যাত্রীবাহী লঞ্চে পণ্য পরিবহন, দুর্ঘটনার ঝুঁকি
ঢাকা-পটুয়াখালী নৌ রুটে নিয়মনীতি না মেনে পণ্য পরিবহন করায় বাড়ছে নৌ দুর্ঘটনার ঝুঁকি। পাশাপাশি এসব নৌযানে এবং লঞ্চঘাটে পণ্য পরিবহনে বাড়তি টাকা আদায় করায় পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে জানান ব্যবসায়ী নেতারা।
পটুয়াখালীসহ পুরো দক্ষিণাঞ্চলের অধিকাংশ পণ্য এখনও নৌ পথে পরিবহন করা হয়। তবে পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী ডাবল ডেকার যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোতে অনেক বছর থেকেই পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে। যাত্রীদের পাশাপাশি এসব লঞ্চে পণ্য পরিবহন করায় অনেক সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা দেখা দেয়। কারণ লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের ধারণ ক্ষমতার বাইরে এসব পণ্য পরিবহন করা হয়।
এদিকে লঞ্চে যাত্রীদের পরিবহন বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হলেও লঞ্চে কী পরিমাণ পণ্য পরিবহন করা হচ্ছে সে বিষয়গুলো থাকে অনেকটা আড়ালে।
এ ছাড়া পণ্য পরিবহনে ব্যবসায়ীদের বাড়তি ভাড়া এবং ঘাটে টাকা দিতে হয় বলে অভিযোগ পটুয়াখালীর বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের। একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘ দিন থেকে পটুয়াখালী লঞ্চঘাটে ইজারা বাবদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তিন থেকে চারগুণ টাকা আদায় করা হচ্ছে। সম্প্রতি এর পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। ঢাকা থেকে পণ্য পরিবহনে এ ধরনের বাড়তি ফি পরিশোধ করার ফলে সামগ্রিকভাবে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। যা সাধারণ ভোক্তাদেরকেই দিতে হচ্ছে।
সম্প্রতি এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে এবং এই রুটে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচল শুরু করার দাবিতে পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স সভাপতি বরাবর ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন করা হয়েছে। আবেদনে পণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, লঞ্চ ছাড়ার সময় না থাকা, অতিরিক্ত যাত্রী চাপ, পণ্য খালাসে হয়রানি ও অর্থ আদায়, ঈদের মুহূর্তে পণ্য পরিবহন বন্ধ, দুর্যোগের সময় ঝুঁকি প্রতিরোধে বিকল্প হিসেবে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের দাবি জানানো হয়।
এদিকে, পটুয়াখালী জেলার কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য যথাযথভাবে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, চাঁদপুর ইত্যাদি এলাকায় পাঠাতে না পারায় কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তবে জাহাজ চলাচল করলে এসব এলাকায় পটুয়াখালী থেকে নিয়মিত পণ্য পাঠানো যাবে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
ঢাকা-পটুয়াখালী রুটের একাধিক যাত্রী জানান, এই রুটে লঞ্চযাত্রাটা অনেকটাই আরামদায়ক এবং স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করা যায়। কিন্তু পণ্য পরিবহনের কারণে দুর্যোগের সময় দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ছে।
পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স সভাপতি ও পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে একটি আবেদন পেয়েছি। পৌর পরিষদ এবং ব্যবসায়ী নেতাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ করা হবে।’