শীতকালীন সময়ের ভীষণ বিরক্তিকর একটি সমস্যা হলো পায়ে বাজে গন্ধ দেখা দেওয়া। অনেকের এই সমস্যাটি পুরো বছর জুড়েই থাকে এবং অনেকের শুধুমাত্র শীতকালেই এই সমস্যাটি দেখা দেয়। পায়ে বাজে গন্ধ দেখা দেওয়ার সমস্যাটির জন্য বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয় অন্যদের সামনে। উৎকট গন্ধ কারোরই সহ্য হওয়ার কথা নয়।
মূলত পায়ের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়ার সাথে ঘাম মিশে এই বাজে গন্ধটি দেখা দেয়। এটা আলাদাভাবে কোন রোগ নয়, বলা যেতে পারে সাময়িক সমস্যা। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে যে কারোরই দেখা দিতে পারে এই সমস্যাটি। প্রতিদিনের জীবনযাপনের রুটিনকে কিছুটা গুছিয়ে নিলে এবং কয়েকটি টিপস মনে রাখলে সহজেই পায়ের বাজে গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।
পায়ের বাজে গন্ধ দেখা দেওয়ার উপর জুতা নির্বাচন অনেক বড় ভূমিকা রাখে। পায়ে গন্ধ দেখা দেওয়ার সমস্যা থাকলে এমন জুতা পরতে হবে যা বদ্ধ নয় এবং সহজেই বাইরের বাতাস চলাচল করতে পারে। বিশেষত যাদের প্রতিদিন দীর্ঘসময়য়ের জন্য জুতা পরে থাকতে হয় তাদের এ ব্যাপারে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। বদ্ধ জুতার ভেতরে ঘাম জমে বাজে গন্ধ প্রকট আকার ধারণ করে।
ইদানিং অনেকেই স্নিকার্স বা শু’র সাথে মোজা পরেন না। এটা অন্যতম বড় একটি কারণ পায়ে বাজে গন্ধ দেখা দেওয়ার। মোজাবিহীন পায়ে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয় খুব দ্রুত এবং এতে অল্প সময়ের মাঝেই বাজে গন্ধ দেখা দেয়। মোজা পায়ের ত্বক ও জুতার আবরনের মাঝে একটি সুরক্ষিত স্তর তৈরি করে। ফলে পায়ে বাজে গন্ধ তৈরি হতে পারে না। এক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি, প্রতিদিনের পরিধেয় মোজা প্রতিদিন অবশ্যই ধুয়ে রোদে শুকিয়ে নিতে হবে।
সারাদিন বাইরে কাটানোর পর বাড়িতে ফিরে হাত-মুখ পরিষ্কার করা হলেও পায়ের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয় না। ফলে পা অপরিষ্কার রয়ে যায়। এই অভ্যাসটি একেবারেই ঠিক নয়। পায়ের নখের ভেতর জমে থাকা ময়লার সাথে ঘাম ও ব্যাকটেরিয়ায় সংস্পর্শে বাজে গন্ধ দেখা দেয় অনেক সময়। এ কারণে প্রতিবার বাইরে থেকে বাড়িতে ফিরেই পা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। সাথে খেয়াল রাখতে হবে পায়ে যেন পানি জমে না থাকে। পা ধোয়ার পর ভালোভাবে তোয়ালের সাহায্যে পা শুকিয়ে নিতে হবে। শুধু বাইরে থেকে আসার পরেই নয়, প্রতিদিন গোসলের সময়েও গুরুত্ব দিয়ে পা পরিষ্কার করতে হবে।
নিয়মিত মুখের ত্বক এক্সফলিয়েট করা হয় ত্বকের উপরিভাগে জমে থাকা মরা চামড়া দূর করার জন্য। একইভাবে পায়ের মরা চামড়া দূর করার জন্যেও এক্সফলিয়েট করতে হবে। মুখের ত্বকের চাইতে পায়ের ত্বক পুরু ও মোটা হওয়ার জন্য পিউমিক স্টোনের সাহায্যে ঘষে পায়ের মরা চামড়া তুলতে হবে। প্রতি সপ্তাহে অন্তত একবার এই কাজটি অবশ্যই করতে হবে। নতুবা পায়ের মরা চামড়া পানিতে ভিজে ও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে বাজে গন্ধ তৈরি করবে।
যদি মনে হয় সাধারণ সময়ের চাইতেও পায়ের বাজে গন্ধ বেশি দেখা দিচ্ছে, তবে অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে পা ভিজিয়ে রাখতে হবে। এক বালতি পানিতে তিন টেবিল চামচ পরিমাণ অ্যাপল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে এতে ১৫-২০ মিনিট সময়ের জন্য পান ডুবিয়ে রাখতে হবে। এসিভির অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টি-ফাংগাল ধর্ম পায়ের ব্যাকটেরিয়া ও লুকায়িত ফাংগাসের সংক্রমণকে দূর করতে কাজ করবে।
আরও পড়ুন: