আবহাওয়া যত বেশি ঠাণ্ডা হতে শুরু করে ততবেশি আর্দ্রতা হারাতে থাকে ত্বক। মুখ ও হাত-পায়ের ত্বকের যত্নে ময়েশ্চারাইজার ও বডি লোশন ব্যবহার করা প্রয়োজন শুরু থেকেই। এক্ষেত্রে সাধারণ একটি ভুল করেন অনেকেই- মুখের ত্বকে বডি লোশনের ব্যবহার। খুব সাধারণ এই বিষয়টি সম্পর্কে অনেকেই অবগত নন। ফলে শীতকালীন সময়ে এই ভুলটি দেখে ত্বকজনিত সমস্যাও বৃদ্ধি পায়। এই ফিচারে জানানো হলো মুখের ত্বকে বডি লোশন ব্যবহার না করার তিনটি মূল কারণ।
সর্বপ্রথম যে কারণে বডি লোশন মুখের ত্বকে ব্যবহার করা উচিত নয় সেটা একেবারেই প্রাথমিক ও প্রধান একটি কারণ। আমাদের মুখ ও শরীরের অন্যান্য অংশ তথা হাত-পায়ের ত্বক একেবারেই আলাদা। তার ধরণ ও গঠনে রয়েছে বিস্তর ফারাক। ফলে তাদের যত্নের জন্যেও প্রয়োজন হয় ভিন্ন ধরনের উপাদান।
প্রথমেই আসা যাক ত্বকের টেক্সচারের ব্যাপারে। আমাদের মুখের ত্বক তুলনামূলক অনেক বেশি কোমল, মোলায়েম ও পাতলা হয়। সেই সাথে মুখের ত্বকের সিবাম (Sebum) বা তেল তৈরি হয় অন্যান্য স্থানের ত্বকের চাইতে বেশি। pH এর মাত্রা, তাপমাত্রা, পানি ও আর্দ্রতা ধারণের ক্ষমতা এবং রক্ত প্রবাহের মাত্রা সকলই ভিন্ন হয়ে থাকে মুখ ও শরীরের অন্যান্য অংশে ত্বকের মাঝে। আরও বড় কথা হলো, হাত-পায়ের তুলনায় আমাদের মুখের ত্বক রোদের আলোতে থাকে বেশি সময়ের জন্য। ফলে মুখের ত্বকের যত্নের জন্য বিশেষ ধরনের ময়েশ্চারাইজার ও ক্রিম প্রয়োজন হয়।
ব্যবহার থেকে খুব সহজেই বোঝা যায় যে ফেসিয়াল ময়েশ্চারাইজার ও বডি লোশনের ফর্মুলেশন ও টেক্সচার একেবারেই ভিন্ন। সাধারণভাবে বললে, বডি লোশনে থাকে কিছুটা প্রখর ঘরানার কেমিক্যাল, যা শরীরের অন্যান্য অংশের ত্বকের জন্য প্রয়োজন হলেও মুখের ত্বকের জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। অন্যদিকে মুখের ত্বকের ময়েশ্চারাইজারের মূল কার্যকারিতা হলো ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রেখে ত্বককে কোমল রাখা। কারণ মুখের ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হয়ে উঠলে সহজেই বয়সের ছাপ দেখা দেবে। এ কারণে কিছু বিশেষ ময়েশ্চারাইজারে অ্যান্টি-এইজিং প্রভাবও যোগ করা হয়।
খেয়াল করে দেখবেন আমাদের মুখের ত্বকে নানা ধরনের ছোট-বড় সমস্যা থাকে। ব্রণ, ব্ল্যাক হেডস, হোয়াইট হেডস, ব্লেমিশ, বলীরেখা, পোরস প্রভৃতি। ফলে ত্বকের যত্নের জন্য নন-কমেডোজেনিক পণ্য প্রয়োজন, যা ত্বকের লোমকূপকে বন্ধ করবে না এবং ত্বকের ভেতর থেকে সুস্থতা প্রদান করবে। এ বিষয়টি মাথায় রেখেই মুখের ত্বকে ব্যবহারের জন্য তুলনামূলক পাতলা ও ব্যবহার উপযোগী ময়েশ্চারাইজার তৈরি করা হয়। অন্যদিকে হাত-পায়ের ত্বকের ক্ষেত্রে মুখের ত্বকের মতো সমস্যা থাকে না বলে বডি লোশনকে ঘন ও ভারি করে তৈরি করা হয়।
বডি লোশন মুখের ত্বকে ব্যবহার করা হলে খুব সহজেই ত্বকের লোমকূপগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। যা থেকে ত্বকজনিত সমস্যার উৎপত্তি হবে। ক্ষেত্র বিশেষে লোশন তৈরিতে ব্যবহৃত কেমিক্যাল রিয়াকশন থেকে অ্যালার্জির সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
এ সকল কারণে মুখের ত্বকে বডি লোশন ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে হবে। ত্বকের সঠিক পরিচর্যা ও যত্নের জন্য ত্বকের সাথে মানানসই ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার হবে সঠিক সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন: