এমপি আনোয়ারুলের নিহতের ঘটনায় ঢাকায় মামলা, যা আছে এজাহারে

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-05-22 22:31:43

ভারতের কলকাতায় ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতদের আসামি করা হয়েছে।

বুধবার (২২ মে) রাত আটটায় শেরেবাংলা নগর থানায় মামলাটি করেন আনারের ছোট মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলা নং-৪২। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় তিনি থানায় অভিযোগ করলেও সেটি মামলা হিসেবে রুজু হয় রাত আটটায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেন শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আহাদ।

তিনি বলেন, সংসদ সদস্যের মেয়ে মামলা করেছে। তবে আসামির নাম উল্লেখ করা হয়নি। সংখ্যা কত সেটাও উল্লেখ করা হয়নি।

মামলার এজাহারে যা যা উল্লেখ করা হয়েছে: 

মামলার বাদি ডরিন এজাহারে উল্লেখ করেছেন, গত ৯ মে তার বাবা ঢাকার শেরেবাংলা নগর থানার মানিকমিয়া এভিনিউয়ের ন্যাম ভবন (সংসদ সদস্যদের আবাসিক ভবন) থেকে গ্রামের বাড়ী ঝিনাইদহ যাওয়ার জন্য বের হন। দুই দিন পর ১১ মে বিকেল পৌনে পাঁচচার দিকে তার বাবার সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়। কিন্তু তার সাথে কথা বার্তার এক পর্যায়ে তিনি বুঝতে পারেন, তার বাবা অসংলগ্ন কথা বার্তা বলছেন। এরপর তিনি তার বাবার ফোনে একাধিকবার কল করলেও সেটি বন্ধ পান। পরে ১৩ মে তার বাবার ভারতীয় সিম নম্বর থেকে উজির মামা নামের একজনের মোবাইলে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। তাতে জানানো হয়, 'আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সাথে ভিআইপি আছে। আমি অমিত সাহার কাছে যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দিব।'

এছাড়াও আরও কয়েকটি বার্তা আসে। সেই ম্যাসেজগুলি আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরনকারীরা করে থাকতে পারে। এরপর আমরা বিভিন্ন জায়গায় আমার বাবার খোঁজ খবর করতে থাকি। আমার বাবার কোন সন্ধান না পেয়ে আমার বাবার বন্ধু শ্রী গোপাল বিশ্বাস গত ১৮ মে কলকাতার রাধানগর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। আমরা আমার বাবাকে খোঁজাখুঁজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাত ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজশে আমার বাবাকে অপহরণ করেছে। আমার বাবাকে সম্ভব্য সকল স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও না পেয়ে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে সামান্য বিলম্ব হলো। শেষে তিনি উল্লেখিত বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন পুলিশকে।

ঘটনার সময় উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৯ মে রাত আটটা থেকে ১৩ মে যেকোন সময়।

এর আগে, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ জানান, নিহত এমপির মেয়ে আমাদের কাছে এসেছেন। তার বাবা বাসা থেকে বের হয়ে গেলেন। এরপর আর পাওয়া যায়নি। সেখানে কী ঘটেছে, এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করার জন্য এসেছেন। মামলা কীভাবে কোথায় করবেন, তা আমরা বলেছি। তার বাবা সংসদ ভবন এলাকায় থাকতেন। সেখান থেকে তিনি ভারতে গেছেন। আমরা তাকে বলেছি শেরে বাংলা নগর থানায় মামলা করতে। মামলা করতে আমাদের কর্মকর্তারা তাকে সহযোগিতা করছে। মামলাটি আজকের মধ্যেই হবে।

উল্লেখ্য, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার এ মাসের ১২ মে ভারতে বেড়াতে যান। সেখানে তিনি কলকাতায় একজনের ফ্লাটে ওঠেন। এরপর ১৩ মে বিকেলে বের হন। এরপর থেকে নিখোঁজ ছিলেন। তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না বলে তার পরিবার জানায়। বিষয়টি নিয়ে দুই দেশের পুলিশ কাজ করছে বলে জানিয়েছিলেন ডিবির প্রধান হারুন অর রশীদ।

সর্বশেষ বুধবার (২২ মে) সকালে কলকাতার গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বাংলাদেশি গণমাধ্যমগুলো খবর প্রকাশ করে যে, কলকাতায় আনারের মরদেহের খণ্ডাংশ উদ্ধার হয়েছে। এ ঘটনার পর তার মেয়ে দুপুরে ডিবিতে গিয়েছিল। সেখান থেকে বের হয়ে তিনি বিকেলে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। 

এ সম্পর্কিত আরও খবর