দ্বিতীয়বারের চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতেছে চেলসি। পোর্তোর অল ইংলিশ ফাইনালে ১-০ হারিয়ে দিয়েছে ম্যানচেস্টার সিটিকে। ২০১২ সালের ফের ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন হলো রুশ ধনকুবের রোমান আব্রামোভিচের ক্লাব।
প্রথমবারের মতো শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নাম লিখে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের তকমা ছিনিয়ে নিতে চেয়েছিল ম্যানচেস্টার সিটি। কিন্তু তাদের স্বপ্নটা অপূর্ণই রয়ে গেল। মাঠের লড়াইয়ের যোগ্য দল হিসেবেই শিরোপা কেড়ে নিয়েছে স্টামফোর্ড ব্রিজ শিবির।
স্তাদিও দো দ্রাগাও গ্রাউন্ডের ফাইনালের প্রথমার্ধের শেষ দিকে এগিয়ে যায় চেলসি। ম্যাচের ৪২তম মিনিটে দ্য ব্লুজ শিবিরকে লিড এনে দেন কাইল হাভার্টজ। ম্যাসন মাউন্টের কাছ থেকে পাস পেয়ে দুরন্ত প্রচেষ্টায় ম্যানসিটির গোলরক্ষক এডারসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে জালে বল জড়িয়ে দেন ম্যাচের নায়ক জার্মান তারকা ফুটবলার হাভার্টজ। পরে আর কোনো গোল না হওয়ায় তার এই একমাত্র জয়সূচক গোলেই ট্রফি নিয়ে মাঠ ছাড়ে চেলসি।
জানুয়ারিতে ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্টের কাছ থেকে দায়িত্ব নিয়েই চেলসিকে আমূল পাল্টে দেন কোচ টমাস টাচেল। ইউরোপিয়ান আসরে অপ্রতিরোধ্য দল হিসেবেই চেলসিকে গড়ে তোলেন প্যারিস সেন্ট-জার্মেই (পিএসজি) থেকে 'বিতাড়িত' এই ফুটবল গুরু। বিদায়ী মৌসুমে ম্যানসিটিকে এর আগে প্রিমিয়ার লিগ ও এফএ কাপে দুই বার হারানোর অভিজ্ঞতা নিয়ে চেলসি নেমেছিল শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালের মহারণে। ম্যানসিটিকে তৃতীয়বারের মতো ধরাশায়ী করে জার্মান ফুটবল কোচ টাচেল স্টামফোর্ড ব্রিজে এনে দিলেন রুপালি ট্রফির রুপালি হাসি।
এ হারে চ্যাম্পিয়নস লিগ ট্রফিটা অপার্থিব বস্ত হয়েই রইল ম্যানসিটির কাছে। তবে হারের দায় এড়াতে পারেন না কোচ গার্দিওলা। দলের কৌশল নিয়ে বাজি খেলে তিনি আসলে মাঠের লড়াইয়ে পিছিয়ে দেন দলকেই। রদ্রি বা ফার্নান্দিনহো কাউকেই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে মাঠে না নামিয়ে সবাইকে অবাক করে দেন। এতে দলের গেম প্ল্যান হয়ে পড়ে অকার্যকর। কমে যায় দলের কার্যকারিতা। যে কারণে চেলসিকে খুব কমই সমস্যায় ফেলতে পেরেছে সিটি।
উল্টো দিকে পুরো ম্যাচ জুড়ে গোলের অনেক সুযোগই তৈরি করেছে চেলসি। হাভার্টজের গোলের আগে দুটি দুর্দান্ত সুযোগ নষ্ট করেন টিমো ওয়ের্নার। দ্বিতীয়ার্ধে গোলের আরও একটি সুযোগ নষ্ট করেন ক্রিস্টিয়ান পিউলিসিক।
দ্বিতীয়ার্ধের বিরতির মাঝে ইনজুরির কারণে সিটি হারিয়ে ফেলে কেভিন ডি ব্রুইনেকে। এই সুযোগে দলের হয়ে ক্লাব থেকে বিদায়ের আগে শেষবারের মতো মাঠে নামেন সার্জিও আগুয়েরো। কিন্তু কোনো রূপকথার জন্ম দিতে পারেননি ক্লাবের এ গ্রেটেস্ট গোলস্কোরার। ফলে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন দলকে কুপোকাত করে জয়ের সঙ্গে শ্রেষ্ঠত্ব ছিনিয়ে নেয় লিগের চতুর্থ সেরা দল।
গত বছর এই চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালেই পিএসজি’র কোচ হিসেবে হেরে গিয়ে ছিলেন টাচেল। এ বছর সেই তিনি চ্যাম্পিয়ন। তাইতো যারপরনাই উচ্ছ্বসিত টাচেল উৎসবের মাঝে আরাধ্য ট্রফিতে এঁকে দেন আদুরে চুমো।