শেরপুরে বন্যায় ৩০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত
শেরপুরে বন্যায় রোপা আমনের বীজতলা, সবজি, আউশ আবাদ, পাট ও ফলবাগান নষ্ট হয়ে প্রায় ৩০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
জেলায় ৩ হাজার ১৩২টি মৎস্য খামার, পুকুর ডুবে ও পাড় ভেঙে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ২ হাজার ৪০৬ জন কৃষক। মাছ ও পোনা ভেসে গিয়ে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২১ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
আর জেলায় ১৩৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের ৫টি মাদরাসা ও একটি কলেজসহ ২৪টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। একটি প্রতিষ্ঠান নদীগর্ভে বিলীনের উপক্রম হয়ে পড়েছে। এছাড়া উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় পরিচালিত আরও ২২টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সাধারণ মানুষের হাঁস-মুরগি মরে ও খামার ভেসে প্রাণিসম্পদ বিভাগের আওতায় ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ কোটি টাকা। আর বন্যায় প্রাণহানি হয়েছে ২৫টি গবাদি পশুর।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় ৩৭৯টি নলকূপ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানিতে তলিয়ে শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পোড়ার দোকান এলাকায় কজওয়েসহ পাকা-কাঁচা মিলে এলজিইডি ও সওজ বিভাগের বেশ কিছু রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বন্যাকবলিত এলাকায় ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত প্রায় ১২শ মানুষ স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। সাপে কাটার কোনো ঘটনা না ঘটলেও বন্যার পানিতে ডুবে ও বজ্রপাতসহ ১৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।
বুধবার (২৪ জুলাই) জেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক এক মতবিনিময় সভায় ওইসব তথ্য জানানো হয়। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষ রজনীগন্ধায় আয়োজিত ওই মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ত্রাণ ও পুনর্বাসন অধিদপ্তরের পরিচালক (যুগ্ম সচিব) এটিএম কামরুল ইসলাম তাং।
বন্যায় শেরপুর জেলার ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কৃষি পুনর্বাসনের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণ ও ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের ঋণ সহায়তা প্রদানের উপর গুরুত্বারোপ করেন এটিএম কামরুল ইসলাম তাং।
উল্লেখ্য, শেরপুর জেলার সদর, ঝিনাইগাতী ও নকলা উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ৬৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে। এতে সদর ও নকলা উপজেলার বন্যাকবলিত এলাকার পানি ধীরে ধীরে কমছে।