খুবই স্বাভাবিক এই শারীরিক চক্রটি অনেকের কাছেই ভীষণ কষ্টকর হয়ে ওঠে তলপেটে ব্যথাভাব দেখা দেওয়ার কারণে।
আমেরিকান কংগ্রেস অফ অবস্টেট্রিসিয়ান অ্যান্ড গাইনোকলোজিস্ট এর সূত্র মতে, প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মাঝে অর্ধেক সংখ্যক নারীই পিরিয়ডকালীন সময়ে পেটে ব্যথার সমস্যায় ভোগেন। এই সমস্যাটিকে বলা হয়ে থাকে ডিসমেনোরিয়াহ (Dysmenorrhea). এর ফলে ১-৩ দিন পর্যন্ত পিরিয়ডজনিত পেটে ব্যথা বিদ্যমান থাকে।
কষ্টকর পেটে ব্যথাকে দূর করতে ওষুধ সেবন করেন অনেকেই। এই ওষুধ কিছু ক্ষেত্রে ক্ষতির কারণ হতে পারে বলে ওষুধ সেবন থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে পেটে ব্যথার সমস্যাটি কমানোর কিছু কার্যকর উপায় জানা থাকলে, সহজেই সমস্যাটি কমিয়ে আনা সম্ভব হয়।
পিরিয়ডকালীন পেটে ব্যথার ক্ষেত্রে সর্বাপেক্ষা কার্যকরি ও উপকারী পদ্ধতিটি হলো পেটে গরম ভাপ দেওয়া। এতে করে পেটের পেশী অনেকটা প্রশান্তি পায়। যার ফলে পেটে ব্যাথার প্রচন্ডতা কমে যায়। হট ব্যাগ ব্যবহার এক্ষেত্রে সবচেয়ে কার্যকরি। গরম পানি ব্যবহারের জন্য ত্বকের জন্য সহনীয় মাত্রার গরম পানি নিতে হবে। যদি হট ব্যাগ না থাকে তবে বোতলে গরম পানি ভরে ব্যবহার করতে হবে।
পেটে প্রচন্ড ব্যথা দেখা দিলে স্বাভাবিকভাবে মাথা ঘোরা, বমিভাব দেখা দেওয়া, হাত-পায়ে বল না পাওয়ার মতো উপসর্গগুলোও দেখা দেয়া শুরু করে। ফলে একই স্থানে দীর্ঘসময় শুয়ে বা বসে থাকতে হয়। এতে করে পেটের ব্যথাভাব বৃদ্ধি পায় বেশি। পেটের ব্যথার প্রাবল্য কমাতে চাইলে শারীরিক কার্যকলাপ করতে হবে। দ্রুত হাঁটা, ইয়োগা কিংবা সাইক্লিং এক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করে। এতে করে শরীর ও পেটের পেশী থেকে টেনশন দূর হয়। যা মূলত ব্যথাভাবকে প্রশমিত করতে কাজ করে।
উপরেই জানানো হয়েছে, পেটে ব্যথার সঙ্গে বমিভাব দেখা দেওয়ার বিষয়টি সম্পর্কে। এ সময়ে কোন কিছু খেতে ইচ্ছা না করলেও বমিভাব দূর করার জন্য এবং পেটে ব্যথা কমানোর জন্য হারবাল চা পান করতে হবে। গ্রিন টি কিংবা পেপারমিন্ট টি এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো কাজ করবে।
পেট ও পেটের নিচের অংশের আরামের জন্য আরামদায়ক প্যান্ট অনেকখানি ভূমিকা পালন করে। আনকমফোর্টেবল প্যান্ট অস্বস্তি তৈরি করে। যার ফলে পেটের ব্যথাভাব বৃদ্ধি পায় অনেকখানি। তবে স্বাচ্ছন্দ্য ও আরাম পাওয়া যাবে এমন প্যান্ট পরতে হবে পিরিয়ডের সময়।
ত্বক কিংবা চুলের যত্নেই নয়, পিরিয়ডকালীন পেটে ব্যথার প্রাবল্য কমাতেও এসেনশিয়াল অয়েল সমানভাবে উপকারী ভূমিকা পালন করে। এসেনশিয়াল অয়েলের অ্যানালজেসিক (Analgesic) উপাদান মানসিক ও শারীরিক প্রশান্তি আনতে কাজ করে। ব্যবহারের জন্য কয়েক ফোঁটা এসেনশিয়াল অয়েল স্কিন ও বডি ময়েশ্চারাইজারের সঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে মুখে ও হাতে ম্যাসাজ করতে হবে।
আরও পড়ুন: সকালে দাঁত না মেজে পানি পান করা যাবে?
আরও পড়ুন: গর্ভকালীন সময়ে অফিসের দায়িত্ব কাঁধে