সবার ফ্রেন্ড সার্কেলেই এমন একজন থাকবে, তুলনামূলক অনেক বেশি খাবার খেলেও, কোনভাবেই ওজন বাড়ে না এবং মোটা হন না। যেখানে স্বাভাবিক খাদ্যাভাস বজায় রাখলেও অন্যদের ওজন বৃদ্ধি পেতেই থাকে।
এমন ধরণের মানুষ স্বাভাবিকভাবেই সকলের কাছে ঈর্ষার পাত্র। কীভাবে এমনটা হয় সেটা ভেবে অবাক হবার দিন শেষ হয়েছে। ঈর্ষণীয় এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করে চমকপ্রদ তথ্য জানিয়েছেন গবেষকেরা।
একেবারেই সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণার তথ্য থেকে জানা যায়, চিকন থাকার সম্পূর্ণ বিষয়টিই জেনেটিক্যাল। চিকন স্বাস্থ্য ও জেনেটিক একে-অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
আন্তর্জাতিক গবেষক দলটি বলছে- নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস কিংবা পারফেক্ট লাইফস্টাইলের জন্য নয়, সৌভাগ্যবশত বিশেষ জিনটি তাদের মাঝে থাকার ফলেই তাদের স্বাস্থ্য চিকন থাকে। তাদের গবেষণার তথ্যটি প্রকাশিত হয় PLOS Genetics এ।
বিগত কয়েক দশক ধরে মানুষের বাড়তি ওজন ও মোটা হবার কারণ , জেনেটিক্যাল পরিবর্তন, মোটা হবার সম্ভবনার উপর বেশ অনেকগুলো গবেষণা করা হলেও, চিকন থাকার রহস্য ও এ সম্পর্কিত কোন গবেষণা তেমনভাবে করাই হয়নি। যে কারণে এই বিষয়টির উপর ফোকাস করে গবেষণা করা হয়।
গবেষণাটির জন্য বিজ্ঞানীরা মার্কিন যুক্তরাজ্যের ১৬০০ জন সুস্থ ও চিকন মানুষের ডিএনএর স্যাম্পল সংগ্রহ করেন। যাদের বডি মাস ইনডেক্স (BMI) ১৮ ও তার নিচে। সেই সঙ্গে ২০০০ জন সিভিয়ার ওবিস (মাত্রাতিরিক্ত মোটা) ও ১০,৪০০ জন স্বাভাবিক ওজনের মানুষের ডিএনএর স্যাম্পলও সংগ্রহ করেন তারা।
একই সঙ্গে সকলের লাইফস্টাইল, খাবার খাওয়ার আগ্রহ, খাদ্যাভাস, খাদ্যাভাসে ডিসঅর্ডার সম্পর্কিত প্রশ্নও করেন।
সকল কিছু মিলিয়ে গবেষকেরা দেখেছেন- যারা ওবিস তাদের মাঝে মোটার সাথে সম্পর্কিত জিনের সেটের উপস্থিতি রয়েছে। একইভাবে যাদের ওজন কম ও চিকন, তাদের মাঝে মোটা হওয়া সম্পর্কিত জিনের উপস্থিতি কম ও এমন জিন রয়েছে যা স্বাস্থ্য চিকন রাখতে কাজ করে।
লন্ডনের কিং’স কলেজের নিউট্রিশন ও ডায়েটিক্স এর প্রফেসর টম স্যান্ডার্স এই গবেষণাটি সম্পর্কে তার মতামত দেন, ‘এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং ভালোভাবে নিরীক্ষিত একটি গবেষণা, যা খুব ভালোভাবেই প্রকাশ করেছে ওবেসিটির সঙ্গে জেনেটিক্সের সম্পর্ক আছে এবং চিকন স্বাস্থ্যের উপরে বিশেষ জিনের প্রভাব রয়েছে’।
সেই সঙ্গে তিনি আরও যোগ করেন, ‘তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওবেসিটি দেখা দেয় মধ্য বয়সে, যার অন্যতম কারণ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস’।
অবশ্য স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মত হলো, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও জীবন ব্যবস্থা মেনে চলতে পারলে কেউ ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে। জিনের প্রভাব যেখানে খুব কমই কাজ করবে।
আরও পড়ুন: কেন আপনি ধনিয়া পাতা অপছন্দ করেন?