ফিরে আসুক তামার পাত্রের ব্যবহার



ফাওজিয়া ফারহাত অনীকা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, লাইফস্টাইল
তামার পাত্রের ব্যবহারে উপকারিতা অনেক

তামার পাত্রের ব্যবহারে উপকারিতা অনেক

  • Font increase
  • Font Decrease

পুরনো সময়ে দেখা যেত তামা কিংবা পিতল-কাঁসার পাত্রে খাবার খেতে, পানি পান করতে।

চকচকে ও ভারি ধাতুতে তৈরি এই পাত্রগুলো তখনকার সময়ে দারুণ আকর্ষণীয় দেখালেও, নতুন নকশায় তৈরি সহজলভ্য ও সস্তা মেলামাইন কিংবা প্লাস্টিকের জিনিস গ্রাস করে নেয় ধাতুর তৈরি পাত্রের স্থান।

অথচ তামার পাত্রের ব্যবহার সুস্বাস্থ্যে এতো অবদান রাখতে পারে, যা রীতিমত বিস্ময়কর। সময়ের পরিবর্তনে এখন কিন্তু পুরনো আমলের জিনিসপত্রের চল আবারো ফিরে আসছে। মাটি কিংবা পাটের তৈরি জিনিসের প্রতি ঝুঁকছে সকলে। ঠিক একইভাবে প্রতিদিনের ব্যবহারে খাবার ও পানি গ্রহণের জন্য অন্য যেকোন উপাদানের বাসনের পরিবর্তে তামায় তৈরি বাসন ব্যবহারের চল ফিরিয়ে আনা যেতে পারে। যা একইসাথে আভিজাত্যভাব আনবে এবং সুস্বাস্থ্য রক্ষার্থেও ভূমিকা রাখবে।

তামার পাত্র ব্যবহারের উপকারিতাগুলো কী?

তামার পাত্রে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি পানি ধারণ, সংরক্ষণ ও পানি পানের উপকারিতা চমকে দেওয়ার মতো। এখানে বিশেষ ছয়টি উপকারিতা তুলে ধরা হলো।

তামার পাত্র

অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ধর্ম

তামার পাত্রে ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় ১৬ ঘন্টা পর্যন্ত পানি সংরক্ষণ করা হলে তামার মাইক্রোবিয়াল ধর্ম পানিতে থাকা ক্ষতিকর মাইক্রোবসমূহকে মেরে ফেলে। এতে করে উক্ত পানি পানে রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় অনেকখানি। ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলিনের তথ্যানুসারে তামাতে রয়েছে পানি বিশুদ্ধিকরণ ধর্ম। যার ফলে এই ধাতু পানিতে থাকা প্রায় ৯৭ শতাংশ জীবাণু, ব্যাকটেরিয়া ও মাইক্রোবসমূহকে নির্মূল করতে পারে।

মস্তিষ্কের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে

আমাদের মস্তিষ্ক এক নিউরন থেকে অন্য নিউরনে সিন্যাপসিসের সাহায্যে সিগন্যাল পাঠিয়ে থাকে। কপার তথা তামা ফসফোলিপিড (Phospholipids) তৈরি করে যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধিতে অবদান রাখে ম্যালিন শিথস (Myelin Sheaths) এর উৎপাদনের মাত্রা বৃদ্ধি করে।

ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে উপকারী

ওজনকে যারা নিয়ন্ত্রণের ঘরে রাখতে চেষ্টা করছেন, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনছে, তারা একইসাথে পানি ধারণের ও পানি পানের পাত্রও বদলে ফেলুন। বেশিরভাগ বাড়িতেই প্লাস্টিকের জগে পানি ধারণ করা হয়। এই প্লাস্টিক পার্টিকেল পানির সাহায্যে খুব স্বল্প পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করে ভয়ানক ক্ষতিকর প্রভাব তৈরি করে।

অন্যদিকে তামার পাত্রে পানি রাখা হলে পানিতে তামার উপকারিতার অনেকটা যোগ হবে। দেখা গেছে, তামার পাত্রে পানি ধারণের ফলে এবং পানি পান করা হলে, পাকস্থলিস্থ খাদ্য দ্রুত ও ভালোভাবে পরিপাক হয় এবং ফ্যাট শরীর থেকে বের করে দিতে কাজ করে। ফলে শরীরে বাড়তি ফ্যাট জমতে পারে না।

তামার পাত্র

বয়স বৃদ্ধির হার স্লথ করে

তামাকে বলা হয়ে থাকে বলিরেখা দূরীকরণের প্রাকৃতিক উপাদান। বয়সজনিত ও অনিয়মজনিত কারণে ত্বকে বয়সের ছাপকে ধীরে ধীরে মুছে ফেলতে তামার পাত্রে ধারণ করা পানি পানের দিকে নজর দিতে হবে। গবেষণার তথ্য জানাচ্ছে, স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এই ধাতু থেকে পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত পরিমাণ শক্তিশালী অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট। যা কোষকে পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করবে। এছাড়া এই ধাতু ক্ষতিকর রেডিক্যাল মুক্ত হওয়ায় ত্বক তো বটেই, স্বাস্থ্যের উপরেও কোন ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারবে না।

হাড়ের ব্যথায় উপকারী তামা

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদানের পাশাপাশি তামা একটি অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি তথা প্রদাহবিরোধী উপাদানও। ফলে শরীরের যেকোন অংশের প্রদাহজনিত ব্যথার পাশাপাশি আর্থ্রাইটিসজনিত হাড়ের ব্যথাতেও তামার পাত্রে ধারণ করা পানি উপকারী উপাদান হিসেবে বিবেচ্য হবে। বিশেষত হাড়ের ব্যথা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে প্রতিদিন সকালে তামার পাত্র থেকে পানি পান করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।

ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে

একদিকে মেলামাইন ও প্লাস্টিকের পাত্র ক্যানসারকে ডেকে আনে, অন্যদিকে তামার পাত্র ক্যানসার থেকে শরীরকে প্রতিরোধে কাজ করে। বিশেষত এই ধাতুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও অ্যান্টি-কারসেনোজেনিক ধর্ম শরীরে ফ্রি রেডিক্যালের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। ফলে ক্যানসার বাসা বাঁধার ক্ষেত্রে বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং যাদের শরীরে ক্যানসারের সমস্যা দেখা দিয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে ক্যানসার বৃদ্ধিকে প্রতিহত করে।

কোথায় ও কত দামে পাওয়া যাবে তামার পাত্র?

প্লাস্টিক, মেলামাইন কিংবা কাঁচের পাত্রের ভিড়ে তামার পাত্রের খোঁজ পাওয়াই যায় না। তবে পুরান ঢাকার বাংলাবাজার, গুলশান-১ এর ডিসিসি মার্কেট ও আড়ং এ তামার পাত্রের খোঁজ পাওয়া যাবে। পণ্যের ধরণ (গ্লাস, জগ, প্লেট, বাটি) ভেদে তামার এক একটি পাত্রের দাম পড়বে সর্বনিম্ন ৩৫০ টাকা থেকে ৫০০০ পর্যন্ত।

আরও পড়ুন: রোদ কিংবা বৃষ্টি, ছাতা হোক সঙ্গী

আরও পড়ুন: পাঁচ উপকারিতায় ল্যাভেন্ডার অয়েল

   

মাইগ্রেনের সমস্যা হতে পারে যেসব কারণে



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাইগ্রেনের কারণে তীব্র মাথা-ব্যথা / ছবি: সংগৃহীত

মাইগ্রেনের কারণে তীব্র মাথা-ব্যথা / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মাথাব্য়থা খুব অস্বাভাবিক কোনো সমস্যা নয়। ঋতু পরিবর্তন বা হালকা জ্বর হলেও মাথাব্যথা হতেই পারে। তবে মাইগ্রেন কোনো সাধারণ মাথা ব্যথার সমস্যা নয়। এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা তীব্র মাথাব্যথা সহ্য করেন। মাথায় নির্দিষ্ট স্থানে তীব্র কম্পন অনুভূত হয় এবং টন টন করে। এছাড়া চোখে আলো পড়লে বা তীব্র বাতাসে সংবেদনশীলতার কারণে অস্বস্তি, মাথাব্যথার তীব্রতা বেড়ে ওঠা বা বমি বমি ভাব হওয়াও মাইগ্রেনের উপসর্গ। এই যন্ত্রণা কয়েক ঘণ্টা থেকে একাধিক দিন অবধিও স্থায়ী হতে পারে।

মাইগ্রেনের সমস্যা সকলের মধ্যে দেখা যায় না। ধারণা করা হয়, এই সমস্যা বংশ পরম্পরায়ও স্থানান্তরিত হয়। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত জেনেটিক এবং পরিবেশগত অবস্থার কারণে বিশ্বব্যাপী শতকরা ১০ ভাগ মানুষ মাইগ্রেনে ভোগেন। জেনেটিক সংক্রান্ত কারণে মাইগ্রেন আংশিকভাবে দায়ী বলে মনে করা হয়। তবে পেরিফেরাল ট্রিগারের কারণেও মাইগ্রেন হতে পারে। পুরুষদের তুলনায় নারীদের এই রোগের তুলনামূলক বেশি ঝুঁকিতে থাকে।

যেসব কারণে মাইগ্রেন হতে পারে

১. লিঙ্গভেদ: নারী এবং পুরুষদের মধ্যে অনেক সাদৃশ্য থাকলেও ভিন্ন লিঙ্গের কারণে নানারকম হরমোনের তারতম্য দেখা যায়। নারীদের শরীরে থাকা হরমোনের ব্যবস্থাপনার কারণে মাইগ্রেনের সমস্যা বেশি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

২. প্রভাবক: মানসিক চাপ, ঘুমের অভাব, আবহাওয়ার পরিবর্তন, তীব্র গন্ধসৃ্ষ্টিকারী অস্বস্তি কারণে মাইগ্রেনের ব্যথা প্রভাবিত হতে পারে। এই ঘটনাগুলো শনাক্ত করে এড়িয়ে চললে উপকার হতে পারে।  

৩. বংশ: অনেক সময়ের একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে মাইগ্রেন স্থানান্তরিত হয়। সাধারণত বাবা মায়ের থেকে মাইগ্রেনের জিন শিশুদের শরীরে বাসা বাঁধে।

৪. চোখ: মাথার সঙ্গে চোখের বেশ গভীর যোগসূত্র রয়েছে। তাই অনেকে মাইগ্রেনের আগে চোখের ঠিক মতো দেখতে পান না। একে অরাস বলে।   

৫.খাদ্য: ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন১২, ভিটামিন ডি এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিডের মতো কিছু খাদ্য উপাদানের অভাবে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে পারে।

তথ্যসূত্র: নিউজ১৮

;

তামাক সেবনে রয়েছে ক্যান্সারের ঝুঁকি



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
তামাক সেবন ক্যান্সারের কারণ / ছবি: সংগৃহীত

তামাক সেবন ক্যান্সারের কারণ / ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বর্তমান যুগে ক্যান্সার আশঙ্কাজনক একটি রোগে পরিণত হচ্ছে। বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ক্যান্সারের ভয়াবহতার মূল কারণ হলো এর দুশ্চিকিৎস্য হওয়া। আমাদের দেশ এবং পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে মাথা এবং ঘাড়ে ক্যান্সার হওয়ার সংখ্যা বেড়ে চলেছে।

এর কারণ হিসেবে বেশে কিছু ব্যাপার চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অধিকাংশ রোগীর ক্ষেত্রে (শতকরা ৯০ ভাগই) দেখা যায় স্কোয়ামাস সেল ক্যান্সার (এসসিসি) এর পেছনে দায়ী। আবার কিছু ক্ষেত্রে থাইরয়েড এবং লালাগ্রন্থির ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও অনুরূপ দেখা যায়। যদিও উভয় ক্ষেত্রে চিকিৎসা এবং রোগ ব্যবস্থাপনার প্রক্রিয়া ভিন্ন।

ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমসের একটি সাক্ষাৎকারে চিকিৎসক অনিল ডি’ক্রুজ জানান, ‘ক্যান্সার বৃদ্ধিতে এসসিসি বৃহৎ ভূমিকা পালন করে। এটি মস্তিষ্কের ঠিক নিচ থেকে ঘাড় পর্যন্ত বিস্তার লাভ করতে পারে। কলারবোন, মাথা, ঘাড় সহ শরীরের এইসব অংশ প্রায় ১৩-১৪টি অংশে স্বতন্ত্রভাবে ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি ঘটায়।

মাথা এবং ঘাড়ে ক্যান্সার বাড়ার মূল কারণ হিসেবে নেশাজাত দ্রব্য সেবনের প্রবণতাকে চিহ্নিত করেন ডাক্তার অনিল। দিন দিন বিভিন্ন ধরনের তামাক গ্রহণ করার সংখ্যা লাগামহীনভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে অল্প বয়েসিরা বুঝে বা না বুঝে এসব অভ্যাসে জড়িয়ে পড়ছে। ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সের কিশোর বা পথশিশুরা সিগারেট সহ বিভিন্নসহ তামাক ও নিকোটিনজাতীয় যেকোনো নেশাজাত দ্র্রব্য সেবন করার প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। তাই এদের মধ্যে ঘাড় এবং মাথার বিভিন্ন অংশে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ছে।  

ক্যান্সারের ঝুঁকির ব্যাপারে অনিল বলেন, ‘তামাক সেবনকারীরা এমনিতেই মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের বিপজ্জনক সীমায় থাকেন। পাশাপাশি যারা অ্যালকোহলও সেবন করেন, তারা আরও বেশি ক্যান্সারের ঝুঁকিতে থাকেন। এসব অভ্যাসে আসক্ত ব্যক্তিরা হয়তো জানেনও না, এর মাধ্যমেই শরীরে মৃত্যুর বীজ বপন করছেন নিজ হাতেই। সচেতনার অভাবেই মানুষজন এসব রোগের ঝুঁকির সম্পর্কে অবগত থেকে যাচ্ছে।    

 তামাক সেবন ক্যান্সারের কারণ

আরেকজন চিকিৎসক রাজেশ মিস্ত্রী জানান,‘তামাকের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ থাকে, যা ক্যান্সারের বৃদ্ধিতে প্রভাবিত করে। এইচপিভি নামক ভাইরাস সাধারণত ভাইরাল সংক্রমণের মাত্রা বাড়িয়ে মৌখিক স্বাস্থ্যকে দুর্বল করে দেয়। এতে মুখ এবং আশেপাশের অংশে ক্যান্সার কোষ বৃদ্ধির ঝুঁকি বাড়ে।’  

ডাক্তার মিস্ত্রী আরও বলেন,‘ শুধু তামাক নয়, সুপারিতে রয়েছে ওরাল সাব-মিউকাস ফাইব্রোসিস। তাই ঘন ঘন পান খাওয়ার কারণে মুখে প্রিমালিগন্যান্ট অবস্থা সৃষ্টি হয়। এতে সময়ের সাথে সাথে একসময় মুখ হা করার ক্ষেত্রে অসুবিধা সৃষ্টি করে। মুখ খুলতে কষ্ট হওয়ার মতো সমস্যা থেকে শুরু করে ক্যান্সার অবধি হতে পারে।’ এছাড়াও মুখের ক্যান্সারের কিছু সাধারণ উপসর্গ হলো-

*মুখের ঘা সেরে না ওঠা

*মুখ বা গলা থেকে রক্তপাত

*দাঁতে ব্যথা হওয়া বা মাড়ি থেকে আলগা হয়ে যাওয়া এমনকি পড়ে যাওয়া

*ব্যথা কান অবধি ছড়িয়ে পড়া

*গিলতে কষ্ট হওয়া

* গলার টিউমার বা সিস্ট হওয়া

এইসকল সমস্যাগুলো মুখ থেকে শুরু করে গলা, ঘাড় এমনকি মাথার ক্যান্সারের কারণেও দেখা যেতে পারে। তাই এরকম সমস্যাগুলো নজরে পড়লে অবহেলা না করে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।  

;

মাইগ্রেনের সাধারণ উপসর্গ



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মাইগ্রেনের ব্যথা

মাইগ্রেনের ব্যথা

  • Font increase
  • Font Decrease

মাইগ্রেনের ব্যথা আমাদের মধ্যে সাধারণ সমস্যাগুলোর একটি। মূলত মাইগ্রেনের সমস্যার কারণে তীব্র মাথা ব্যথা হয়। মাথায় নির্দিষ্ট স্থানে তীব্র কম্পন অনুভূত হয় এবং টন টন করে। এছাড়া চোখে আলো পড়লে বা তীব্র বাতাসে সংবেদনশীলতার কারণে অস্বস্তি, মাথাব্যথার তীব্রতা বেড়ে ওঠা বা বমি বমি ভাব হওয়াও মাইগ্রেনের উপসর্গ। এই যন্ত্রণা কয়েক ঘণ্টা থেকে একাধিক দিন অবধিও স্থায়ী হতে পারে।

খুব সূক্ষ্ম মাত্রায় ঔষধ সেবনের মাধ্যমে যন্ত্রণা কমানো যেতে পারে। সঠিক চিকিৎসা এবং ভালো ওষুধের মাধ্যমে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। তবে এটি নিরাময় করার স্থায়ী সমাধান হতে পারে না।

মাইগ্রেনের সমস্যা যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে। একেকজনের ক্ষেত্রে সমস্যা একেকরকম হয়। তবে সকলের ক্ষেত্রেই কয়েকটি সাধারণ ধাপে মাইগ্রেনের সমস্যা বাড়তে দেখা যায়। এগুলো হলো- প্রোড্রোম, অওরা, অ্যাটাক, পোস্টড্রোম।

প্রোড্রোম: মূলত মাথাব্যথার তীব্রতা বাড়ার আগের ২৪ ঘণ্টার মুহূর্ত এটি। এই ধাপের উপসর্গ হতে পারে মেজাজ পরিবর্তন, কোষ্ঠ্কাঠিন্য, খাবার খাওয়ার ইচ্ছা, ঘন ঘন প্রসাব, ঘাড় শক্ত হয়ে যাওয়া, বেশি হাই ওঠা সহ আরও অনেক কিছুই হতে পারে।  

অওরা: এই পর্যায়ে মাথা ব্যাথা হওয়ার আগ মুহূর্তে বা মাথাব্যথার সময়ে নানারকম অসুবিধা দেখা দিতে পারে। কয়েক মিনিট থেকে এক ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। এই সময়ে মুখ, বাকযন্ত্র, মাথার সংবেদনশীল অংশে উপসর্গ দেখা দিতে পারে।     

অ্যাটাক বা আক্রমণ: এই পর্যায়ে মাথা ব্যথা তীব্রতার পর্যায়ে চলে যায়। একটানা ৪ থেকে ৭২ ঘণ্টা অবধিও ব্যথা স্থায়ী হতে পারে। চিকিৎসা করা না হলে এই সময়কাল আরও দীর্ঘ হতে পারে।

পোস্টড্রোম: এই পর্যায়ে মাথা সমস্যা ১ থেকে ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। উপসর্গগুলো অনেকটা অ্যালকোহল সেবনের পরে হ্যাংওভারের উপসর্গের সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।  এজন্য এক মাইগ্রেন হ্যাংওভারও বলা হয়।

তথ্যসূত্র: নিউজ১৮

;

ভাইরাল হেপাটাইটিস নিয়ে ভুল যত ধারণা



লাইফস্টাইল ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

ভাইরাল হেপাটােইটিস বা জন্ডিস

  • Font increase
  • Font Decrease

যকৃত মানব শরীরের খুব একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। নালীদের প্রবাহিত হওয়া রক্ত পরিশুদ্ধকরণ করা এর প্রধান কাজ। রক্ত থেকে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে যকৃত। এছাড়াও ভিটামিন সঞ্চয় এবং হরমোনও তৈরি করে। তবে হেপাটাইটিস এমন এক ভাইরাস যা সরাসরি কলিজা, তথা যকৃতেই আক্রমণ করে। এতে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বাঁধাগ্রস্থ হয়। মূলত হেপাটাইটিস ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’, ‘ডি’ এবং ‘ই’ ভাইরাল হেপাটাইটিসের জন্য দায়ী। হেপাটাইটিস ‘এ’ এবং ‘ই’ খাদ্য ও পানি দূষণের ফলে হয়। অন্যদিকে হেপাটাইটিস বি এবং সি রক্তেএবং রক্তরসের মাধ্যমে ছড়ায়। হেপাটাইটিস ডি হওয়ার সম্ভাবনা তাদের থাকে যারা ইতোমধ্যেই হেপাটাইটিস বি তে আক্রান্ত রয়েছেন।   

ভাইরাল হেপাটাইটি থেকে সাবধানে থাকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। কারণ হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগীদের নিয়ে নানারকম কুসংস্কার ছড়িয়ে আছে। এক প্রতিবেদনে ভারতীয় হেপাটোলজি বিশেষজ্ঞ অমিত মান্ডোট বলেছেন, `হেপাটাইটসের ক্ষেত্রে ভাইরাসের আক্রমণ যতটা শঙ্কাজনক, একইরকমভাবে এ্ সম্পর্কিত যে ভ্রান্ত ধারণাগুলো রয়েছে সেগুলোও নানারকম সমস্যা বৃদ্ধি করে। এতে চিকিৎসার ক্ষেত্রেও বাঁধা পড়ে। অনেকে মনে করেন হেপাটাইটিসের সংক্রমণ এইডসের সংক্রমণের মতো। ভয়াবহ ড্রাগ নেওয়ার মাধ্যমে এবং অনৈতিক শারীরিক সম্পর্কে মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এসব একেবারেই ভুল ধারণা।‘

ভাইরাল হেপাটাইটিসে আক্রান্ত রোগী

তিনি ভ্রান্ত ধারনা দূর করার ব্যাপারে বলেন, ‘রক্তের মাধ্যমে হেপাটাইটিস ছড়ায়। এমনটি শিশু জন্মদানের সময় হওয়াও অযাচিত নয়। রক্তদান বা ব্যবহৃত ইঞ্জেকশনের মাধ্যমেও হেপাটাইটিস ছড়াতে পারে। তাই এই রোগ সম্পর্কিত গোড়ামি ভেঙে রোগীকে সুস্থ করে তোলার জন্য সাহায্য করতে হবে। এইজন্য সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

এই সংক্রান্ত আরও একটি ভুল ধারণা হলো, ব্যক্তি পছন্দ এবং জীবনধারার সিদ্ধান্তের কারণেও হেপাটাইটিসে কেউ আক্রান্ত হয়। রোগীর প্রতি সকলের এই বিরুপ দৃষ্টিভঙ্গি পরিস্থিতি আরও বিগড়ে দিতে পারে। একঘেয়ে গোড়ামি সমাজের অগ্রগতির পথেও বাঁধা।      

একত্রিত হয়ে এসব ভুল ধারণা দূর করার আহ্বান করেছেন ডাক্তার অমিত। তিনি বলেন, রোগ নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা, প্রাথমিক পর্যায়ে  শিক্ষাপ্রচার এবং আপপ্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি করা অত্যাবশ্যকীয়। তবেই সকল সাহায্য প্রত্যাশীদের সুস্থতা নিশ্চিত করা সম্ভব।  

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস

;