অসুস্থতা দেখা দিতে পারে আপনার রান্নাঘর থেকেও!
নিজ ঘরে তৈরি খাবার খাওয়া হলো সবচেয়ে স্বাস্থ্যসম্মত।
যতই নামীদামী কিংবা পরিচিত রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কেনা হোক না কেন, সন্দেহ থেকেই যায়। রেস্টুরেন্টের রান্নাঘর কতটা পরিষ্কার থাকে, সে বিষয়ে কমবেশি সকলেরই ধারণা থাকে। কিন্তু নিজের রান্নাঘর ও রান্নাঘরে ব্যবহৃত জিনিসপত্র কতটা পরিষ্কার ও স্বাস্থ্যসম্মত সে সম্পর্কে ধারণা নেই অনেকের।
নিজের রান্নাঘরে ব্যবহৃত জিনিসপত্র থেকেও অসুস্থতা বাসা বাঁধতে পারে শরীরে। বিশেষত বহু দিনের পুরনো বাসন ও রান্নার বিভিন্ন ধরণের সরঞ্জামাদি থেকেও দেখা দিতে পারে রোগের প্রকোপ। জেনে রাখুন নিজ রান্নাঘরের কোন জিনিসগুলোর বিষয়ে এখন থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
বহুদিনের পুরনো অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র
রান্নার সময় অ্যালুমিনিয়ামের মাত্র আগুনের উচ্চতাপএ বারবার পুড়ে যায় এবং বাদামী বর্ণ ধারণ করে। এছাড়া প্রায়শ এইসকল পাত্রে বাসি খাবার রেখে দেওয়া হয়। ফলে খুব সহজেই পাত্রে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নেয়। অ্যালুমিনিয়ামের পাত্র দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে এই সকল পাত্র থেকে অ্যালুমিনিয়াম পার্টকেল খাবারে মিশে যাওয়া শুরু হয়। যা স্বাস্থ্যের পক্ষে হুমকি স্বরূপ।
দাগযুক্ত কাপ ও গ্লাস
অনেকেই ভাবেন দীর্ঘদিন একই কাপ কিংবা গ্লাসে চা ও কফি পানের ফলে সেই পাত্রে দাগ বসে যায়। যা আদতে ভুল ধারণা। পানি পানের জন্য ব্যবহার করা হলেও এই সকল পাত্রে দাগ দেখা দিয়ে থাকে। যা ক্যালসিয়াম কার্বোনেটের মিশ্রণ। দাগযুক্ত এই সকল পাত্রে পানীয় পান করা অব্যহত রাখলে পেটের সমস্যা দেখা দিতে পারে ঘনঘন। এই দাগ সম্পূর্ণ দূর করার জন্য বেকিং সোডা ও ভিনেগারের মিশ্রণ ব্যবহার করতে হবে।
চপিং বোর্ড
প্রথমেই মনে রাখতে হবে, মাছ-মাংস ও সবজির জন্য কোনভাবেই একই চপিং বোর্ড ব্যবহার করা যাবে না। কাঁচা মাছ-মাংসের জীবাণু চপিং বোর্ড পরিষ্কার করার পরেও থেকে তাতে থেকে যায়। যা খুব সহজেই সবজির সঙ্গে মিশে যায় এবং দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে। যেহেতু মাছ-মাংসের তুলনায় সবজি রান্নায় তুলনামূলক কম সময় প্রয়োজন হয়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই জীবাণুগুলো সম্পূর্ণ ধ্বংস হয় না। যা শরীরে প্রবেশের পর নানান ধরণের রোগের প্রকোপ তৈরি করে থাকে।
দীর্ঘদিন মেলামাইনের পাত্রের ব্যবহার
সহজলভ্য, সুলভ মূল্য ও সহজে ভাঙ্গে না বলে মেলামাইনের তৈরি বাসনের চাহিদাও বেশি। তবে কোনভাবেই এই মেলামাইন গরম তাপে ব্যবহার করা যাবে না। এছাড়া একই মেলামাইনের পাত্র দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে কিডনি স্টোনের মতো গুরুত্বর শারীরিক সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
নন-স্টিকি পাত্র
নন-স্টিকি পাত্রে রান্নার সুবিধা হলো তেল খুব কম প্রয়োজন হয়। এমনকি ক্ষেত্র বিশেষে তেলের প্রয়োজনও হয় না। কিন্তু এই সুবিধার বদলে নন-স্টিকি পাত্র তৈরি করে শারীরিক সমস্যা। পাত্রের উপরের নন-স্টিকি কোটিং উচ্চ তাপে খুব স্বল্প মাত্রায় কেমিক্যাল নির্গত করে থাকে। যা পরবর্তিতে লিভার ও পাকস্থলীর সমস্যা তৈরি করে।
কফি মেকার
কফি মেকারের রিসার্ভেয়রে প্রচুর পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস থাকে। যা থেকে পেটের সমস্যা সহ অন্যান্য শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে সহজেই। তাই প্রতিবার ব্যবহারের পর গরম পানিতে সম্পূর্ণ কফি মেকারের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করতে হবে ভালোভাবে।
আরো পড়ুন: নিত্য ব্যবহার্য জিনিসে বিষাক্ত হচ্ছে ঘরের পরিবেশ
আরো পড়ুন: শীতকালেও কমবে না রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা!