনি। এভাবে না চাইতেও প্রতিদিন নানানভাবে চিনি খাওয়া হয়ে যায়।
অথচ শরীর ও স্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম ক্ষতিকর উপাদানটি হলো চিনি। মনোস্যাকারাইড হিসেবে পরিচিত এই চিনির প্রধান ইউনিট হলো কার্বোহাইড্রেটস। বর্ণহীন ও ক্রিস্টাল চিনি মূলত তিনটি ভাবে পাওয়া যায়- গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও গ্যালাক্টোজ।
চিনি যেভাবেই খাওয়া হোক না কেন, এতে মোটেও কোন নিউট্রিশন ভ্যাল্যু তথা পুষ্টিগুণ ও স্বাস্থ্য উপকারিতা নেই। তার পরিবর্তে আছে ভুরি ভুরি স্বাস্থ্য অপকারিতা।
যেকোন ধরণের জাংক কিংবা ফাস্ট ফুডেই থেকে চিনি। চিনির ফ্রুক্টোজ খুব সহজেই ফ্যাটে রূপান্তরিত হয়ে শরীরে জমে যায়। মাত্রাতিরিক্ত চিনি খাওয়ার ফলে লিভারের উপরে চাপের সৃষ্টি হয়, কারণ চিনির ফ্রুক্টোজ থেকে শরীরে ফ্যাট তৈরি হয় ও জমে থাকে। বাড়তি ফ্যাট মানে বাড়তি ওজন। বেখেয়ালে চিনি গ্রহণ করার ফলে খুব সহজেই ওবেসিটির সমস্যায় আক্রান্ত হতে হয়।
অতিরিক্ত চিনি গ্রহণের ফলে রক্তে ইনস্যুলিনের মাত্রা হুট করেই অনেক বেশি বেড়ে যায়। যা পরবর্তিতে নার্ভাস সিস্টেমের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত চিনি গ্রহনে শুধু ইনস্যুলিনের মাত্রাই নয়, বেড়ে যায় রক্তচাপও। যার ফলে হার্ট স্ট্রোকের সম্ভবনা বেড়ে যায় প্রায় ৩৭ শতাংশ পর্যন্ত। অল্প বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হতে না চাইলে, যেকোন ভাবেই হোক চিনি গ্রহণের মাত্রা একেবারেই কমিয়ে ফেলতে হবে।
শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে দেওয়ার জন্য এবং প্রদাহ তৈরির জন্য অতিরিক্ত চিনি গ্রহণকে প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রতিদিন অতিরিক্ত পরিমাণ চিনি গ্রহণের ফলে শরীর ইনফেকশন ও সাধারণ ঠান্ডার সমস্যার সঙ্গে স্বাভাবিক মাত্রায় মোকাবিলা করতে পারে না। চিনি গ্রহণে অতিরিক্ত ব্যাকটেরিয়া উৎপাদনের দরুন রক্তের শ্বেত রক্তকণিকা ঠিকভাবে কাজ করতে পারে না। যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে স্বাভাবিকভাবেই দুর্বল করে তোলে।
চিনি শরীরে AGEs (Advanced Glycation End products) নামক মলিক্যুল তৈরি করে। এই মলিক্যুল ত্বকের ভেতরের ফাইবার ও ইলাস্টিনকে আক্রমণ করে। গবেষণা থেকে দেখা গেছে অতিরিক্ত চিনি গ্রহনে কোলাজেন তুলনামূলক অনেক বেশি দুর্বল হয়ে যায়, ফলে ঘনঘন ব্রণের উপদ্রব দেখা দিতে শুরু করে এবং ত্বকে শুষ্কভাব বৃদ্ধি পায়। ত্বকের এই সকল সমস্যার দরুন ত্বকের বয়স বেড়ে যায় অনেকটা।
অনেকেই হয়তো জানেন না, প্রত্যেহ চিনি গ্রহণে খুব সহজেই চিনি খাওয়ার প্রতি আসক্তি তৈরি হতে পারে। গবেষণা সুপারিশ করে, তামাক ও ড্রাগস গ্রহণের মতোই চিনি গ্রহণের প্রতি আসক্তি তৈরি হয়। এক্ষেত্রে চিনি বা মিষ্টি কিছু খাওয়ার জন্য তীব্র মনোবাসনা তৈরি হয় এবং মিষ্টি জাতীয় কোন খাবার না খাওয়া পর্যন্ত মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে।
আরো পড়ুন: যেভাবে তাড়াবেন মধ্যরাতের ক্ষুধা
আরো পড়ুন: এসিভি পানে এই ভুলগুলো কী আপনিও করছেন?