এমপি আনার হত্যার নেপথ্যে

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2024-05-24 07:39:42

রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের তদন্তে বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসছে।

তদন্তকারীদের বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম আনার সোনা ও হুন্ডির ২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করায় প্রভাবশালী কয়েক ব্যক্তির সঙ্গে তার বিরোধ তৈরি হয়। ওই বিরোধীদের জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে ভারতে নিয়ে তাকে হত্যা করা হয়।

গোয়েন্দা সংশ্লিষ্টরা জানান, গত ৩০ এপ্রিল কিলিং মিশন বাস্তবায়নকারী সৈয়দ আমানুল্লাহ ওরফে শিমুলকে নিয়ে ভারতের কলকাতায় যান মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহিন। নিউমার্কেট এলাকা থেকে ছুরি, চাপাতিসহ হত্যাকাণ্ডের জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে নিয়ে রাখেন নিউটাউন অভিজাত এলাকায় সঞ্জীবা গার্ডেনসে। আগে থেকেই হত্যার ছক আঁকা থাকায় আমান দফায় দফায় রিহার্সেল করেন তার সহযোগীদের সঙ্গে।

তার অংশ হিসেবেই পরিকল্পিতভাবে ছোটবেলার বন্ধু আক্তারুজ্জামান শাহিন এমপি আনারকে ভারতে নিয়ে বিনিয়োগের টাকা ফেরত দিতে বলেন। এ নিয়ে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। মৃতের পরিচয় যাতে বোঝা না যায় তাই তারা শরীরের হাড় ও মাংস আলাদা করে ফেলেন। এর পর হাড় ও মাংস টুকরো টুকরো করে কেটে ফেলে সব কিছু পলিথিন ব্যাগে ভরে ফ্ল্যাটের বাইরে গিয়ে ফেলে দেয়।

এমপি আনার খুনের ঘটনায় কলকাতার সিআইডি ইতোমধ্যেই তিন জনকে আটক করেছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের এক জন জুবেরের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। কী কারণে সেই সাক্ষাৎ সেই বিষয়ে জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা। খুনের কিনারা করতে সিআইডির একটি দল বৃহস্পতিবারই ঢাকা আসে। তারা ঢাকায় আটকদের জেরা করবেন।

গত ১২ মে চিকিৎসার জন্য কলকাতায় যান সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজিম। প্রথমে তিনি উঠেছিলেন বরাহনগরের এক বন্ধুর বাড়িতে। সেখান থেকে দু’দিন পর নিখোঁজ হয়ে যান। তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পেরে ১৮ মে নিখোঁজ ডায়েরি করেন ওই বন্ধু। উদ্বিগ্ন পরিবারের সদস্যেরা সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখান থেকে যোগাযোগ করা হয় ভারত সরকারের সঙ্গে। তার পর সংসদ সদস্যের খোঁজ শুরু হয়।

সিআইডির তদন্তে উঠে এসেছে, সংসদ সদস্য আনার কলকাতায় আসার অনেক আগেই এখানে চলে এসেছিলেন অভিযুক্তেরা। শহরে বসেই তারা খুনের ছক কষেছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। দুই অভিযুক্ত কলকাতার সদর স্ট্রিটের একটি হোটেলে ছিলেন গত ২ থেকে ১৩ মে পর্যন্ত।

উল্লেখ্য, ১২ তারিখ কলকাতায় আসেন সংসদ সদস্য আনার। অর্থাৎ, তার আসার অন্তত ১০ দিন আগে কলকাতায় এসে পড়েছিলেন ওই দুই অভিযুক্ত। তারা হোটেল ছাড়েন আজিম আসার এক দিন পরেই। গোয়েন্দাদের অনুমান, এই ১০ দিন ধরে শহরে থেকে খুনের পরিকল্পনা করেছিলেন অভিযুক্তেরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর