এই সময়ের ছোটপর্দার শীর্ষ স্থানীয় অভিনেত্রীদের একজন তানজিন তিশা। উপহার দিয়েছেন অনেক হিট নাটক। পাশাপাশি ওটিটি প্ল্যাটফর্মেও কাজ করেছেন তিনি।
টিভি এবং ওটিটির পর এবার সিনেমায় নাম লেখাচ্ছেন তিশা। তাকে নিয়ে নির্মিতব্য প্রথম সিনেমাটির নাম ‘ঘুমপরী’। এই সিনেমায় তার সঙ্গে জুটি বাঁধছেন সংগীতশিল্পী প্রীতম হাসান।
সম্প্রতি ওটিটির সেরা অভিনেত্রী হিসেবে দীপ্ত অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন এই তারকা। এক অনুষ্ঠানে তানজিন তিশা বলেন, ‘আমি ভালো ভালো অনেক কাজ করছি, যেটা অনেক মেয়ের স্বপ্ন। আমি একটা কথা বিশ্বাস করি, কেউ সৎ থাকলে তাকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারে না। আল্লাহ আমাকে অনেক ভালোবাসেন এ জন্য কোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে আমার সততা দিয়ে পরবর্তী পথ খুঁজে নিতে পারি। এটা আমার কাছে বড় প্রাপ্তি।’
তিনি আরো বলেন, ‘জীবনে উত্থান-পতনের মধ্যে ভালো জিনিসটা গ্রহণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারি। এটাকে আমার একটা খুব ভালো দিক বা গুণ বলতে পারি, যেটা হয়তো অনেক আর্টিস্ট পারে না।’
এদিকে, গতকাল থেকেই মাদককাণ্ডে জড়িয়েছে তিশার নাম। এ বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।
জহির রায়হানের ‘হাজার বছর ধরে’র টুনির কথা পড়ে বড় হয়েছেন একটি প্রজন্ম। আর সেই চরিত্রেই রূপালী পর্দায় হাজির হয়ে দর্শকের নজর কেড়েছিলেন শারমিন জোহা শশী।
সেটি ছিলো অভিনয় ক্যারিয়ারের একেবারে গোড়ার দিকের কাজ। দুই দশক ধরে নিয়মিত অভিনয় করছেন এই তারকা।
ক্যারিয়ারের ২০ বছর পার করে শশী বলেন, ‘দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ভক্তরা আমায় চেনেন, ভালোবাসেন, এটাই আমার অন্যতম পাওয়া। তবে এই পথ কখনও মসৃণ ছিল, কখনও কঠিন। তারপরও সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। শুরুর দিনগুলোর মতো এখনও ভালো কিছুর প্রতীক্ষায় আছি। নিজের মতো করে ভালো আছি। ক্যারিয়ারে অনেক সময় হয়তো সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করেছি। কিন্তু এসব নিয়ে এখন আর ভাবি না।’
তার সমসাময়িক অনেকেই অনেক আগে বিয়ে শাদী করে সংসারী হয়েছেন। কেউ কেউ শোবিজ অঙ্গন ছেড়েও দিয়েছেন। কিন্তু শশী ছিলেন কাজ নিয়ে।
অবশেষে চলতি সপ্তাহেই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন তিনি। তার বরের নাম খালিদ হোসাইন অভি। নতুন জীবন নিয়ে শশী বলেন, ‘আমাদের জন্য দোয়া করবেন; যাতে আগামীর দিনগুলো ভালোভাবে কাটাতে পারি।’
জীবনসঙ্গীকে নিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘প্রায় দেড় বছর আগে একটি কোরিয়ান নাটকের বাংলা ডাবিংয়ের সূত্রে আমাদের পরিচয়। সেই ডাবিং পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন অভি। সেই পরিচয় থেকেই ভালো লাগা ও অবশেষে পরিণয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভি আগে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। এদিকে সেই সময় আমার পরিবার থেকেও বিয়ের জন্য পাত্র দেখা শুরু করেছেন। এক সময় দু’জনই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাবতে থাকি। আমাদের কাছে মনে হয়, বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। পরিবারের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হলো। দুই পরিবারের কথা হলো। আর আমরাও নিজেদের মধ্যে কথা বলে, একসময় সিদ্ধান্ত নিই বিয়ে যেহেতু করতেই হবে, তাই আর বেশি দেরী করিনি। কারণ, আমাদের একের অন্যের কাছে নিজেদের যোগ্য মনে হয়েছে। দু’জনই এমন জীবনসঙ্গী খুঁজছিলাম। পাওয়ার পর অবশেষে বিয়ে করে ফেললাম।’
অভি অডিও ইন্ডাস্ট্রির সঙ্গে জড়িত। আগে একটি ডাবিং কোম্পানিতে কাজ করতেন। এখন নিজেই একটি ডাবিং কোম্পানি চালু করছেন। পাশাপাশি তিনি নিজেও অনেক সিরিজ, কার্টুন, অ্যানিমেশনে ভয়েস দিয়েছেন। ডাবিং ডিরেকশন নিয়েই তার আগামীর পরিকল্পনা।
শশী তার অভিনয় ব্যস্ততা নিয়ে বলেন, ‘আমি নিয়মিত নাটকে কাজ করছি। কিন্তু সংখ্যায় কম। যখন একের পর এক চিত্রনাট্য পেয়েছি, তখনও কম করতাম, এখনও ত-ই করি। সত্যি বলতে, কাজ ছাড়া কারও সঙ্গে বাড়তি কথা হয় না। আমার গণসংযোগ একটু দুর্বল।
বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের বিপরীতে ‘রাইস’ ছবি করার পর ভারতে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান পাকিস্তানের শীর্ষ অভিনেত্রী মাহিরা খান। কিন্তু পর পর এমন কিছু ঘটনা ঘটে যায় যে ভারতে আর কাজ করা হয়ে ওঠেনি তার।
সব থেকে বিতর্কিত ছিল রণবীর কাপুরের সঙ্গে মাহিরার ধূমপানের ভিডিও। সঙ্গে নজরে আসে অভিনেত্রীর পিঠে কামড়ের দাগ। রণবীরের সঙ্গে ওই ছবি প্রকাশ্যে আসার পর কী ভাবে দিন কেটেছিল মাহিরার, তা নিয়ে এতোদিন একেবারেই চুপ থাকলেও এবার মুখ খুললেন অভিনেত্রী।
ছবিটি নাকি নিউ ইয়র্কে তোলা। একটি হোটেলের বাইরে একান্তে সময় কাটাচ্ছিলেন রণবীর-মাহিরা। অভিনেত্রীর পরনে সাদা পিঠ খোলা জামা, এলোমেলো চুল। রণবীরের পরনে ট্র্যাক প্যান্ট ও টি-শার্ট। হোটেলের বারান্দায় ধূমপান করছেন দু’জনে। এই ছবিতে অনেকেরই নজর কাড়ে মাহিরার পিঠে কামড়ের দাগ।
সেই একান্ত সময়ের ভিডিও ফাঁসের পর তা নিয়ে নানা জল্পনা শুরু হয়। এই ঘটনার পর নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে থাকেন মাহিরা। অনেকেই তাকে বলতে শুরু করেন, তার ক্যারিয়ার এবার শেষ! তখন লম্বা সংসার ভেঙেছে সদ্য, ছেলে ছোট। যার ফলে ভীষণ চাপ অনুভব করেছিলেন তা স্বীকার করে নেন মাহিরা। তিনি বলেন, ‘মানুষের সমালোচনায় আমিও ভেঙে পড়েছিলাম। বুঝতে পারছিলাম না কীভাবে সামাল দেব। একটা সময় রাতভর কেঁদে কাটিয়েছি।’
সময়টা কঠিন ছিল কিন্তু মাহিরা কঠিন সময় একা পার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তার কথায়, ‘সেই বছরটা কঠিন একটা সফরের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। একেতো আমার বিবাহবিচ্ছেদের ঘটনা ঘটে, তারপর ছেলেকে একা হাতে মানুষ করছি। ও দিকে প্রতিবেশী দেশের পাকিস্তানি শিল্পীদের উপর নিষেধাজ্ঞা। সব মিলিয়ে বড্ড কঠিন ছিল সময়টা। তবে সেভাবে কাউকে বুঝতে দিইনি।’
সেই ঘটনার পর অনেকগুলো বছর কেটে গিয়েছে। গত বছর দ্বিতীয় বার ঘর বেঁধেছেন মাহিরা। রণবীরও এখন আলিয়া ভাটের সঙ্গে সুখের সংসার করছেন। তাদের ঘর আলো করে এসেছে কণ্যা রাহা।
তার প্রাপ্তির ঝুলি যে কোন শিল্পীকে অনুপ্রানীত করবে। পেয়েছেন দেশের সবচেয়ে বড় স্বীকৃতি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার, ডেইলি স্টার ওটিটি অ্যাওয়ার্ড, বািইফাসহ দেশের অন্য সব প্রেস্টিজিয়াস অ্যাওয়ার্ড তো পেয়েছেনই। তবে সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন সেরা অভিনেত্রী ক্যাটাগরীতে এশিয়া প্যাসিফিক অ্যাওয়ার্ড জয় করে। তিনিই সেই অভিনেত্রী যার সিনেমা (রেহানা মরিয়ম নূর) বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইতিহাসের প্রথম সিনেমা হিসেবে কান চলচ্চিত্র উৎসবে অফিসিয়াল সিলেকশন পায়। এবং এখন পর্যন্ত দেশের সেই একটি ছবিই এই সস্মান পেয়েছেন।
এতোক্ষণে বুঝে গেছেন কার কথা বলা হচ্ছে। তিনি আজমেরী হক বাঁধন। যিনি ঘুরেছেন দেশ-বিদেশের বড় বড় চলচ্চিত্র উৎসবে। এরপর তাকে নির্বাচন করা হয় জুরি বোর্ড মেম্বার হিসেবে। ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত আইএমটুমুরো চলচ্চিত্র উৎসব ও ভারতের সম্মানজনক বেঙ্গালরু চলচ্চিত্র উৎসবের জুরি হিসেবে তাকে মনোনীত করা হয় এ বছরের শুরুর দিকে। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই বাঁধন দিলেন নতুন সুখবর। তিনি এবার দেশের সবচেয়ে বড় উৎসব ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর জুরি হিসেবে মনোনীত হয়েছে।
আগামী ১১ জানুয়ারি শুরু হবে ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের ২৩তম আসর। ৯ দিনব্যাপী উৎসবে প্রদর্শিত হবে ৭৫টি দেশের ২৫০টির মতো সিনেমা। এবারের উৎসবে জুরি বোর্ডের দায়িত্ব দেখা যাবে চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধনকে। আজ উৎসবের ফেসবুক পেজে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
২৩তম ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে ওমেন ফিল্মমেকার বিভাগে জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বাঁধন। এ বিভাগে জুরির দায়িত্বে আরও আছেন লন্ডনপ্রবাসী বাংলাদেশের অভিনেত্রী ও নির্মাতা লিসা গাজী, চিনের মেই পো রেইনবো ফং এবং ইরানি অভিনেত্রী হুদা মোগাাদ্দাম মানিশ।
ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে জুরির দায়িত্ব পাওয়াটা সম্মানের বলে মনে করেন অভিনেত্রী বাঁধন। উৎসবে অংশ নিয়ে নতুন অভিজ্ঞতা নিতে উন্মুখ তিনি। বাঁধন বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘অনেক বছর ধরে ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসব আয়োজিত হচ্ছে। এমন সম্মানজনক একটি উৎসবে জুরি হিসেবে অংশ নেওয়া আমার জন্য সম্মানের, অনেক আনন্দের। অপেক্ষায় আছি বাকি জুরিদের সঙ্গে কাজ করার।’
বাঁধন আরও বলেন, ‘আমার কাছে ফেস্টিভ্যাল মানেই ইন্টারেস্টিং বিষয়। “রেহানা মরিয়ম নূর” সিনেমার জন্য অনেক ফেস্টিভ্যালে যেতে হয়েছে। কান উৎসব থেকে শুরু করে পৃথিবীর বড় বড় উৎসবে শিল্পী হিসেবে অংশ নিয়েছি। তবে একজন বিচারক হিসেবে ফেস্টিভ্যালে উপস্থিত থাকা, সিনেমা দেখা, সেগুলো বিচার করা খুব চ্যালেঞ্জিং এবং একসাইটিং। নতুন নতুন অনেক মানুষের সঙ্গে পরিচয় হয়, এটাও ভীষণ আনন্দের।’
এর আগে ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত আইএমটুমুরো চলচ্চিত্র উৎসব ও বেঙ্গালুরু চলচ্চিত্র উৎসবে জুরি হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা আছে বাঁধনের। তবে দুই উৎসবেই যোগ দিয়েছিলেন অনলাইনে। এবারই প্রথম সশরীরে কোনো উৎসবের জুরি হিসেবে অংশ নেবেন বাঁধন। তিনি বলেন, ‘কাজ থাকায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত ব্রাসেলসের আইএমটুমুরো ফেস্টিভ্যালে অনলাইনে যুক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করেছিলাম। এ ছাড়া ভিসা না দেওয়ার কারণে ভারতের বেঙ্গালুরু উৎসবে জুরি হিসেবে উপস্থিত হতে পারিনি। যদিও কর্ণাটক রাজ্য থেকে আমাদের দেশের ভারতীয় হাইকমিশনের নিকট অনুরোধ করা হয়েছিল আমার ভিসার জন্য। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ভিসা না পাওয়ায় অনলাইনে যোগ দিতে হয়েছিল। এবারই প্রথম সশরীরে জুরি হিসেবে ফেস্টিভ্যালে থাকতে পারব এটা আমার জন্য অনেক আনন্দের। উৎসবটি সবার জন্য উন্মুক্ত। সবাইকে উৎসবে এসে দেশ-বিদেশের সিনেমার দেখার আমন্ত্রণ জানাই।’