মাদক চোরাকারবারে বদির দুই ভাইয়ের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে সিআইডি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-04-17 15:15:21

কক্সবাজার কেন্দ্রিক মাদক ব্যবসার সঙ্গে টেকনাফের সাবেক এমপি আব্দুর রহমান বদির আপন দুই ভাই আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুরের সংশ্লিষ্টতা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির মিডিয়া সেন্টারে মাদকের মূল হোতাদের সম্পদ বাজেয়াপ্তের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সংস্থাটির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া একথা জানান।

সিআইডি প্রধান বলেন, মাদকের সঙ্গে যাদের সম্পৃক্ততা পাবো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সে যেই হোক না কেনো। তার (বদির) ভাই এবং তাদের অনুসারীদের সম্পৃক্ততা আমরা পেয়েছি। বদির দুই ভাইকে আমরা জিজ্ঞাসাবদ করবো সেখানে যদি তার (বদি) নাম আসে তাকেও গ্রেফতার করব। মাদকের বিষয়ে কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

বদির দুই ভাইয়ের ভূমিকার বিষয়ে জানতে চাইলে সিআইডি প্রধান বলেন, আমিনুর রহমান ও আব্দুর শুক্কুর বিভিন্নভাবে মিয়ানমার থেকে ইয়াবা আনে। এরপর তাদের নিয়োজিত সহযোগীরা বিভিন্নস্থানে পৌঁছে দেয়। ইতোমধ্যে বদির ভাইদের ৬.৯ একর জমি শনাক্ত করা হয়েছে। এছাড়া এক কোটি টাকা মূল্যের ৪০ শতাংশ জমির তথ্য পাওয়া গেছে। জমির তথ্য এখনো ডিজিটালাইজড হয়নি। ফলে মাঠ পর্যায়ে নানাভাবে এই তথ্য সংগ্রহের কাজ চলছে। এ বিষয়ে আমরা পরবর্তীতে আরও বিস্তারিত জানাতে পারবো।

প্রাথমিকভাবে সিআইডি ৩৫টি মামলা তদন্ত করে মাদক মামলার মূল হোতা তথা গডফাদারদের মাদক ব্যবসা থেকে অবৈধভাবে অর্জিত অর্থ (ব্যাংক অ্যাকাউন্টে রাখা), ক্রয়কৃত জমি, বাড়ি ও ফ্ল্যাটসহ বিভিন্ন স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তির সন্ধান পায়। এসব মামলায় অবৈধভাবে অর্জিত অর্থের পরিমাণ প্রায় ১৭৮.৪৪ কোটি টাকা।

অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আলী মিয়া বলেন, সিআইডি ইতোমধ্যে উল্লিখিত মামলাসমূহের মধ্যে ৩টি মামলায় গডফাদারদের ৯.১৪ একর জমি ও ২টি বাড়ি যার মূল্য ৮.১১ কোটি টাকা ক্রোক এবং মাদক সংক্রান্ত মানিলন্ডারিং বিভিন্ন মামলায় ব্যাংকে রাখা ১ কোটি ১ লাখ ২৩ হাজার ৪২৫ টাকা ফ্রিজ করেছে। আরও ৩৫.১৭৩ একর জমি, ১২টি বাড়ি ও ১টি গাড়ি যার মূল্য ৩৬.৮২ কোটি টাকা ক্রোকের প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সিআইডি প্রধান বলেন, আপনারা জানেন দেশে প্রতি বছর অন্তত ৮০ হাজার মাদক উদ্ধার সংক্রান্ত মামলা হয়ে থাকে। তাবে যারা গ্রেফতার হন তাদের বেশিরভাগই মাদক বহনকারী ও সেবনাকারী। অনেক সময়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা এই দুই শ্রেণির মধ্যেই তাদের তদন্ত শেষ করেন। ফলে আড়ালে থেকে যান মাদকের মূল গডফাদাররা। কিন্তু সিআইডি ২০২১ সাল থেকে মাদকের গডফাদারদের গ্রেফতার ও তাদরে সম্পদ ক্রোক করে সরকারের কোষাগারে জমা দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। এতে করে দেশের মাদক ব্যবসায়ীদের মধ্যে একটি আতঙ্ক সৃষ্টি হবে। তারা মাদক কারবার ছেড়ে বৈধ ব্যবসা করবেন। পাশাপাশি নতুন করে কেউ এই পেশায় জড়াতে উৎসাহ পাবে না। কারণ আপনারা জানেন মাদক একটি পুঁজি ছাড়া ব্যবসা। ফলে অনেকেই সহজ আয়ের সুযোগ নিতে গিয়ে অবৈধ কারবারে জড়িয়ে যান।

এ সম্পর্কিত আরও খবর