স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ চিনি গ্রহণে শুধু ওজন বৃদ্ধি নয়, দেখা দেয় হাইপারটেনশন (উচ্চ রক্তচাপ), ফ্যাটি লিভার, ডায়বেটিস ও অন্যান্য নানাবিধ শারীরিক সমস্যা। সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হল, চিনি গ্রহণে মেটাবলিজম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়, যা পুরো স্বাস্থ্যের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে দেয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর পরামর্শ অনুযায়ী প্রাপ্ত বয়স্ক থেকে শিশু, সবারই চিনি গ্রহণের মাত্রা একেবারেই কমিয়ে ফেলা উচিৎ। কারণ চিনি খুবই অ্যাডিক্টিভ (নেশাজাত) খাদ্য উপাদান। তবে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাস থেকে চিনি সম্পূর্ণভাবে বাদ দিয়ে দেওয়া এতোটাও সহজ নয়। সরাসরি চিনি গ্রহণ করা না হলেও, মিষ্টিজাত বিভিন্ন খাবারের সাথে প্রতিনিয়তই চিনি গ্রহণ করা হয়।
ঘরে তৈরি কেক, পেস্ট্রি, শরবত, স্মুদি কিংবা অন্যান্য মিষ্টান্নতে ব্যবহার করতে হয় চিনি। তবে চিনির বিকল্প পণ্যের বিষয়ে জানা থাকলে খুব সহজেই কমিয়ে আনা সম্ভব চিনির ব্যবহার। জেনে নিন এমন চারটি উপাদান সম্পর্কে, যা মিষ্টি খাবার তৈরিতে খুব চমৎকার কাজ করবে।
চিনির বিকল্পের কথা উঠলে প্রথমে অবশ্যই বলতে হবে মধুর কথা। মধুতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণ পুষ্টি উপাদান, যা শুধু সুস্বাস্থ্যের জন্য নয় ঘরোয়া নানা ধরনের সমাধানেও চমৎকার কাজে আসে। শরবত-স্মুদি তৈরিতে, চা তৈরিতে কিংবা মাফিন, কাপকেক তৈরিতে খুব সহজেই মিষ্টিভাব আনতে মধু ব্যবহার করা যাবে। মিষ্টি স্বাদের সঙ্গে মধু থেকে পাওয়া যাবে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা রক্তচাপকে নিয়ন্ত্রণে রাখবে ও হৃদরোগের প্রবণতা কমাবে।
এটা কোকোনাট পাম সুগার হিসেবেও পরিচিত। এটা তৈরি করা হয় নারিকেলের পানি থেকে। মিষ্টি এই উপাদানটি থেকে পাওয়া যাবে আয়রন, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, জিংক ও পর্যাপ্ত পরিমাণ অ্যান্ট-অক্সিডেন্ট। কোকোনাট সুগার ও কোকোনাট নেকটার- এই উভয় উপাদানে রয়েছে আঁশ। যা রক্তে গ্লুকোজ মিশ্রিত হওয়ার পদ্ধতিকে ধীর গতির করে দেয়। যাদের ডায়বেটিসজনিত সমস্যা রয়েছে তারা এই উপাদানটি গ্রহণ করতে পারেন। সাধারণ চিনি থেকে এর গ্লাইসেমিক্স ইনডেক্স অনেক কম।
বর্তমান সময়ে জনপ্রিয়তা পাওয়া এই উপাদানটি ক্রমেই চিনির স্থান দখল করে নিচ্ছে। আমাদের দেশে যা জিরোক্যাল হিসেবে পরিচিত। উচ্চ ক্যালোরিচুক্ত চিনির বিকল্প হিসেবে স্বল্প ক্যালোরিযুক্ত স্টেভিয়া খুব সহজেই ব্যবহার করা যাবে। সবচেয়ে ভালো বিষয় হল, স্টেভিয়া রক্তে চিনির মাত্রায় কোন হেরফের করে না।
ঘন ও মিষ্টি এই সিরাপটি তৈরি করা হয় ম্যাপল গাছের রস থেকে। এতে থাকা মিনারেল, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, আয়রন, জিংক ও ম্যাগনেসিয়াম মধুর মতো ম্যাপল সিরাপকেও উপকারী প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেয়। সবচেয়ে দারুণ বিষয় হচ্ছে, ম্যাপল সিরাপ থেকে পাওয়া যাবে প্রায় ২৪ প্রকারের ভিন্ন ভিন্ন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমূহ।
আরও পড়ুন: কী রাখবেন সেহেরিতে?
আরও পড়ুন: খাবার খাওয়ার পর গ্রিন টি পানে কী হয়?