ফেরি পারাপারে ভোগান্তি, মহাসড়কে কমেছে যানবাহন
পদ্মায় প্রচণ্ড স্রোতের কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় যানবাহনের চাপ কমে গেছে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে। দূরপাল্লার কিছু কিছু যানবাহন চলাচল করলেও সাধারণ পণ্যবাহী ট্রাক ও ব্যক্তিগত ছোট গাড়ির তেমন চাপ নেই।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে দীর্ঘ ভোগান্তির কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে দাবি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতে ভিন্ন রুট হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিামাঞ্চলে যাতায়াত করছেন ব্যক্তিগত ছোট গাড়ি ও পণ্যবাহী ট্রাকের চালকরা।
ভিন্ন রুটে যাতায়াত করায় পণ্য পরিবহনে বাড়ছে খরচ। অতিরিক্ত শ্রম দিতে হচ্ছে পরিবহন চালকদের। আবার রাজস্ব আয় কমছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের।
নদীতে স্রোতের কারণে আপাতত কয়েক দিন এমন ভোগান্তি থেকে রেহাই পাওয়ার কোন উপায় নেই বলে দাবি ফেরিঘাট কর্তৃপক্ষের। তবে দ্রুত সময়ে এই সমস্যা সমাধানের দাবি জানান ট্রাক চালকরা।
পদ্মা নদীতে প্রবল স্রোত থাকার কারণে ফেরিঘাট এলাকায় দীর্ঘ ভোগান্তিতে পড়েছে ৪ শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক ও দুই শতাধিক বাস চালক ও যাত্রীরা। ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ বেশি থাকার কারণে মহাসড়কের বাথুলী ও উথুলী এলাকায় আটকে রাখা হচ্ছে পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের। তবে জরুরি পণ্যবাহী ট্রাকের চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাই উপজেলার বাথুলী এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলগামী দুই শতাধিক পণ্যবাহী ট্রাক চালকদের অপেক্ষা করতে দেখা যায়। ঘাট থেকে প্রায় ৩৭ কিলোমিটার আগেই এসব ট্রাক চালকদের আটকে দিচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ।
খুলনাগামী ট্রাক চালক হুমায়ন মিয়া জানান, নৌরুটে বিপর্যয় হলেই ভোগান্তিতে পড়ে ট্রাক চালকরা। ভিন্ন পথে যাতায়াতের জন্য নির্দেশনা দিচ্ছে হাইওয়ে পুলিশ। কিন্তু ভিন্ন পথে যাতায়াতের জন্য আমাদের খরচ বেড়ে যায় দ্বিগুণ। যে কারণে ভোগান্তি হওয়ার পরও বাধ্য হয়েই আমাদের এই মহাসড়ক হয়ে যাতায়াত করতে হয়। তবে সমস্যা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি পেতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি কামণা করেন তিনি।
গোলড়া হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লুৎফর রহমান বার্তাটোয়েন্টিফোর.কমকে জানান, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল ব্যাহত হওয়ায় ঘাট এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই ট্রাক চালকদের আটকে রাখা হচ্ছে। ঘাটে চাপ কমে গেলে এখান থেকে কিছু কিছু ট্রাক পাঠানো হয়। আবার বিকল্প পথে যাতায়াতে সুযোগ থাকলেও ট্রাক চালকদের ওই পথে যাতায়াতে অনুরোধ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের বাণিজ্য বিভাগের ব্যবস্থাপক সালাউদ্দিন হোসেন জানান, নৌরুটে ছোট বড় মিলে ১৫টি ফেরি রয়েছে। তবে নদীতে প্রচণ্ড স্রোত থাকায় সেগুলো নিয়মিত চলাচল করতে পারছে না। যে কারণে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ভোগান্তি হচ্ছে। এতে করে আগের তুলনায় পারাপার করা গাড়ির সংখ্যাও অনেক কমে গেছে বলে জানান তিনি।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১টি জেলার সাথে রাজধানীতে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক। প্রায় পাঁচ হাজার বাস, ট্রাক ও ছোট গাড়ি প্রতিদিন যাতায়াত করে এই মহাসড়ক দিয়ে।