মেইল-কমিউটার ট্রেনের টিকিট পেতে দীর্ঘ লাইন

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2024-06-16 13:51:00

ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট যাত্রার কয়েকদিন আগে বিক্রি শুরু হলেও মেইল, কমিউটার ও লোকাল ট্রেনের টিকিট বিক্রি হয় যাত্রার দিনে। একইসঙ্গে যাত্রার দিনে পাওয়া যায়, আন্তঃনগর ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকিটও। ঈদযাত্রার শেষ দিনে টিকিট পেতে মেইল ও কমিউটার ট্রেনের কাউন্টারের সামনে দীর্ঘ লাইন দিয়েছেন গন্তব্যগামী সাধারণ মানুষ।

রোববার (১৬ জুন) সকালে ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট কাউন্টার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

ঢাকা থেকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮টি কমিউটার ট্রেন দেশের বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত যাতায়াত করে। অপরদিকে আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রা শুরুর ২ ঘণ্টা আগে ট্রেনের মোট আসনের ২৫ শতাংশ টিকিট স্ট্যান্ডিং হিসেবে বিক্রয় করা হয়। ফলে ওই টিকিটের জন্যও আন্তঃনগর ট্রেনের কাউন্টারের সামনে মানুষের দীর্ঘ লাইন রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, স্টেশনে প্রবেশের আগ মুহূর্তে স্টেশনের ডান দিকে মেইল ও কমিউটার ট্রেনের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। শেষ মুহূর্তে টিকিট সংগ্রহ করতে মানুষের ভিড়ে কাউন্টার থেকে লাইন গিয়ে ঠেকেছে পার্কিং পর্যন্ত।

যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কম্পিউটার ট্রেনে অন্যান্য সময় একটি টিকিট কিনলে একটি আসন দিত। কিন্তু ঈদের সময় তারা চার-পাঁচটি আসন একসঙ্গে না কিনলে সিটসহ টিকিট দেয় না। যেহেতু আন্তঃনগর ট্রেনগুলোতে টিকিট পাওয়া যায়নি তাই এটিই এখন শেষ ভরসা।

আন্তঃনগর কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লাইনের প্রত্যেকেই প্রত্যাশা করছেন আসন না পেলেও অন্তত ট্রেনে দাঁড়িয়ে যাওয়ার টিকিটটা পাবেন। কিন্তু তাদের অনেকেই জানেন না, আন্তঃনগর ট্রেনের শুধুমাত্র শোভন শ্রেণীর ২৫ শতাংশ টিকিট দেওয়া হবে।


এদিকে রেলে ঈদযাত্রার পঞ্চম দিনে চিরচেনা রূপে ফিরেছিল রেলস্টেশন। শিডিউল মেনে ট্রেন চললেও বিগত বছরের ঈদগুলোর মতন শেষ সময়ে ট্রেনের ছাদেও যাত্রীদের ঢল নামে। এদিন সকালে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন শিডিউল মেনে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়।

এছাড়া প্ল্যাটফর্মে যেন টিকিটবিহীন ব্যক্তি প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্লাটফর্ম এলাকায় প্রবেশের মুখে ‍তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী পার হয়ে যাত্রীদের স্টেশনে প্রবেশ করতে হচ্ছে।

দেখা গেছে, স্টেশনের প্রবেশদ্বারে র‌্যাব, পুলিশ এবং রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী (আরএনবি) কন্ট্রোলরুম স্থাপন করেছে। প্লাটফর্মে প্রবেশের মুখে ট্রাভেলিং টিকিট এক্সামিনারদের (টিটিই) দেখা গেছে যাত্রীদের টিকিট চেক করতে, তবে এনআইডি মিলিয়ে দেখতে দেখা যায়নি এবার।

স্টেশন কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ৪২ জোড়া আন্তঃনগর ট্রেন ও তিনটি স্পেশাল ট্রেনসহ মোট ৭০ জোড়া ট্রেন যাতায়াত করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা শাহ্ আলম কবির কিরণ।

এদিকে এবার ঈদে ট্রেন যাত্রায় গোল্ডেন প্লাস পাওয়ার আশা ব্যক্ত করেছেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম।

গত বৃহস্পতিবার (১৩জুন) বিকেলে কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শনে গিয়ে এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

জিল্লুল হাকিম বলেন, গত ঈদে রেলের সার্ভিস ভালো হয়েছে। এতে করে অনেকেই বলেছে আমি প্রথম পরীক্ষায় নাকি গোল্ডেন প্লাস পেয়েছি। আমাদের সীমিত সামর্থের মধ্যে নিরাপদে ঈদুল আজহার যাত্রা এবারও ভালো করতে চাই। এবারও গোল্ডেন প্লাস পাবো আশাকরি। সব প্রস্তুতি আছে। ঢাকা থেকে ৬৪টি ট্রেন ছাড়ে দুই একটা ট্রেন বাদে ৩০টা ট্রেন ইন টাইম যাত্রা করেছে। সবাইকে অনুরোধ করবো এবারের যাত্রা যেন গতবারের চেয়ে ভালো হয়। আপনাদের জন্য রেল কাজ করে যাচ্ছে।

এক প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী বলেন, পুরাতন কোচ রাতারাতি নতুন করতে পারব না। ফ্যান ঠিক করা হচ্ছে। আবার অনেক সময় যাত্রী বেশি হওয়ায় অতিরিক্ত কোচ লাগাতে হয়, এতে সময় বেশি লাগে। কিছু ট্রেনে লম্বা দূরত্বে ক্রসিংয়ে সময় বেশি লাগে। আগামী ঈদ থেকে আর কোনো অভিযোগ থাকবে না।

এ সম্পর্কিত আরও খবর