পায়ের গোড়ালি ব্যথায় বিশেষজ্ঞ পরামর্শ



মেহেরুন নেসা, ফিজিওথেরাপিস্ট
পর্যাপ্ত বিশ্রামে গোড়ালির ব্যথা কমবে।

পর্যাপ্ত বিশ্রামে গোড়ালির ব্যথা কমবে।

  • Font increase
  • Font Decrease

আমাদের শরীরের সমস্ত ভার গোড়ালির মাধ্যমে মাটিতে চলে যায় এবং আমরা হাঁটা চলাফেরা করতে পারি। আমাদের মধ্যে অনেকেই পায়ের গোড়ালি ব্যথায় ভুগছেন। কেউ কেউ সকালে ঘুম থেকে উঠে মাটিতে পা ফেললে গোড়ালিতে প্রচন্ড ব্যথা অনুভব করেন। আস্তে আস্তে কয়েক কদম পা ফেললে ব্যথা কিছুটা কমে যায়। আবার কারও কারও মনে হয় পায়ের গোড়ালিতে সুচ ফুঁড়ে আছে এই রকম ব্যথা। তবে যে ধরনের ব্যথাই হোক না কেন গোড়ালি ব্যথা অত্যন্ত কষ্টদায়ক।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564034852764.jpg

যে কারণে গোড়ালি ব্যথা হয়

প্লান্টার ফ্যাসাইটিস: পায়ের গোড়ালি ব্যথার অন্যতম কারণ প্লান্টার ফ্যাসাইটিস। আমাদের গোঁড়ালি থেকে পায়ের আঙ্গুল পর্যন্ত একটা শক্ত ব্যান্ডের মতো লাগানো থাকে, যা পায়ের আকৃতিকে রক্ষা করে। একে প্ল্যান্টার ফাসা বলে। এই শক্ত ব্যান্ডে চাপ বা প্রদাহ হলে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়।

ক্যালকেনিয়াম স্পোর বা গোঁড়ালির নিচে হাড়ের বৃদ্ধি: সাধারণত গোড়ালির হাড়ে ক্যালসিয়াম জমে একটা তীক্ষ্ম হাড়ের মত বাড়তি অংশ তৈরী করে। এই বাড়তি অংশ গোড়ালির নিচের লিগামেন্ট বা মাংসপেশী ও টিস্যুতে চাপ প্রয়োগ করলে ব্যথা অনুভূত হয়।

গাটে বাত: সাধারণত ইউরিক অ্যাসিড বেশী হলে এটি হয়।

ফ্রাকচার বা হাড় ভাঙ্গা।

মচকানো।

হাড় ক্ষয় ইত্যাদি।

কাদের গোড়ালির ব্যথা বেশী হয়

১. যাদের ওজন বেশী

২. যারা সাধারণত দৌড়ানো বা জগিং করার সাথে জড়িত যেমন- খেলোয়াড়।

৩. ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের কাজ কম করেন এমন ব্যক্তি।

৪. ডায়াবেটিস রোগী।

৫. যাদের পায়ের পাতা জন্মগতভাবে ফ্লাট বা খুব বেশী খাঁজ।

৬. যাদের ‘কাফ’ মাসেল টাইট।

৭. যারা সঠিক মাপের জুতা ব্যবহার করেন না।

৮. দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকার কাজ করেন যারা যেমন- ট্রাফিক পুলিশ।

৯. মেয়েরা যারা হাইহিলের জুতা পরতে পছন্দ করেন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564035078829.jpg

গোড়ালি ব্যথায় কী করণীয়:

১. নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস করুন। গবেষনা বলছে; সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট হাঁটলে যে কোন ব্যথা থেকে মুক্ত থাকা যায়।

২. যদি গোড়ালি ব্যথা হয়েই যায় তাহলে জীবনযাত্রার ধরন বদলান। খুব বেশী হাইহিলের জুতা, টাইট জুতা পরার অভ্যাস ত্যাগ করুন। নরম স্লিপার আরামদায়ক জুতা ব্যবহার করুন। প্রয়োজনে হিল কুশন বা কৃত্রিম আর্চ (খাঁজ) ব্যবহার করুন। সাধারণত গোড়ালির নিচে এক ইঞ্চির মত উুঁচ হলে গোড়ালি ব্যথা কমে যায়।

৩. পর্যাপ্ত পরিমাণ বিশ্রাম নেবেন।

৪. আইস থেরাপী: বাসায় পায়ের গোঁড়ালির চারপাশে কাপড়ে বরফ জড়িয়ে ১০ মিনিট ম্যাসেজ করুন। এটি দিনে ৩-৪ বার ১৫-২০ মিনিট করুন। কখনোই সরাসরি বরফ ম্যাসেজ করবেন না।

৫. কিছু স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ বাসায় করুন। এতে আপনার গোঁড়ালি আরও শক্তিশালী এবং সুদৃঢ়
হবে।

ক) একটি টেনিস বল পায়ের গোড়ালি থেকে পাতা পর্যন্ত ১৫-২০ বার রোলিং করুন। এটি দিনে ৩- ৪ বার করুন।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564035093621.jpg

খ) কোনো দেয়ালের কাছে দাঁড়িয়ে গোঁড়ালি তুলে পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলের উপর ভর করে দাঁড়ান এবং ২০ সেকেন্ড ধরে রাখবেন। এটি ১০ বার করে দিনে ৩-৪ বার করবেন।

গ) বিছানা বা মেঝেতে পা সোজা করে বসে তোয়ালে দিয়ে পায়ের পাতা টেনে সামনে দিকে আনুন এবং ৩০ সেকেন্ট ধরে রাখুন। এটি ১০ বার করে দিনে ৩-৪ বার করুন।

৬. ফিজিওথেরাপী: এরপরও যদি ব্যথা না কমে তবে আপনি আপনার নিকটবর্তী একজন ভালো ফিজিওথেরাপী চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। পায়ের গোঁড়ালি ব্যথায় ফিজিওথেরাপী খুবই কার্যকরী চিকিৎসা, আলট্রাসাউন্ড থেরাপী, প্যারাফিন ওয়াক্স বাথ, ডিপ ট্রান্সভার্স ফ্রিকশন ম্যাসেজ, টেপিং গোড়ালি ব্যথায় খুবই কার্যকরী।

৭.খাদ্যাভাস: পায়ের গোড়ালি ব্যথা কমানোর জন্য প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি সমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। অ্যান্টি-ইনফ্লামেটরি খাবারে রয়েছে ভিটামিন, মিনারেলস, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, MSM (মিথাইলসালফোনাইলমিথেন) এবং ভিটামিন সি। পালংশাক কমলা, মিষ্টি কুমড়া, টমেটো, আনারস, গাজর, স্ট্রবেরী, ব্রকলি, ব্লু-বেরী, হলুদ ইত্যাদি খাবার অ্যান্টি ইনফ্লামেটরী সমৃদ্ধ যা পায়ের গোড়ালি ব্যথায় খুবই উপকারী।

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2019/Jul/25/1564035160997.jpg

ওগেমা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন: টুনা ফিস, সলমন ফিস, অলিভ অয়েল, অ্যাভোকোডা, খুবই উপকারী। প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার যেমন: মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ইত্যাদি গ্রহণ করুন। দিনে কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করুন। চিনি জাতীয় এবং প্রসেসিং খাবার যেমন-সাদা পাউরুটি, জ্যাংক ফুড, বার্গার, ওমেগা-৬ সমৃদ্ধ খাবার পরিহার করুন। তাই পায়ের গোঁড়ালি ব্যথা রোধে সঠিক ধরনের জীবন যাপন করুন, প্রয়োজনীয় ব্যায়াম, পরিমিত পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন, সুস্থ থাকুন।

   

'শিশু স্নায়ুরোগীদের বিশ্বমানের সেবা দিচ্ছে বিএসএমএমইউ'



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
শিশু স্নায়ুরোগীদের বিশ্বমানের সেবা দিচ্ছে বিএসএমএমইউ

শিশু স্নায়ুরোগীদের বিশ্বমানের সেবা দিচ্ছে বিএসএমএমইউ

  • Font increase
  • Font Decrease

'শিশু স্নায়ুরোগীসহ সকল বিভাগে বিশ্বমানের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) বর্তমান প্রশাসন বেশ মনোযোগী। শিশু স্নায়ুরোগীদের সেবার জন্য বিশ্বে যে ধরনের সেবা দেয়া হয় সেটিও এখানে দেয়া হচ্ছে। সামনে আরও উন্নতমানের সেবা দেবার লক্ষ্যে কাজ চলছে।' 

বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) বিএসএমএমইউয়ে শিশু স্নায়ুরোগের সেবায় ইএমজি সেবা ও নিউরো-মাসকুলার ডিজঅর্ডার ক্লিনিক উদ্বোধনকালে ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, 'আজ ইনিস্টিটিউট-অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিসঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা) ও শিশু নিউরোলজি বিভাগের জন্য একটি স্মরণীয় দিন। ইপনায় সেবা নিতে আসা বিশেষ শিশুরা বেশ সংবেদনশীল। তাদের বাড়তি যত্নের প্রয়োজন। চিকিৎসকরা যেমন বিশেষ শিশুদের যত্ন দেবেন, তার চেয়ে বেশি সেবা পরিজনদের মাধ্যমে দিতে হবে। এতে করে বিশেষ শিশুরা দেশের সম্পদে পরিণত হবে। বিশেষ শিশুদের মেধার বিকাশে কাজ করছে ইপনা।' 

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরোডিজঅর্ডার এন্ড অটিজম (ইপনা) ও শিশু নিউরোলজী বিভাগের যৌথ উদ্যোগে ক্লিনিকটি চালু করার মাধ্যমে শিশু স্নায়ু রোগীদের চিকিৎসা ও গবেষণার জন্য নতুন একটু দ্বার উন্মোচিত হলো।

প্রসঙ্গত, নার্ভ কনডাকশন স্টাডি (এনসিএস) ও ইলেকেট্রোমায়োগ্রাম (ইএমজি) পরীক্ষার মাধ্যমে শিশুদের স্নায়ুরোগ ও মাংসপেশির রোগ শনাক্ত করনে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

অনুষ্ঠানে ইপনার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আকতার, শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কানিজ ফাতেমা, অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার কুন্ডু, অধ্যাপক ডা. সাঈদা তাবাস্সুম আলম, সহকারি অধ্যাপক ডা. বিকাশ চন্দ্র পাল, সহকারী অধ্যাপক ডা. সানজিদা আহমেদসহ বিভাগের সকল ফ্যাকালটি ও চিকিৎসক উপস্থিত ছিলেন।

;

স্বাস্থ্য ক্যাডারে স্থায়ী হলেন ৪৩৮ জন



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের স্থায়ী নিয়োগ পেয়েছে ৪৩৮ জন। এর মধ্যে সহকারী সার্জন পদে ৪২০ জন সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদে ১৮ কর্মকর্তার চাকরি স্থায়ী করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের পার-২ অধিশাখার  উপসচিব কমল কুমার ঘোষ স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি প্রজ্ঞাপনে এ আদেশ দেয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ এর বিধি ৭ মোতাবেক বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের সহকারী সার্জন পদের ৪২০ কর্মকর্তার চাকরি তাদের নামের পাশে বর্ণিত তারিখ থেকে স্থায়ী করা হলো।

অপর প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা ১৯৮১ এর বিধি ৭ মোতাবেক বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারের সহকারী ডেন্টাল সার্জন পদের ১৮ কর্মকর্তার চাকরি তাদের নামের পাশে বর্ণিত তারিখ থেকে স্থায়ী করা হলো।

 

;

ই-সিগারেট পুরোপুরি নিষিদ্ধের দাবি বিশিষ্টজনদের 



ডেস্ক রিপোর্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশে প্রধানত নগরাঞ্চলের কিশোর-তরুণরাই ই-সিগারেট ব্যবহার করছেন। তাই ভ্রান্ত ধারণা আর উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারের ফলে দ্রুতই এই বয়সী নাগরিকদের মধ্যে ই-সিগারেটের ব্যবহারের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনিতেই তামাক ব্যবহারের হারের বিচারে বাংলাদেশ বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলোর একটি। এর মধ্যে আরও একটি নতুন তামাক পণ্যের প্রাদুর্ভাব আগামী প্রজন্মের স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি। তাই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে দেশে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করা একান্ত জরুরি বলে মনে করেন দেশবরেণ্য চিকিৎসক, নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি, এবং তামাক-বিরোধী সামাজিক সংঠনের অংশীজনরা।

সোমবার (২০ নভেম্বর ২০২৩) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে ‘ই-সিগারেটের ভয়াবহতা ও আগামী প্রজন্মের স্বাস্থ্য ঝুঁকি’ শীর্ষক ওয়েবিনারে এমন অভিমত ব্যক্ত করেছেন অংশগ্রহণকারিরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সভাপতিত্বে এই অনলাইন আলোচনায় সম্মানিয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ড. এবিএম আব্দুল্লাহ।

প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনের এপিডেমিওলজি ও রিসার্চ বিভাগের প্রধান ড. সোহেল রেজা চৌধুরী, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির, এবং জাতীয় চলচিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী। আলোচনার শুরুতে উন্নয়ন সমন্বয়ের তৈরি একটি সংক্ষিপ্ত তথ্যচিত্রের মাধ্যমে ই-সিগারেটে থাকা নিকোটিন ও অন্যান্য রাসায়নিকের ধোঁয়া সেবনের স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি এবং বিশেষ করে আগামী প্রজন্মের নাগরিকদের ওপর ই-সিগারেটের সম্ভাব্য কুপ্রভাব তুলে ধরা হয়।

ড. আতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশে ই-সিগারেট এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারজাত করা হচ্ছেনা। তবে ক্রমেই এটি যুবসমাজের জন্য বড় হুমকি হয়ে ‍উঠছে। চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে ই-সিগারেটের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে ই-সিগারেট আমদানির যে সুযোগ তৈরি হয়েছে তাকে বড় দুর্ভাবনার বিষয় বলে মনে করেন ড. আতিউর। তামাক কোম্পানিগুলো সচরাচর জনস্বার্থ বিবেচনায় না নিয়ে বাণিজ্যিক লাভালাভকেই মূল বিবেচনায় রেখে থাকে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন বাপা’র সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির।

অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী তার বক্তব্যে ই-সিগারেট-সহ সকল তামাক পণ্য ব্যবহারে শিশু-কিশোরদের নিরুৎসাহিত করতে স্কুল পর্যায়ে সচেতনতা কার্যক্রম, এবং সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার ওপর জোর দেন। ই-সিগারেট ব্যবহারের ক্ষতি সাধারণ সিগারেটের ক্ষতির চেয়ে কম- এমন একটি বিভ্রান্তিকর প্রচারণার মাধ্যমে তামাক কোম্পানিগুলো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কিশোর-তরুণদের হাতে হাতে ই-সিগারেট তুলে দিয়ে অপূরণীয় ক্ষতি করেছে বলে জানান ড. সোহেল রেজা চৌধুরী। বাংলাদেশেও যেন এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয় তা নিশ্চিত করতে এখনই বিদ্যমান তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনটি সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেট নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।

ড. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, বিদ্যমান তামাক ব্যববহারকারিদের একটি বড় অংশই তরুণ। আর নতুন ও আকর্ষণীয় পণ্য হিসেবে ই-সিগারেটের প্রতিও এদের আকৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এর ফলশ্রুতিতে ই-সিগারেটের নিকোটিনে মাধ্যমে এই তরুণদের বিপদজনক অসংক্রামক রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যাবে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিদ্যমান আইন সংশোধনের মাধ্যমে ই-সিগারেট পুরোপুরি নিষিদ্ধের যে উদ্যোগ নিয়েছে তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন ওয়েবিনারে অংশগ্রহণকারিরা। উল্লেখ্য, ভারত ও শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের ২৩টি দেশে ইতোমধ্যেই ই-সিগারেট নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে।

;

সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা বাস্তবায়নের দাবি ড. আতিউরের



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান

ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান

  • Font increase
  • Font Decrease

সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে একটি সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। শনিবার রাজধানী ঢাকায় বাংলাদেশ ক্যানসার এইড ট্রাষ্ট আয়োজিত মোবাসসার মেমোরিয়াল আলোক নিবাস-২ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই দাবি জানান তিনি। 

ড. আতিউর রহমান আরও বলেন, ‘আমরা সমাজে বাঁচি শুধু নিজের জন্য না, আমরা বাঁচি সবার জন্য। রবীন্দ্রনাথ বলতেন, সমাজ যদি সচেষ্ট হয়, অর্থ সমাজ নিজে যদি উদ্যোগী হয়, তাহলে সেই সমাজ চলতে থাকে। সেই সমাজ আরও নিরন্তর উন্নয়ন করতে থাকে। সেটাই টেকসই। সরকার আসে সরকার যায় কিন্তু সমাজ টিকে থাকে। যদি আমরা সমাজে সেই শক্তিটা জ্বালিয়ে দিতে পারি।’

দূরারোগ্য ব্যাধির ঝুঁকিতে থাকা সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা বিবেচনায় সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমার গুরুত্বের কথা তুলে ধরে আতিউর রহমান বলেন, ‘সার্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা খুব প্রয়োজন। মধ্যবিত্ত, উচ্চ মধ্যবিত্ত কেউ যদি বড় অসুখে ধাক্কা খান সেই ধাক্কা মোকাবেলা করবার জন্য শেষ সম্বলটুকু বিক্রি করে হয়তো তিনি সামলাবেন কিন্তু পরবর্তীতে তার সন্তানরা কিভাবে বেঁচে থাকবেন? ভবিষ্যতে সরকার-সমাজ এবং বাজার সবাই মিলে একটি উন্নত ব্যবস্থা তৈরি করতে চাই যাতে একেবারে যারা সাধারণ মানুষ তাদের যাতে আমরা এই পদ্ধতির মধ্যে নিয়ে আসতে পারি।’

https://imaginary.barta24.com/resize?width=700&quality=75&path=uploads/news/2023/Nov/12/1699804643948.jpg

সমাজ ও পরিবারের সহানুভূতি প্রতিটি মানুষের জীবনে খুবই প্রয়োজন উল্লেখ করে বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘জীবনের নানা সংগ্রামে, বিশেষ করে দুঃখের দিনগুলিতে সমাজ-পরিবার পাশে থাকে। আর সবাই চলে যায়। সেইজন্য আমরা দিনশেষে পরিবারেই ফিরে যাই এবং পরিবার যেভাবে অনুভব করে অন্য আর কেউই সেভাবে অনুভব করে না। আমরা যদি সেই আত্মীয়তা বাড়ানোর চেষ্টা করি তবেই সামাজিক পুঁজি আরও বাড়তে থাকবে।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘সম্পদ নিয়ে যাদের দুশ্চিন্তা আছে, যাদের সম্পদ ছেড়ে দিলেও অসুবিধে হবে না, তারা কেন দেবেন না মানবিক কাজে? এক্ষেত্রে সরকারেরও রাজস্ব প্রণোদনা দেওয়ার সুযোগ আছে। এধরণে সেবা প্রতিষ্ঠান ও ফাউন্ডেশনে অনুদান দেবেন তাদের যেন সরকার কিছু সুবিধা বা কর ছাড় পাবেন এমন যদি নিয়ম করা যায় তবে অনেকেই এরকম কাজে এগিয়ে আসবে।’

বাংলাদেশে অন্তর্ভূক্তিমূলক অর্থনীতির প্রবক্তা হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক আতিউর রহমান সামাজিক পুঁজি বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে বলেন, ‘মোসাব্বির আলোক নিবাসে এসে কতগুলি সম্ভাবনার কথা আমরা জানতে পেরেছি। আমাদের এখানেই থেমে থাকলে চলবে না। আমরা যদি একে আরও বড় করতে চাই, তবে সবাইকে হাত মেলাতে হবে। একা মানুষ টুকরো মাত্র। সবাই মিলে হাত দিলে তবেই বড় কাজ হয়। একেই বলে সামাজিক পুঁজি।’


‘আর্থিক পুঁজি যত ব্যবহার করবেন ততো কমবে। কিন্তু যদি সামাজিক পুঁজি…হাতে হাত মেলানোর যে পুঁজি এই পুঁজি যদি আমরা বেশি ব্যবহার করি তবে এটি আরও বাড়বে। এটিই এই পুঁজির ধর্ম। রবীন্দ্রনাথ বলছেন, একা খেয়ে পেট ভরে, পাঁচ জনে মিলে খেলে আত্মীয়তা বাড়ে’-যোগ করে ড. রহমান।

বাংলাদেশ ক্যানসার এইড ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক নাজমুস আহমেদ আলবাব, ট্রাস্টের সভাপতি আনিস এ খান ও সিঙ্গাপুরের পার্কওয়ে ক্যান্সার সেন্টারের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. ফ্রেডি টিও অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন। এসময় ট্রাস্টকে সহযোগিতা দেওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্তা ব্যক্তিরাও উপস্থিত ছিলেন।

;