বলা হয়ে থাকে জিরার গুঁড়া সুস্বাস্থ্যের জন্যেও দারুন প্রয়োজনীয় একটি উপাদান। কিছুদিন আগে ওজন কমাতে জিরা পানি পানের একটি প্রচলন দেখা দিয়েছিল। না জেনে অনেকেই শুধু ওজন কমানোর লক্ষ্যে জিরা পানি পান করা শুরু করে মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছিলেন। কারণ বাড়তি ওজন কমানোর জন্য শুধুমাত্র জিরা পানি পান কখনোই যথেষ্ট নয়।
ওজন কমানোর ক্ষেত্রে খুব একটা কাজ না করলেও, জিরা পানি শরীরের জন্য নানান কারণে ভীষণ উপকারি একটি পানীয়। ভুল তথ্য ও ভুল ব্যবহারের জন্য অনেকেই হয়তো জিরা পানি পান করা বন্ধ করে দিয়েছেন। তাদের জন্যেই আজকে তুলে ধরা হলো জিরা পানি পানের অবিশ্বাস্য কিছু উপকারিতা।
সকালে এক গ্লাস জিরা পানি পানের ফলে এনজাইমের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। যা পাকস্থলিস্থ শর্করা, গ্লুকোজ ও স্নেহ পদার্থকে ভেঙ্গে পরিপাক হতে সাহায্য করে। এছাড়া জিরা পানি মেটাবলিজমের মাত্রা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং ডায়রিয়া, গ্যাস্ট্রিক আলসারের সমস্যা ও বমিভাব প্রতিরোধ করে।
আরো পড়ুন: শসা খেতে হবে খোসাসহ!
জিরাতে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরে জমে থাকা বিভিন্ন ধরণের টক্সিন (বিষাক্ত) পদার্থ বের করে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কার্যকারিতা স্বাভাবিক রাখে। বিশেষ ভাবে যকৃতের জন্য জিরা পানি বিশেষ উপকারি।
জিরাতে থাকা প্রচুর আয়রন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে স্বাভাবিক রাখতে কাজ করে। এক গ্লাস পরিমাণ জিরা পানি পানের ফলে প্রায় ৭ শতাংশ পরিমাণ আয়রন গ্রহণ করা হয়। আয়রনের পাশাপাশি এতে রয়েছে ভিটামিন-এ ও সি। যা শরীরের যেকোন ইনফেকশনের বিরুদ্ধে লড়ায় করে।
আগের পয়েন্টেই উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে জিরাতে উচ্চমাত্রায় আয়রন থাকে। যে কারণে রক্তস্বল্পতার সমস্যায় ভুক্তভোগীদের জন্য জিরা পানি বিশেষ উপকারি পানীয়।
জিরাতে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টিসেপটিক উপাদান ঠাণ্ডা-কাশির সমস্যার জন্য উপকারি। এই উপাদানগুলো ঠাণ্ডা ও কাশির সমস্যা তৈরিকারী ক্ষতিকর মাইক্রোবকে মেরে ফেলে এবং মিউকাস তৈরি করে শুষ্ক কাশির সমস্যা কমিয়ে আনে।
আরো পড়ুন: আনারসের আটটি গুণ!
ঘুমের অন্যতম ভয়ানক সমস্যা হলো ইনসমনিয়া। এই সমস্যা একটা নির্দিষ্ট মাত্রা পর্যন্ত কমিয়ে আনে নিয়মিত জিরা পানি পান। জিরা পানি পানের ফলে দ্রুত ঘুম চলে আসার পাশাপাশি ঘুম গাড় ও গভীর হয়।
মগজের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে জিরা। একইসাথে স্মৃতিশক্তি প্রখর ও মনোযোগ বৃদ্ধিতেও জিরা পানি ভূমিকা পালন করে।
জিরাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আঁশ। যা শরিরকে ডিটক্সিফাই করে থাকে। পাশাপাশি ফ্রি-রেডিক্যালের সাথে লড়ায় করে বলে ত্বক পরিষ্কার থাকে ও ত্বকে প্রাকৃতিক আভা দেখা দেয়। যে কারণে জিরা পানি পানের ফলে ব্রনের সমস্যা কমে যায়। এছাড়া অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান বিদ্যমান থাকার ফলে ত্বকে বয়সের ছাপ দেখা না। জিরা পানি ত্বকের উপকারে কাজ করার সঙ্গে অন্যান্য খাদ্য উপাদান থেকে পুষ্টিগুণ শোষণ করার ক্ষমতাও বাড়ায়। যা ত্বকের উপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
সামান্য যে পানীয়তে এতোটা উপকারীতা রয়েছে, সেটা পান না করা খুবই বোকামি হবে। জিরা পানি তৈরি করার জন্য কিন্তু খুব বেশি ঝামেলাও করতে হবে না। এক গ্লাস পরিমাণ পানিতে এক চা চামচ আস্ত জিরা দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে। এরপর ছেঁকে নিয়ে পান করতে হবে পানীয়টি।