স্বাস্থ্যকর পানীয়ের ভেতর প্রথমেই বলতে হয় গরম লেবু পানির কথা। লবণ কিংবা চিনি ব্যতীত এক গ্লাস উষ্ণ পানীয় শরীরের জন্য কতটা প্রয়োজনীয় সে সম্পর্কে অনেকেই হয়তো পরিষ্কারভাবে জানেন না। সহজ পানীয়টি ওজন কমাতে সাহায্য করে- এই বিষয়টি কমবেশি সকলে জানলেও অজানা রয়ে যায় তার অন্যন্য স্বাস্থ্য উপকারিতাগুলো।
প্রতিদিন সকালে একদম খালি পেটে এক গ্লাস লেবু পানি কেন পান করবেন? জেনে নিন কারণগুলো।
খাবার গ্রহনের পর খাদ্য নালী দ্বারা সেগুলো পরিবাহিত হয়। তবে খাবার পরিবাহিত হবার সময় কিছু খাবার নালীতে রয়ে যায়। প্রতিদিন সকালে এক গ্লাস গরম লেবু পানি পানের ফলে খাদ্য নালীতে থাকা সকল বর্জ্য ও বাধা একেবারে দূর হয়ে যায়। ফলে পরিপাকতন্ত্র পরিষ্কার ও সুস্থ থাকে।
আরো পড়ুন: পরিচিত জিরাপানির অপরিচিত স্বাস্থ্যগুণ
লেবুতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন-সি ও পটাসিয়াম। যা জাদুর মতো কাজ করে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে। যেহেতু লেবু পানি পান করা হয় একদম খালি পেটে, তাই এই পানীয়ের সকল উপকারিতা সম্পূর্ণভাবেই শরীরে শোষণ হয়।
বাড়তি ওজনকে নিয়ন্ত্রণে আনতে এই পানীয়কে অন্যতম শ্রেষ্ঠ পানীয় বলা হয়ে থাকে। পানীয়টি মেটবলিজমের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। ফলে শরীর ফ্যাট বার্ণ করে স্বাভাবিকের চাইতে বেশি। যা ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করে। এই পানীয়ের সাথে আদা যোগ করলে আরো ভালো কাজ করবে।
কোলাজেন ফরমেশনের জন্য অন্যতম প্রয়োজনীয় উপাদান হলো ভিটামিন-সি। যা মুখের ত্বককে স্বাস্থ্যকর ও উজ্জ্বল রাখতে কাজ করে। পাশাপাশি হাইড্রেশন ত্বকের জন্য সমানভাবে জরুরি। সকালে খালি পেটে গরম লেবু পানি পানের ফলে শরীর থেকে সকল টক্সিন তথা ক্ষতিকর পদার্থ বের হয়ে যায়। যা ত্বককে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
জানেন কি লিভার হলো মেটাবলিজমের কেন্দ্র! সকালে গরম লেবু পানি পানের ফলে লিভার থাকে পরিচ্ছন্ন ও সুস্থ। পুরো রাত জুড়েই কিন্তু লিভার কার্যকর থাকে। যে কারণে সকাল সকাল গরম এই পানীয় পানের ফলে লিভার পুনরায় কাজ করার শক্তি ফিরে পায় অনেকগুণ বেশি। যা একইসাথে লিভারকে সুস্থ রাখে ও মেটাবলিজমের মাত্রা বৃদ্ধি করে।
আরো পড়ুন: অ্যাপল সাইডার ভিনেগার সম্পর্কে কিছু ভ্রান্ত ধারণা
কোথাও কেটেছড়ে গেলে লেবুর রস খাওয়ার জন্য বলা হয়ে থাকে। কারণ লেবুতে থাকা প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-সি কোলাজেন তৈরির মাত্রা বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ফলে ক্ষত দ্রুত ভালো হয়ে যায়।
লেবুর দারুণ সুঘ্রাণ তাৎক্ষণিকভাবে মনকে ভালো করে দিতে সাহায্য করে। যা সারাদিনের কাজের জন্য এনার্জি জোগায়। এছাড়া দুশ্চিন্তা, হতাসা ও দ্বিধা দূর করতে চনমনে এক গ্লাস গরম গরম লেবু পানির বিকল্প নেই।
লেবুতে থাকা অ্যাসকরবিক ও সাইট্রিক অ্যাসিড সহজেই পরিপাক হয়ে যায়। যার ফলাফল স্বরূপ তৈরি হয় অ্যালক্যালাইন। মনে রাখা জরুরি, শরীরে তখনই রোগের প্রকোপ দেখা দেয় যখন শরীরের pH অ্যাসিডিক হয়ে যায়। তাই চেষ্টা করতে হবে শরীরের পিএইচ সবসময় অ্যালাক্যালাইনে রাখার জন্য। এতে শরীর সুস্থ থাকবে সবসময়।
পানীয়টি তৈরির জন্য এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই টুকরো লেবুর রস মিশিয়ে পান করতে হবে। তবে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে লেবু কম ব্যবহার করতে হবে।