সাগর তীরে শুঁটকি উৎপাদনের ধুম
কক্সবাজারের সাগর তীরে এখন পুরোদমে চলছে শুঁটকি উৎপাদনের কাজ। শুঁটকি উৎপাদনে রাত-দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন হাজারো শ্রমিকরা। উৎপাদিত শুঁটকি দেশের চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি হচ্ছে বিদেশেও।
উপকূলীয় নাজিরারটেক এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, প্রচলিত পদ্ধতিতে শুকানো শুঁটকি নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকলেও এ বছর সম্পূর্ণ বিষ ও কীটনাশক মুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করা হচ্ছে। এজন্য শুঁটকি মহালের মালিক ও শ্রমিকদের প্রশিক্ষণের পাশাপাশি সচেতনতামুলক সভা-সেমিনার করে যাচ্ছে স্থানীয় মৎস্য বিভাগ। প্রায় ২৫ প্রজাতির মাছ রোদে শুকিয়ে তৈরি করা হয় শুঁটকি।
এরমধ্যে রূপচাঁদা, ছুরি, কুরাল, সুরমা, লইট্ট্যা, পোপা অন্যতম। বাঁশের মাচায় মাছগুলো রেখে তা শুকানোর কাজে ব্যস্ত এখানকার শ্রমিকরা। বর্ষার ৩ মাস ছাড়া বছরের ৯মাস শুঁটকি তৈরি হয়। তবে সবচেয়ে বেশি শুঁটকি তৈরি হয় শীত মৌসুমে। শীতের শুরু থেকে শুঁটকি পল্লীতে বেড়েছে কাজের চাপ। তাই একটু বেশি আয়ের জন্য রাত-দিন কাজ করছেন এখানকার শ্রমিকরা।
জানা যায়, ৮০ দশকের শুরু থেকে কক্সবাজার শহরের নাজিরারটেক এলাকায় শুঁটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই থেকে এই শুঁটকি দেশে ব্যাপক প্রচার প্রসার লাভ করে। এরপর মধ্যপ্রাচ্য সৌদিয়া, দুবাই, হংকং ও কুয়েতসহ বিশ্বের নানা দেশে রপ্তানি প্রক্রিয়া শুরু করেন ব্যবসায়ীরা।
শুঁটকি রপ্তানি করে প্রতিবছর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে এবং সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব অর্জন করে। এজন্য শুঁটকির গুনগতমান ও সুনাম ধরে রাখার জন্য সম্পূর্ণ বিষ ও কীটনাশক মুক্ত পরিবেশে উৎপাদন করা হচ্ছে শুঁটকি।
মহাল মালিক সেলিম উদ্দিন বলেন, আগের শুঁটকি নিয়ে যে প্রশ্ন ছিল তা এখন সম্পূর্ণ কেটে গেছে। এখন বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করছি আমরা। আগে শুঁটকিতে লবণ ও বিষ প্রয়োগ করা হতো। যার কারণে মানুষের স্বাস্থ্যর জন্য খুবই ক্ষতিকর ছিল। সে কথা মাথায় নিয়ে আমরা বিষ ও লবণ মুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করছি এখন।
মহাল মালিক মৌলভী নাছির উদ্দিন বলেন, বিদেশে বিষ মুক্ত শুঁটকি চাহিদা বেড়েছে। তাই আমরা পুরোদমে বিষ মুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করছি। আশা করি এখন কক্সবাজারের শুঁটকি নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকবে না।
নাজিরারটেক মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সভাপতি মো. আতিক উল্লাহ কোম্পানি বার্তা ২৪কে বলেন, শুঁটকি উৎপাদনে কেউ যাতে কিটনাশক ব্যবহার করতে না পারে সে লক্ষ্যে প্রশাসন কঠোর অবস্থানে রয়েছে। এ বিষয়ে তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। আশা করি সবাই বিষমুক্ত শুঁটকি উৎপাদন করবে।